রানি মুখোপাধ্যায় অভিনীত ‘হিচকি’ সিনেমাটার কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। ছবিতে রানি অভিনীত চরিত্রটির ছিল হেঁচকি ওঠার সমস্যা। তাই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি পেতে বেশ কালঘাম ছুটেছিল তাঁর। যদিও বা একটা স্কুলে পড়ানোর চাকরি জুটেছিল, তবে সেখানেও ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সকলের কাছেই হাসির খোরাক হতে হত তাঁকে। তাঁর অবশ্য ছিল একধরনের স্নায়বিক সমস্যা। তবে সাধারণ হেঁচকিও কিন্তু যথেষ্ট অসুবিধার। বেশ কিছু টোটকা রয়েছে, যা আপনাকে দিতে পারে এই সমস্যা থেকে চটজলদি রেহাই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
হেঁচকি ব্যাপারটা যেন বড়ই অস্বস্তিকর। একবার হেঁচকি উঠতে শুরু হলে আর থামতেই চায় না। এদিকে, চারপাশের লোকেরাও অস্থির হয়ে ওঠেন।
হেঁচকি নিয়ে অনেকের মধ্যেই আবার বেশ কিছু কুসংস্কার রয়েছে। প্রথমেই বলে রাখি হেঁচকি কিন্তু কোনও রোগ নয়। কুসংস্কারের কোনও বিষয়ই নেই এর মধ্যে। সহজ করে বলতে গেলে, আমাদের বুকের খাঁচাকে পেট থেকে আলাদা করে রাখে ডায়াফ্রাম। শ্বাসপ্রশ্বাস প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই ডায়াফ্রামের। অনেক সময় হঠাৎ করেই ডায়াফ্রামের পেশি সংকুচিত হয়ে পড়ার কারণে হেঁচকি উঠতে শুরু করে। হেঁচকির সময় শ্বাসনালীতে সামান্য খিঁচুনি মতো হয়। যার ফলে শ্বাসযন্ত্রে দ্রুত বাতাস প্রবেশ করে। তখন ভোকাল কর্ড হঠাৎ বন্ধ হয়ে ‘হিঁক’ জাতীয় শব্দ তৈরি হয়।
আরও শুনুন: শীতে খুশকির জেরে নাজেহাল! কী করে এড়াবেন এই সমস্যা?
অনেক সময় অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার ফলে, কিংবা স্ট্রেসের কারণেও হেঁচকি উঠতে পারে। তবে একটানা হেঁচকি উঠতে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন। তবে বেশ কিছু ঘরোয়া টোটকাও রয়েছে হেঁচকির হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার। আসুন এক এক করে শুনে নেওয়া যাক।
অল্প কিছুক্ষণের জন্য শ্বাস ধরে রাখুন। প্রয়োজন হলে এক থেকে দশ গুণে নিশ্বাস ছাড়ুন। নাক বন্ধ করেও এই ব্যপারটা করে দেখতে পারেন। হেঁচকি উঠলেই সকলে বলেন জল খেতে। হ্যাঁ, এই জল খাওয়াও কিন্তু বেশ কার্যকরী এ ব্যাপারে। গরম দুধ খেলেও মিলতে পারে আরাম। আরও একটি উপায় আছে, হালকা ব্যায়ামই বলা যায়। বুকের কাছে দুটো হাঁটু জড়ো করে বসুন। এবার দু-হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরুন হাঁটুদুটোকে। আর লম্বা শ্বাস নিন। এভাবেও খানিকটা আরাম মিলতে পারে। তা ছাড়া একটুকরো লেবু বা ভিনিগার মুখে নিয়ে দেখতে পারেন। একই রকম উপকার পেতে পারেন চিনি মুখে রেখেও।
আরও শুনুন: মাথার যন্ত্রণায় অস্থির? ভরসা রাখুন এই ঘরোয়া টোটকায়
তবে ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে একটানা হেঁচকি উঠতে থাকলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযাগ করা প্রয়োজন। টিউমার থেকে শুরু করে পার্কিনসন, এমনকি হার্টের সমস্যা কিংবা মধুমেহ রোগের কারণেও উঠতে পারে এই ধরনের হেঁচকি। অর্থাৎ বড় কোনও রোগের লক্ষণ হিসাবে হেঁচকির আবির্ভাব হতে পারে। তাই বেশি বাড়াবাড়ি হলে কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।