পৃথিবী ভালো নেই। যুদ্ধের আগুনে পুড়ে যাচ্ছে একেকটি দেশ। যত দূরেই থাকুন না কেন, তার আঁচ এসে লাগছে আপনার গায়েও। যুদ্ধের খবর দেখতে দেখতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আপনিও। কীভাবে সামলাবেন নিজেকে? আসুন, ভেবে দেখা যাক সে কথাই।
সাম্প্রতিক এক গবেষণা জানাচ্ছে, যাঁরা নিয়মিত খবর পড়েন বা দেখেন, বিশ্বে কী ঘটছে তার খোঁজ রাখেন নিয়মিত, তাঁদের মধ্যে ১৬ শতাংশ মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য বিগড়ানোর সমূহ সম্ভাবনা। বিশেষ করে যাঁরা লাগাতার খুঁজে চলেন, নতুন কী কী খবর এসে পড়েছে। সত্যি বলতে শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বেরই এখন যা হাল, তাতে এই খবরের অনেকটাই তো জুড়ে থাকে বন্যা, ধস, মহামারি, দুর্নীতি বা যুদ্ধবিগ্রহের মতো খবর। আর আপনি যদি সংবেদনশীল হন, তাহলে সেইসব খবর আপনাকে কোথাও না কোথাও গিয়ে আঘাত করবেই। গাজার হাসপাতালের নিচে যে গণকবরের আয়োজন চলেছে আর সেই গণকবরে ঠাঁই হচ্ছে একাধিক সদ্যোজাত শিশুরও, এ কথা শুনলে কীভাবে স্থির থাকতে পারবেন আপনি? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভয়াবহ খবরগুলি একইসঙ্গে আমাদের স্নায়ু ও মনের উপর বড় আঘাত হানে। কিন্তু কথা হল, এর মধ্যেও তো স্থির না থেকে উপায় নেই। বেঁচে থাকার জন্য, নিজেদের দায়িত্বগুলো যথাযথ ভাবে পালন করার জন্য তাই শোকের সঙ্গে নিয়ত মোকাবিলা করে চলতেই হয় আমাদের। সেই লড়াইয়ে কীভাবে খানিক বাড়তি সাহায্য মেলে, সেই পথ নিয়েও আলোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও শুনুন: চুম্বনে বিভ্রাট! শীতের হাওয়ায় ঠোঁটে টান, সামলাবেন কী উপায়ে?
সেখানে প্রথম কথাই হল সচেতনতা বাড়ানো। যেহেতু খারাপ খবরগুলি আমাদের অস্থির করে তোলে, তাই কোন সময়ে আমাদের মানসিক অবস্থা কেমন আর সেই সময়ে আমরা কী খবর দেখব, কতটা দেখব, সে বিষয়ে খানিক বাছাবাছি না করে উপায় নেই। বিশেষ করে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ডিজিটাল জগতে ক্লিকবেট নিউজের ছড়াছড়ি। যা আদতে মানুষের অনুভূতিকে উত্তেজিত করেই কাজ হাসিল করে। সেদিকে সতর্ক থাকাই বাঞ্ছনীয়। দ্বিতীয় কথা হল, পৃথিবীতে কী ঘটছে, তা আপনার হাতে নেই। ফলে খবরে উদ্বেগ-অশান্তির কথা আসবেই। তাই মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার চর্চা চালিয়ে যেতেই হবে। মেনে চলতে হবে পরিমিত আহার আর ঘুমের চক্র। শরীরচর্চার অভ্যাস বজায় রাখলেও তা আদতে মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। যুদ্ধের আবহে মানুষ যেখানে মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, সেখানে মানুষের সঙ্গে বেঁধে থাকার অভ্যাসটাও জারি রাখা জরুরি। ইতিবাচক, বন্ধুত্বপূর্ণ কথা অক্সিটোসিনের মতো হ্যাপি হরমোন ক্ষরণ করায়।
আরও শুনুন: ম্যাচ চলাকালীন একটানা টিভিতে নজর, কোন নিয়ম মানলে ক্ষতি হবে না চোখের?
আসলে পৃথিবীতে কী ঘটবে, তারপরেও তো সবকিছু আমাদের হাতে নেই। তবে পৃথিবীকে বদলাতে না পারুন, নিজের বদলের দিকে কিন্তু নজর দেওয়াই যায়।