যৌনতার মৌতাতেই অনেক সময়ই খেয়াল থাকে না। তবে, বেহিসেবি যৌনতায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যোনি। যোনিক্ষত বা ভ্যাজাইনাল কাটস-এর সঙ্গে অনেক মহিলাই পরিচিত। তবে কী উপায়ে তা প্রতিরোধ করা যায়, তা অনেকেরই অজানা। আসুন শুনে নেওয়া যাক, এ বিষয়ে কী জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
যৌনতায় মেতে ওঠার সময় পারিপার্শ্বিক অনেক কিছুই মাথায় থাকে না। তবে সঙ্গম পরবর্তীর সোময়ে যোনির ক্ষত বা ভ্যাজাইনাল কাটস অনেকের কাছেই মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনিতে তা মারাত্মক ক্ষতি না করলেও, বিষয়টি সময়ে সময়ে যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে। সঙ্গমকালীন স্বাভাবিক যন্ত্রণা হিসাবে অনেকেই তা উপেক্ষা করে গেলেও, পরবর্তী সময়ে অনেকেই তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তবে ঠিক কী কারণে এই ক্ষত হতে পারে তা জানলে ক্ষত নিরাময়ও খুব একটা অসুবিধার কিছু নয়।
আরও শুনুন: একাধিক পুরুষের সঙ্গে যৌনতার পরেও তিনি কুমারী! রহস্য ফাঁস পর্ন তারকার
যৌন উত্তেজনার সময় যোনি স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই সিক্ত হয়ে ওঠে। এর দরুন শিশ্ন ও যোনির ঘর্ষণ অনেকটা মসৃণ হয়ে যায়। এর ফলে যোনির ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু তা না হলেই বিপদ বাড়ে। যোনিতে ক্ষত তৈরি হওয়ার মূল কারণ হল যোনির শুষ্কতা বা ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস। মূলত ইস্ট্রোজেনের প্রভাবেই যোনির সিক্ততা বজায় থাকে। কেননা এই হরমোন রক্ত সঞ্চালনা বাড়িয়ে দেয়। পাশপাশি যোনির কোষগুলিকে নমনীয় করে তোলে। ফলে সঙ্গমের সময় ঘর্ষণজনিত ক্ষত হওয়ার সম্ভাবনা কমে। ঋতুমতী নারীদের ক্ষেত্রে যৌনতার ক্ষেত্রে এই ইস্ট্রোজেন যথেষ্ট পরিমাণে নিঃসৃত হয়। ফলে যোনির সিক্ততা বজায় থাকে। মেনোপজের পরবর্তী সোময়ে বরং যোনির সিক্ততা কমে শুষ্ক ভাব বাড়তে পারে। এ ছাড়া সরাসরি সঙ্গমের আগে যৌন উত্তেজনা পূর্ণমাত্রায় না থাকলে যোনি শুষ্ক থাকতে পারে। তাই সঙ্গমের আগে ফোর-প্লের জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া জরুরি। এ ছাড়া বেহিসেবি যৌনতা বা অনিচ্ছাকৃত সঙ্গমের ক্ষেত্রে যোনির ক্ষত মারাত্মক হতে পারে। সঙ্গম যদি যন্ত্রণাদায়ক হয়, আর তা যদি বারবার ঘটতে থাকে, তাহলে যোনির পেশি বা পেলভিক মাসল আপনা থেকেই সংকুচিত হয়ে যায়। এই অবস্থায় শিশ্ন প্রবেশে ঘর্ষণ আরও বাড়ে, ফলে বিক্ষত হতে পারে যোনি। যৌনসুখের জন্য যদি কেউ সেক্স টয় ব্যবহার করেন তাহলেও এই ক্ষত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আরও শুনুন: পিরিয়ডস আসলে ঈশ্বরের বার্তা, প্রথম বিজ্ঞাপনেই ট্যাবু ভাঙার ‘স্মৃতি’ বিজেপি নেত্রীর
এই কারণগুলি মাথায় রাখলে যোনির ক্ষতজনিত সমস্যা মোকাবিলা করা তেমন কষ্টসাধ্য কিছু নয়। নিরাময়ের রাস্তা হল, যোনিকে সিক্ত রাখা। স্বাভাবিক ভাবে এই সিক্ততা বজায় না থাকলে কৃত্রিম উপায়ের দ্বারস্থ হওয়া যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এক্ষেত্রে লুব্রিক্যান্ট ব্যবহারেরই পরামর্শ দেন। বিভিন্ন ধরনেরই লুব্রিক্যান্ট পাওয়া যায়। তবে লুব্রিক্যান্টের উপাদান থেকে আবার ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দিলেও দিতে পারে। তাই এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া একান্ত জরুরি। প্রয়োজনে প্রাকৃতিক তেলও এই কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে তারও আগে জরুরি সঙ্গমের আগে ফোর-প্লের জন্য সময় দেওয়া, যাতে যোনি যৌন উত্তেজনায় স্বাভাবিক ভাবেই সিক্ত হয়ে উঠতে পারে। এ ছাড়া যোনির পেশি যাতে নমনীয় থাকে, তার জন্য থেরাপিরও সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। সঙ্গমের সময় সেক্সের পজিশনও অনেক সময় ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে। সেই ব্যাপারটিও মাথায় রাখা জরুরি। এ ছাড়া ইস্ট্রোজেন নিসঃরণ বাড়ানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শও নেওয়া যেতে পারে। সব মিলিয়ে যোনিক্ষত বা ভ্যাজাইনাল কাটস মারাত্মক কিছু না হলেও, উপেক্ষার নয়। বাড়াবাড়ি হওয়ার আগে তাই সাবধান হয়ে যাওয়াই ভাল।