তাঁরা ঠোঁটে ঠোঁট রাখলে দর্শকহৃদয়ে ওঠে হিল্লোল। অন্ধকার সিনেমাহলে পর্দা জুড়ে দুজন মানব-মানবীর এই একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তের ঘনিষ্ঠতা দর্শককেও যেন পাঠিয়ে দেয় অন্য কোথাও, অন্য কোনওখানে। কিন্তু এই চুম্বন দৃশ্যেই আপত্তি আছে বহু নায়ক-নায়িকার। কেউ কেউ আবার গোড়ায় আপত্তি তুলেও শেষমেশ ভেসে গিয়েছেন চরিত্রদের প্রেমের জোয়ারে। তাঁরা কারা? আসুন শুনে নিই।
অধরের ভাষা স্পর্শ করেই মন দেওয়া-নেওয়ার পালা সেরে নেয় চরিত্ররা। গল্পের গতি যায় বদলে। দর্শকের মনে আসে তৃপ্তি। কাহিনিকার আর পরিচালকও দর্শককে খুশি করতে পেরে হন আনন্দিত। কিন্তু এই কঠিন কাজটি যাঁদের পর্দায় করতে হয়, তাঁরা হলেন অভিনেতা-অভিনেত্রী। পর্দায় তাঁরা চরিত্র হয়ে ওঠেন ঠিকই, কিন্তু ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতার দৃশ্যে নিজেদের বদলে ফেলা সহজ নয়। অনেকেই তাই এই ধরনের দৃশ্য বিশেষত পর্দায় চুম্বন-দৃশ্য থেকে মুক্তি চেয়েছেন। বলিঅন্দরে কান পাতলে শোনা যায়, সলমন খান, শিল্পা শেট্টি বা এই সময়ের সোনাক্ষী সিনহা- সকলেই চুম্বনদৃশ্যে নারাজ। তাঁদের পর্দায় এরকম দৃশ্যে দেখাও যায় না।
আরও শুনুন: ভাল কাজের খিদে, নাকি বঞ্চনা! কেন বলিপাড়ায় পাড়ি দিচ্ছেন টলিপাড়ার অভিনেতারা?
আর কয়েকজন তারকা আছেন, যাঁরা গোড়াতে ঠোঁটে ঠোঁট মেলাতে বেশ আপত্তিই করেছিলেন। কিন্তু পরে আর নিজেদের প্রতিজ্ঞায় আটকে রাখতে পারেননি। এই তালিকায় প্রথমেই আছেন কিং খান। রোম্যান্সের রাজা হয়েও পর্দায় চুম্বনে মোটেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না। অতএব চুম্বন দৃশ্যে তাঁকে দর্শক সেভাবে দেখেননি। যদিও তাতে তাঁর রোমান্স সাম্রাজ্যের পরিধিতে টানাটানি পড়েনি। তবু ২০১২ সালে এসে নিজের প্রতিজ্ঞা ভাবেন বাদশা। ‘যব তক হ্যায় জান’ ছবিতে ক্যাটরিনা কাইফের ঠোঁট ছুঁয়েছিল বলিবাদশার ঠোঁট। কাহিনির চাহিদা তো ছিলই, তার উপর পরিচালক ছিলেন স্বয়ং যশ চোপড়া। সকলেই জানেন, যশ চোপড়াকে কতখানি শ্রদ্ধা করতেন শাহরুখ। প্রবীণ পরিচালকের কথা ফেলতে পারেননি স্বয়ং কিং খানও। সেই প্রথম তাই পর্দায় চুম্বনরত অবস্থায় দেখা গেল তাঁকে।
ওদিকে প্রায় আড়াই দশক অজয় দেবগণ পণ করে বসেছিলেন যে, পর্দায় চুম্বন নৈব নৈব চ। শেষ পর্যন্ত ‘শিবা’ ছবিতে এসে সহ-অভিনেত্রীর সঙ্গে চুম্বনে আবদ্ধ হন তিনি। পরে তারকা জানিয়েছিলেন, চুম্বন যে করবেন না, এ নিয়ে তো কোথাও লেখাজোকা কিছু ছিল না। তাঁর ভাল লাগত না। কিন্তু এই ছবিতে কাহিনির প্রয়োজনেই তাঁকে চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করতে হয়।
আবার করিনা কাপুরের ঘটনা বেশ অন্যরকম। তাঁকে অবশ্য চুম্বনের দৃশ্যে বহুবার দেখা গিয়েছে। তবে বিয়ের পর তিনি আর চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করবেন না, এমনটাই শোনা গিয়েছিল। তিনি নিজেই নাকি চুক্তিতে সে কথা জানাচ্ছিলেন। তবে এ প্রতিজ্ঞাও টেকেনি। ‘কি অ্যান কা’ ছবিতে অর্জুন কাপুরকে চুমু খেতে দেখা যায় তাঁকে। ওদিকে বিয়ের পর এর চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করবেন না বলেই মনস্থ করেছিলেন সইফ আলি খান। তবে সে প্রতিজ্ঞা ভেঙে নবাবের ঠোঁট মিশে গিয়েছিল কঙ্গনা রানাউতের ঠোঁটে, ছবির নাম ছিল ‘রঙ্গুন’। তালিকা শেষ করা যাক পরমসুন্দরী ঐশ্বর্য রাই বচ্চনকে দিয়ে। কেরিয়ারের গোড়ার দিকে তো বটেই বহুদিন পর্যন্ত পর্দায় চুম্বন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। শেষমেশ ধুম-২ ছবিতে নিজেকে ভেঙে এমন এক রূপে হাজির হয়েছিলেন, যে সেখানে চরিত্রের খাতিরে চুম্বনে দ্বিধা করেননি। উলটোদিকে ছিলেন হৃতিক রোশন। আর একটু পরে অ্যায় দিল মুশকিল ছবিতে রণবীর কাপুরের সঙ্গে পরদায় চুম্বনে বদ্ধ হন তিনি।
আরও শুনুন: টুইটারে উত্তর দিয়েছেন স্বয়ং শাহরুখ খান, স্ক্রিনশট বাঁধিয়ে রাখলেন ‘জাবরা ফ্যান’
ব্যক্তিগত সুবিধা-অসুবিধা সরিয়ে রেখে, পরদায় তাঁরা ভাগ্যিস এই মেজাজে ধরে দিয়েছিলেন! আর তাতেই দর্শক পেয়েছে মনে রাখার মতো রোম্যান্টিক মুহূর্ত। অভিনেতার প্রকৃত তৃপ্তি তো সেখানেই।