ভয়াবহ একটা বিপর্যয়। আর তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একটি প্রেমের কাহিনি। একদিকে ইতিহাস, অন্যদিকে এক কল্পকাহিনি। এই মেলবন্ধনে ঠিক কী যে জাদু লুকিয়ে ছিল, দর্শক আজ আর তার হিসাব খুঁজতে যান না। শুধু মনে রাখেন, পৃথিবীর চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটা স্মরণীয় মাইলফলক হল ‘টাইটানিক’। সেই ছবিই আবার ফিরছে বড় পর্দায়। তবে এই প্রত্যাবর্তনে কিছু নতুনত্বও আছে। আসুন শুনে নিই।
সিনেমার আধুনিক ইতিহাসে ১৯৯৭ সালটা চিরকালের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই বছরই মুক্তি পেয়েছিল জেমস ক্যামেরনের বিখ্যাত ছবি ‘টাইটানিক’। ২৫ বছর পেরিয়ে সেই ছবিই ফের ফিরছে বড় পর্দায়। তবে এবার একটু অন্য ভাবে। ক্ল্যাসিক এই সিনেমা হাত ধরেছে নয়া প্রযুক্তির। আর তাই এবার হাই-ফ্রেম-রেটে 3D 4K HDR ফর্ম্যাটে ‘টাইটানিক’ দেখতে পাবেন দর্শক। আগামী ১০ ফেব্রিয়ারি বড় পর্দায় ফের দেখা যাবে ছবিটি।
আরও শুনুন: ‘নয়না ঠগ লেঙ্গে’… সেরা রোম্যান্টিক গানটাই ছিল না ‘ওমকারা’ ছবিতে, এল কীভাবে?
মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে যে কী ঝড় তুলেছিল ‘টাইটানিক’, তা পঁচিশ বছর পরেও মনে রেখেছেন সিনেপ্রেমীরা। রোজ এবং জ্যাক হিসাবে পাকাপাকি ভাবে সকলের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন কেট উইনস্লেট এবং লিওনার্দো দ্য ক্যাপ্রিও। ১৯৯৮-তে সেরা ছবি, পরিচালনা এবং সম্পাদনা বিভাগে অস্কার জিতেছিলেন পরিচালক ক্যামেরন স্বয়ং। এ ছাড়াও সব বিভাগ মিলিয়ে মোট ১১টি অস্কার এসেছিল ছবির ঝুলিতে। আর বক্স অফিসের সাফল্য তো ছিল প্রায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। ২০০৯-এ ‘অবতার’ আসার পর ক্যামেরনের বক্স অফিসের রেকর্ড ভাঙেন ক্যামেরন নিজেই। এই ‘অবতার’ সিনেমাও নয়া প্রযুক্তিতে নতুন হয়েই ধরা দিয়েছে দর্শকের সামনে। ঠিক একই ভাবে ২৫ বছর পূর্তিতে টাইটানিক-কে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছেন পরিচালক ও প্রযোজনা সংস্থা। এই উপলক্ষে নতুন পোস্টার ও ট্রেলারও রিলিজ করা হয়েছে।
আরও শুনুন: মাসে কত উপার্জন করেন? ফ্যানের প্রশ্নে প্রকাশ্যে সত্যিটা বলেই দিলেন শাহরুখ
নয়া মুক্তির মুহূর্তে দাঁড়িয়ে পুরনো স্মৃতিতে বুঁদ পরিচালক স্বয়ং। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ছবি তৈরির সময় তাঁরা গবেষণায় অনেকখানি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। কোনও একটি ঐতিহাসিক ঘটনার নানারকম ভাষ্য থাকতে পারে, তবে তথ্যগত ভাবে যতটা নিখুঁত হওয়া যায়, সেদিকেই জোর দিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছিল কাল্পনিক চরিত্রও। এই দুয়ের মিলমিশ ঘটানো তাই জরুরি ছিল। আর তাই লিওনার্দো এবং কেট ছাড়া অন্য কাউকে জ্যাক ও রোজের চরিত্রে ভাবতে পারেননি তিনি। যদিও লিওনার্দোর কাস্টিং নিয়ে গোড়ায় কিছু সমস্যা হয়েছিল। তবে পরিচালক স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, ভাগ্যিস তা মিটে গিয়েছিল। ক্যামেরনের মত, লিও আর কেট না থাকলে টাইটানিক হয়তো এই মাত্রার একটি ছবি হয়ে উঠতে পারত না।
আরও শুনুন: বছরভর স্নানের থেকে সঙ্গম বেশি! মডেলের স্বীকারোক্তিতে অবাক নেটিজনরা
সিনেমা প্রযুক্তি নির্ভর শিল্প। সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তি বদলায়। ফলে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতাও বদলাতে বাধ্য। আধুনিক সময়ে এই বিষয়টিকে সার্থক ভাবে যিনি রূপায়িত করছেন তিনি জেমস ক্যামেরন। ক্ল্যাসিক একটি ছবিকে প্রায় আড়াই দশক পরে নতুন প্রযুক্তিতে নতুন করিয়ে ফিরিয়ে আনা নিঃসন্দেহে সাহসি পদক্ষেপ। দর্শকের কাছে ‘টাইটানিক’-এর আবেদন হয়তো একই রকম আছে। তবে প্রযুক্তির উন্নতিতে দর্শককে আরও একবার নতুন অভিজ্ঞতাই দিতে চান ক্যামেরন। আর তাই ফিরছে ‘টাইটানিক’। বিশেষত যে দর্শক বড় পর্দায় এ ছবি দেখার সুযোগ পাননি, তাঁদের কাছে এ যে সুবর্ণসুযোগ, তা বোধহয় বলাই যায়।
Celebrate the 25th anniversary of the timeless love story this Valentine’s Day Weekend.
#Titanic returns to the big screen in remastered 4K 3D on February 10. pic.twitter.com/WcBFJJ8hBI— Paramount Pictures (@ParamountPics) January 10, 2023