ভালো লাগছে না। কোনও নির্দিষ্ট কারণ নেই। স্রেফ ভালো লাগছে না। আচ্ছা, এই ভালো না লাগা কিংবা বড্ড একঘেয়ে লাগা, এও কি একধরনের মানসিক রোগ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন একেবারেই নয়। বরং একঘেয়ে লাগার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করার মন্ত্র। ঠিক কেমন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সকালে ওঠো। অফিস যাও। বাড়ি ফিরে ঘুমাও। রোজই এক রুটিন। কোনও রোমাঞ্চ নেই। একঘেয়ে লাগাটাই স্বাভাবিক। কেউ বাড়ির বাইরে সারাদিন কাটিয়ে বোর হচ্ছেন। আবার কেউ বোর হচ্ছেন সারাদিন ঘরে বসে। আর সেই অবস্থায় একমাত্র দোসর হয়ে উঠছে মোবাইল। মনে হচ্ছে, মোবাইলে বুঁদ হলেই বোরডম কাটবে। কিন্তু না, আদতে এমন কিছুই হয় না। বরং কেউ যদি মোবাইল না ঘেঁটে একঘেয়েমিটা উপভোগ করেন তাহলে মনের মধ্যে পুষে থাকা জটিল অসুখও সারতে পারে।
আরও শুনুন:
জানলা খুলেই শরীরী খেলা! প্রতিবেশীর কাণ্ডে বেজায় চটে থানায় ছুটলেন মহিলা
ভালো না লাগার হাজার কারণ থাকতে পারে। আবার কোনও কারণ ছাড়াই ভালো লাগছে না, এও অস্বাভাবিক নয়। মনে হতে পারে, কেজো জীবনের একঘেয়ে রুটিন এর জন্য দায়ী। কিন্তু সবসময় যে তেমনটাই হবে তারও কোনও মানে নেই। তাহলে, এই একঘেয়েমি নিয়ে এত ভাবনার কি আছে! নেতিবাচক অর্থে অবশ্যই কিছু নেই। মানে এমনটা ভাবার প্রয়োজন নেই, যে একঘেয়েমি অত্যন্ত খারাপ একটা বিষয়। কিন্তু একে ভালো ভাবার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। অন্তত বিশেষজ্ঞদের দাবি তেমনটাই। একঘেয়ে লাগছে, এই ভাবনার মধ্যেই লুকিয়ে থাকতে পারে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার মন্ত্র। আসলে, এই ভালো না লাগা অবস্থায় সবার আগে যে পদক্ষেপ করা হয়, সেটা হল নিজেকে আলাদা করে নেওয়া। সেইসময়টা শুধুমাত্র নিজের সঙ্গে কাটানোর। আর কেউ নেই আশেপাশে। কাজেই ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটানোর মতোও কোনও কারণ থাকবে না ওই সময়। নিশ্চিন্তে নিজেকে নিয়ে ভাবা যাবে এই সময়টায়। আর এতেই কাজ হতে পারে ম্যাজিকের মতো। অনেকসময় একঘেয়েমি কাটাতে মোবাইল হাতে নেন কেউ কেউ। কিন্তু এমনটাও হতেই পারে, যে মোবাইল দেখতেও ভালো লাগছে না। আসল কাজের সময় এটাই। এভাবে ভালো না লাগার মাধ্যমেই কমতে পারে মোবাইল আসক্তি।
আরও শুনুন:
প্রেমিকা কাঁদলে বিরক্ত হন! তরুণীর চোখের জলেই নাকি শান্ত হয় রাগী পুরুষের মন
আবার একঘেয়েমি কাটাতে অনেকেই নিজের হারিয়ে যাওয়া শখ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। কেউ ছবি আঁকতে শুরু করেন, কেউ বা অন্য কিছু। সবমিলিয়ে যে নিজেকে বেশ কয়েকবছর আগেই হারিয়ে ফেলেছেন অজান্তে, ভালো না লাগার ছুতোয় সেই আপনি আবার ফিরতে পারেন। এইভাবে বাড়তে পারে সৃজনশীলতাও। নতুন কিছু করার মধ্যে যে আনন্দ তা সহজেই একঘেয়েমির অসুখ সারিয়ে দিতে পারে। একইসঙ্গে সেই নতুন জিনিসটিও ব্যক্তিগত পরিসরে সুনাম বাড়াতে পারে। কেউ কেউ আবার একঘেয়েমি কাটাতে ঘুমিয়ে পড়েন। এতেও আখেরে লাভই হয়। অনেকসময় কাজের চাপে প্রয়োজনের ঘুমটুকুও হয় না। সেই ঘাটতি মেটাতে পারে এই বিশ্রাম। এর জেরে মানসিক চাপও কমে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সুতরাং একঘেয়ে লাগা কিংবা ভালো না লাগার অনুভূতি মানেই যে খারাপ কিছু তা একেবারেই নয়। বরং সুস্থ থাকতে এই অনুভূতিরও প্রয়োজন আছে বইকী!