তিনি খুব যে ধার্মিক মানুষ, তা নন। প্রার্থনা করেন, কিন্তু ঈশ্বর নিয়ে তাঁর অবস্থান অনেকটাই বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মাঝামাঝি। মানসিকতায় তিনি ধর্মনিরপেক্ষ। অভিনেতার চিন্তা, ধর্ম ইহকালের কথা তত বলে না, যত বলে পরকাল প্রসঙ্গে। সইফ আলি খান এক সাক্ষাৎকারে তাঁর জীবন, ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা নিয়ে জানালেন সাহসী মতামত।
ধর্ম নিয়ে যে কোনও রকম বাড়াবাড়ি তাঁকে চিন্তিত করে। নিজের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে গণমাধ্যমে রীতিমতো সাহসী মত প্রকাশ করেছেন পতৌদির নবাব সইফ আলি খান। কিন্তু কী এমন বলেছেন সইফ? যা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে?
আরও শুনুন: ‘Fan’ আবার কী! কেন এই কথাটা না-পসন্দ Pankaj Tripathi-র?
সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারে সইফ নিজের ধর্মবিশ্বাস, ঈশ্বরচেতনা তথা আধ্যাত্মিকতা নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। স্পষ্ট করেছেন, আর যাই হোন, তিনি খুব একটা ধার্মিক মানুষ নন। বরং প্রাত্যহিক জীবনে ধর্ম নিয়ে তাঁর অবস্থান বেশ দোলাচলের মধ্যেই থাকে। আরও স্পষ্ট করে বললে, তিনি এমনিতে অজ্ঞেয়বাদী আর মানসিকতায় ধর্মনিরপেক্ষ। এরপরই সইফ জানান, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি তাঁকে চিন্তিত করে।
কেন চিন্তিত করে?
আরও শুনুন: ভাল কাজের খিদে, নাকি বঞ্চনা! কেন বলিপাড়ায় পাড়ি দিচ্ছেন টলিপাড়ার অভিনেতারা?
খান সাহাবের সাফ জবাব, কারণ ধর্ম ইহকালের কথা তত বলে না, যত বলে পরকাল প্রসঙ্গে। এখানেই থেমে না থেকে সইফ আরও বলেন, ধর্ম আসলে একটি প্রতিষ্ঠান, যা অসংখ্য সমস্যা জর্জরিত। কিন্তু কী নিয়ে সমস্যা? আমার ঈশ্বর না ওর ঈশ্বর, কার ঈশ্বর সবচেয়ে ভাল! তবে, শর্মিলা পুত্র প্রার্থনা করেন, নিজের মতো করে। তাঁর বক্তব্য, তিনি অনেকের চেয়ে বেশি আধ্যাত্মিক মানসিকতার মানুষ। সর্বশক্তিমানে বিশ্বাস আছে তাঁর। এমনকী ধর্মের আচার থেকে সইফ যে খুব দূরে থাকতে পছন্দ করেন, তেমনটাও নয়। এদিকে জীবন ও আধ্যাত্মিকতা নিয়ে ভাবতে গিয়ে মাঝে মাঝেই মন খারাপ হয় সইফ আলি খানের। কেন? এক সাক্ষাৎকারে সইফ বলেন, “মন বিষাদগ্রস্ত হয়ে যায়। যখন ভাবি মৃত্যু হলেই অন্ধকার হয়ে যাবে চারপাশ। এবং সেটাই শেষ, তারপর আর কিছু নেই। কখনও কখনও ভাবতে ভাল লাগে যে তারপরেও কিছু আছে। তবে একশ শতাংশ নিশ্চিত নই। যদিও ‘আছে’, এই কথা ভাবতে ভাল লাগে।”
সইফের এই কথা আমাদের ভাবিয়ে তোলে। ধর্মের প্রাতিষ্ঠানিকতা থেকে দূরে এই যে ঈশ্বরের সঙ্গে একান্ত সংলাপের কথা বলতে চাইছেন তিনি, তা অনেকটাই সুফি ঘরানার। কিছুদিন আগেই ‘তাণ্ডব’ ওয়েব সিরিজে ধর্মের অবমাননা নিয়ে বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। আর তারপরই নিজের ধর্মবিশ্বাস জানিয়ে যেভাবে নিজেকে খোলা পাতার মতো মেলে ধরলেন সইফ, তাতে বলাই যায় , নবাবের মনেও আসলে ছোঁয়া লেগেছে সুফিয়ানার।