অনেকেরই রাত জেগে পড়াশোনা কিংবা কাজ করার অভ্যাস। আবার চাকরির প্রয়োজনেও নাইট শিফট করতে হয় অনেককেই। এদিকে এই অভ্যাসটি যে শরীর স্বাস্থ্যের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়, সে কথা বলাই বাহুল্য। তাহলে? কীভাবে এই রুটিনেও সুস্থ রাখতে পারবেন নিজেকে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কেবল প্যাঁচা নয়, মানুষেরাও রাত জাগে। না না, প্রেমে পড়ে রাত জেগে নিভৃত আলাপ চালানোর কথা বলছি না। বলছি কাজের খাতিরেও অনেকের নিশাচর হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। দিনের বেলা জুড়ে থাকে স্কুল, কলেজ বা অফিস; আবার বিকেল সন্ধেতে কাজকর্ম ছাড়াও পার্টি, সোশ্যাল গ্যাদারিং, আউটিং, এমন বিভিন্ন ব্যস্ততা জুড়ে বসে। তাহলে হাতে থাকে কী? রাত্রিবেলাটুকুই তো! যাকে বলে, নির্ভেজাল মি-টাইম। ফলে অনেকেই এই সময়টাকে বেছে নেন একেবারে নিজস্ব কাজকর্ম সারার জন্য। চারদিক যখন নিস্তব্ধ হয়ে আসে, তখন পড়াশোনা বা লেখালেখি জাতীয় কাজে বেশি করে মন বসানো সম্ভব বলেও মত অনেকেরই। আবার যাঁরা চিকিৎসা পরিষেবা, সাংবাদিকতা, রেলওয়েজ, ফায়ার সার্ভিসের মতো এসেনশিয়াল সার্ভিসে যুক্ত, কিংবা যাঁরা কাজ করেন বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায়, নাইট শিফট তাঁদের পেশার অনিবার্য শর্ত।
আরও শুনুন: বড় অসুখ বাসা বেঁধেছে শরীরে! জিভ দেখেই বোঝা যায় অসুখের বহর
এদিকে নিয়মিত রাত জাগার ফলে বায়োলজিক্যাল সাইকেল ঘেঁটে যেতে থাকে। ফলে স্বাস্থ্যও ভাঙতে থাকে দ্রুত। সমীক্ষা জানাচ্ছে রাত জাগলে বাড়তে পারে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। হতে পারে ডায়াবেটিসের মতো ক্রনিক রোগও। অথচ কাজ বড় বালাই। তাহলে কীভাবে সামাল দেবেন এই সমস্যাগুলিকে? কীভাবে রাত জাগা সত্ত্বেও শরীরের খেয়াল রাখা সম্ভব হতে পারে? শুনে নেওয়া যাক কয়েকটি উপায়ের কথা।
প্রথমত, রাত জাগলে বিপাক হারে গোলমাল দেখা দেয়, ফলে হতে পারে হজমের সমস্যা। তাই ঠিক সময়ে ঠিকমতো খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। বেশি রাত পর্যন্ত জেগে থাকছেন বলে অনেক রাতে ডিনার করবেন না। রাতের খাওয়া তাড়াতাড়ি সেরে ফেলুন, এবং সুষম সহজপাচ্য খাবার খান। ফাস্ট ফুড, বেশি তেল মশলা দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলুন। রাত জাগলে পরে আবার খিদে পেতেই পারে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন বাদাম, মুড়ি, ছাতুর শরবত খেতে পারেন। কিন্তু কফি বা ক্যাডবেরি এড়িয়ে চলাই ভাল। এই দুটি খাবারই ঘুম কাটিয়ে দেয়। রাত জেগে কাজ করার পরেও যদি আপনার ঘুম না আসে, তাহলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।
আরও শুনুন: একা একাই দিন কাটে আপনার সন্তানের! তাকে ভাল রাখবেন কী করে?
দ্বিতীয়ত, পরিমিত জল খান। রাত জাগা এবং শরীরে জলের ঘাটতি, দুয়ে মিললে কিন্তু ইউটিআই-এর সমস্যার দিকে গড়াতে পারে।
তৃতীয়ত, রাত জাগার ফলে যেন ঘুমের ঘাটতি না হয়, সেদিকে নজর দিন। এমনিতেই রাতে জেগে থাকলে ক্লান্তি আর অবসন্নতা আসে। সেই কারণে মুড সুইংও হতে থাকে। পর্যাপ্ত ঘুম হলে তা অনেকখানি কেটে যাবে।
আর এই সব কিছুর সঙ্গে নিয়ম করে খানিক সময় বরাদ্দ করুন শরীরচর্চার জন্য। নির্ভর করতে পারেন যোগার ওপরেও। কিছুক্ষণ ধ্যান করার অভ্যাস করে ফেললে তো আরও ভাল। মন তরতাজা থাকবে, শরীরও। তাহলে দেখবেন, রাত জেগে কাজ করলেও সমস্যা কমে গিয়েছে অনেকটাই।