বিকিনি পরে ফোটোশুট করছেন কোনও নায়িকা! তাও প্রায় ছয় দশক আগে। সেই ঘটনার জেরে ঝড় উঠেছিল স্বাভাবিকভাবেই। এমনকি খোদ সংসদেও প্রশ্ন উঠেছিল এই ইস্যুতে। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন নায়িকা নিজেই। কী বললেন শর্মিলা ঠাকুর? শুনে নেওয়া যাক।
প্রথা ভাঙার পথ দেখিয়েছিলেন শর্মিলা। যে সময় বলিউডেও খুব বেশি খোলামেলা পোশাক পরার কথা কেউ ভাবতে পারতেন না, সে সময়ে বিকিনি পরে সবার সামনে এসেছিলেন ঠাকুরবাড়ির মেয়ে। কিন্তু সেই ভাঙার মাশুলও কম দিতে হয়নি তাঁকে। এই ছবিগুলি প্রকাশ্যে ছাপা হওয়ার পর গোটা সমাজে তো ঝড় উঠেছিলই, এমনকি সংসদেও তা নিয়ে কথা চালাচালি হয়। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই স্মৃতি ফেরালেন অভিনেত্রী নিজেই।
আরও শুনুন: হোক না বৈবাহিক ধর্ষণ, অভিনয়ে আপত্তি কীসের! সমালোচনা উড়িয়ে সাফাই ববির
একে ঠাকুরবাড়ির মেয়ে, তার উপরে সত্যজিতের নায়িকা হিসেবে সিনেমার যাত্রা শুরু। শর্মিলার দিদি তারও আগে ‘কাবুলিওয়ালা’ ছবিতে মিনির চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এহেন পরিবেশ থেকে উঠে আসা শর্মিলার পক্ষে আগল ভাঙার জন্য আরেকটু বেশি সাহসেরই দরকার পড়েছিল। কিন্তু বরাবরই চলতি হাওয়ার বিপরীতে হাঁটতেই পছন্দ করেছেন এই অভিনেত্রী। তাই যে ফোটোশুট নিয়ে ক্যামেরাম্যান নিজেও অস্বস্তিতে পড়েছিলেন, আবার পরে তা নিয়ে সংসদেও প্রশ্ন উঠেছে, সে বিষয়টি নিয়ে তাঁর নিজের কোনও অস্বস্তি ছিল না।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ওই বিকিনি শুট নিয়ে অভিনেত্রীকে প্রশ্ন করেছিলেন করণ জোহর। প্রায় বছর ষাট আগেকার ওই ফোটোশুট সে সময়ে সবার চর্চায় উঠে এসেছিল। আসলে রক্ষণশীল সমাজে খোলাখুলি এহেন সাহসী পোশাক দেখতে অভ্যস্ত ছিলেন না কেউই। যে কারণে এমন একটি বিষয় নিয়েও সংসদে কথা উঠেছিল। সেই সময়ে অভিনেত্রী নিজে লন্ডনে ছিলেন। দেশের এই বিপুল প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়ে তাঁকে ফিরে আসার কথা বলেন পরিচালক শক্তি সামন্ত। যদিও সংসদে ঠিক কী প্রশ্ন উঠেছিল, তা আর ফাঁস করেননি অভিনেত্রী। কিন্তু সমস্ত বিষয়টি যে তাঁকে খানিক অস্বস্তিতে ফেলেছিল, তা অস্বীকার করেননি তিনি।
আরও শুনুন: নায়িকা ছিলেন মধুবালা, দেশের প্রথম প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সিনেমা কোনটি জানেন?
এমনিতে ‘ফিল্মফেয়ার’-এর জন্য করা এই ফোটোশুটটির ভাবনা ছিল শর্মিলার নিজেরই। বিকিনি পরা বা তা পরে ছবি তোলা নিয়ে তিনি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসীও ছিলেন। কিন্তু প্রথমেই দেখা যায়, এই ছবি তুলতে ক্যামেরাম্যান নিজেই বেশ অস্বস্তিতে পড়ছেন। শর্মিলা এই ছবি তুলতে নিশ্চিত কি না, বারবার সে প্রশ্ন করছিলেন তিনি। এমনকি কখনও কখনও তাঁকে চাদর দিয়ে শরীর ঢাকার প্রস্তাবও দেন। যদিও এই পোশাকে তাঁকে দেখতে ভালো লাগছে বলেই মনে করেছিলেন শর্মিলা। আর সে কারণেই তাঁর এই ফোটোশুট নিয়ে অস্বস্তি ছিল না। বরং পরবর্তীতে এত লোকের এত প্রশ্ন শুনেই তিনি খানিক মুষড়ে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী। কিন্তু প্রায় ৫৭ বছর পর এই ইস্যুতে এবার খোলাখুলিই কথা বললেন শর্মিলা ঠাকুর।