নিখুঁত সৌন্দর্য বলে আদতে কিছু হয় না। আর শুধু সাজ দিয়েও খুঁত ঢাকা পড়ে না। রুপোলি পরদা থেকে ঘরের কোণ, সর্বত্র মেয়েদের যে সৌন্দর্যের ধারণা জেগে আছে- তাকেই এবার নাকচ করলেন বলিউডের ফ্যাশনিস্তা অভিনেত্রী সোনম কাপুর। বরং নিখুঁত হওয়ার লক্ষ্যে দৌড়নোকে বিপজ্জনক বলেই দাগিয়ে দিলেন তিনি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
রুপোলি পর্দার অভিনেত্রী মানেই যেন কোনও স্বপ্নলোকের রাজকন্যা। তাঁদের মোমমসৃণ ত্বক থেকে মেঘবরন চুল, সবকিছু দেখেই যেন চোখ ফেরে না। আর তার সঙ্গেই মনে বাসা বাঁধে গোপন ইচ্ছে, যদি অমনটা হত আমারও! সেই ইচ্ছেকে আরও জাগিয়ে দেয় একের পর এক বিজ্ঞাপন। যেখানে কোনও তারকাই আশ্বাস দেন, অমুক প্রসাধনীটি ব্যবহার করলেই ত্বক হবে তাঁরই মতো নিখুঁত। কিন্তু কেবল সাজ দিয়ে খুঁত ঢাকা যায় না কখনোই, এমনটাই এবার সাফ জানালেন বলিউডের ফ্যাশন ডিভা বলে খ্যাত সোনম কাপুর। তিনি আরও জানালেন, এই ‘নিখুঁত’ হতে চাওয়া আসলে এক বিপজ্জনক ফাঁদ। তা একইসঙ্গে ব্যয়সাপেক্ষ এবং সময়সাপেক্ষও বটে। আসলে বিপুল অর্থ এবং সময় ব্যয় করেই নিখুঁত হয়ে ওঠেন তারকারা। তাই কোনও কিশোরী বা তরুণী যদি নিজেকে আয়নায় দেখে হতাশ হয়ে ভাবেন, কেন তাঁকে দেখতে তারকাদের মতো নিখুঁত নয়, তবে তিনি ভুল ভাবছেন। আসলে তারকারাও নিখুঁত হন না। রুপোলি দুনিয়ার গোপন কথা ফাঁস করে এমনটাই জানালেন সোনম কাপুর।
আরও শুনুন: মহিলারা যে সিনেমা ভালোবাসেন সেটাই সুপারহিট, সাফল্যের ‘সিক্রেট’ জানালেন নাসিরুদ্দিন শাহ
বলিউডের যেসব নায়িকা ফ্যাশন সচেতন হিসেবে নাম কিনেছেন, অনিল-কন্যাকে তাঁদের মধ্যে না রেখে উপায় নেই। কানের রেড কার্পেট থেকে ফিল্মফেয়ার, যে কোনও জায়গায় একেবারে পরিপাটি সাজেই দেখা যায় তাঁকে। সত্যি বলতে, তারকাদের যেখানেই দেখা যাক না কেন, তাঁরা যেন সবসময়েই একেবারে নিখুঁত। কিন্তু সেই পারিপাট্য যে মোটেই সহজাত নয়, বরং অনেকের পরিশ্রমে তা তৈরি করা হয়, সে কথাই জানালেন সোনম। তিনি জানিয়েছেন, দর্শকের মুখোমুখি হওয়ার আগে মেকআপ চেয়ারে অন্তত দেড় ঘণ্টা সময় খরচ করতে হয় তাঁকে। তিন থেকে ছজন শিল্পী তাঁর প্রসাধন ও কেশসজ্জার দায়িত্ব নেন, কেউ নখের পরিচর্যা করেন, কেউ আবার শরীরের এমন কোনও অংশকে সাজিয়ে তোলেন যেখানে আপাতদৃষ্টিতে কোনও খুঁত আছে বলেই মনে হয়নি। শুধু এই সাজেই শেষ নয় অবশ্য। এর বাইরে প্রতিদিন ভোরে উঠে শরীরচর্চা থেকে নিয়মিত রূপচর্চার খতিয়ানও দিয়েছেন সোনম। তার পাশাপাশি তিনি কী খাবেন, কী খাবেন না, নিয়মিত সেই রুটিন ঠিক করে দেন কোনও পেশাদার পুষ্টিবিদ। তিনি কোন পোশাক পরবেন, তাও ঠিক করে দেয় তাঁর টিম। আর এই সব মিলিয়েই তাঁর যে চেহারা আমাদের চোখে ধরা দেয়, তাকে আমরা নিখুঁত মনে করে মুগ্ধ হই। এমনকি, এর পরেও কোনও খুঁত থাকলে তা ঢেকে দেন ফোটোগ্রাফারেরা।
আরও শুনুন: পর্দায় একইসঙ্গে জোয়ান ও বৃদ্ধ শাহরুখ! শুটিং-এর চ্যালেঞ্জ ফাঁস করলেন অন্য SRK
তারকাদের অন্দরের এই গোপন কথা ফাঁস করেই সোনমের আরজি, যা আদতে বানিয়ে তোলা, সেই মরীচিকার দিকে ছুটতে নেই। এই বানিয়ে তোলা জীবনশৈলী আদতে আনন্দের নয়, বরং তাকে ভার বলেই মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, নিজের শরীরকে আগে চেনা উচিত, বোঝা উচিত তার কী প্রয়োজন, আর তার সেই প্রয়োজন মেটানোও উচিত। তা ভালো খাবার থেকে নিশ্চিন্তের ঘুম- যাই হোক। সোশাল মিডিয়ার প্রকাশ্য পোস্টেই সোনম স্বীকার করে নিয়েছেন, আদতে কেউই নিখুঁত হন না। তিনি নিজেও নিখুঁত নন। তাই কোনও কিশোরী যদি তাঁকে বা তাঁদের দেখে নিখুঁত সৌন্দর্য পাওয়ার কথা ভাবে, তার সামনে এই খুঁতহীন সৌন্দর্যের মিথটি ভেঙে দেওয়া উচিত বলেই মনে করেন এই অভিনেত্রী।