দেহপট নটের সম্পদ। সাভারকার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নিজেকে আমূল বদলে ফেলেছেন রণদীপ হুডা। সে ছবি সামনে আসা মাত্রই চর্চায় এক বাঙালি অভিনেতা কিঞ্জল নন্দ। ‘হীরালাল’ চরিত্রের জন্য দেড় মাসে ওজন কমিয়েছিলেন ২৭ কেজি। শুটিং-এর আগে চার-পাঁচ দিন ছিলেন জল না খেয়ে। চরিত্রের জন্য পরিশ্রমের সেই ইতিবৃত্তই শোনালেন কিঞ্জল, সংবাদ প্রতিদিন শোনো-র হয়ে তাঁর কথা শুনলেন শুভদীপ রায়।
কঙ্কালসার চেহারা। মাথার চুল উশকোখুশকো। দেখে মনে হয় ঘোর অসুস্থ। বলি অভিনেতা রণদীপ হুডার এমনই এক ছবি সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে সোশাল মিডিয়ায়। সাভারকার চরিত্রের জন্য নিজেকে এভাবেই বদলে ফেলেছেন অভিনেতা। আর সেই ছবি সামনে আসা মাত্র চর্চায় উঠে এসেছেন বাঙালি অভিনেতা কিঞ্জল নন্দ। ‘হীরালাল’ সিনেমার মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নিজের চেহারাকে আমূল বদলে ফেলেছিলেন তিনিও। কমাতে হয়েছিল শরীরের অর্ধেক ওজন। তার জন্য দিনের পর দিন জল না খেয়ে থাকতেও দুবার ভাবেননি। কষ্ট হয়েছে। শরীর ভেঙেছে। কিন্তু মনের জোর হারাননি। সংবাদ প্রতিদিন শোনো-কে অভিনেতা শোনালেন পুরনো সেই দিনের কথা।
সিনেমার একেবারে শেষ অংশে দেখা যায় মুখ্য চরিত্র হীরালাল অসুস্থ। শরীর ভেঙেছে। ওজনও কমেছে যথেষ্টই। ক্যামেরা আর মেকআপের কারসাজিতে হয়তো অভিনেতাকে সেইভাবে তৈরি করে নেওয়াই যেত। কিন্তু সেই কৃত্রিম পথে হাঁটতে চাননি পরিচালক বা অভিনেতা কেউই। নিজে চিকিৎসক বলেই কিঞ্জল কিন্তু জানতেন, জোর করে শরীরের এমন অবস্থা করা মোটেই ভালো কাজ নয়। কিন্তু চিকিৎসকের সতর্কতাকে এখানে থামিয়ে দিয়েছিল অভিনেতা সত্তা। প্রথম ছবিতেই নিজেকে উজাড় করে দিতে কোনও খামতি রাখেননি তিনি।
কীভাবে নিজেকে ওই লুকের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন কিঞ্জল? অভিনেতা জানাচ্ছেন, দেড় মাসে ওজন কমিয়েছিলেন ২৭ কেজি। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। তার জন্য প্রতিদিন ১০-১২ ঘণ্টা শরীরচর্চা করতে হত। সঙ্গে ছিল কড়া ডায়েট। তাও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনেই। মূলত লিক্যুইড ডায়েটে থাকতেন কিঞ্জল। আর শ্যুটিং হওয়ার ৪-৫ দিন আগে জল খাওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেন। আসলে তিনি যে অসুস্থ কারও চরিত্রে অভিনয় করছেন তা স্পষ্ট করতে ফুটিয়ে তুলতেই এই সাধনা। পর্দায় ফুটে উঠেছিল তার ফল। আপনা থেকেই ঠোঁট, গাল ফেটে গিয়েছিল। অভিনয়ের সময় মেক আপ ছাড়াই নিজেকে অসুস্থ দেখাতে পেরেছিলেন কিঞ্জল।
অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা হয়তো একেই বলে। নিজের কাজের প্রতি নিষ্ঠার সংজ্ঞাও সেদিন যেন নতুন করে চিনিয়েছিলেন বাঙালি অভিনেতা। আজ সোশাল মিডিয়া জুড়ে যে চর্চা, তা যেন সেদিনের পরিশ্রম আর নিষ্ঠারই স্বীকৃতি। হয়তো একটু দেরিতে, তবে তাতে কী!
অভিনেতা বলছেন, বাংলায় ভালো কাজ হলেও সেভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। তাই এই ধরনের কাজ সেই ভাবে জনসমক্ষে আসে না। নতুন করে চর্চায় ঘিরেও তাই আনন্দের সঙ্গে চাপা আফশোসও মিশে আছে অভিনেতার মনে।