সময়টা নব্বই দশকের গোড়ার দিক। অমিতাভ বচ্চন-এর ‘অ্যাংরি ইয়ংম্যান’ ইমেজ অস্তমিত। সঞ্জয় দত্ত, গোবিন্দার মত নায়কদের সস্তার অ্যাকশন অথবা কমেডি ফিল্মে বাজার ভর্তি।
ঐতিহাসিক তথ্য অনুসারে, এই সময়েই ‘হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি’-তে ‘খান সাম্রাজ্যের’ সূচনা। প্রতিষ্ঠাতা আমির, সলমন, শাহরুখ খান। পরবর্তী দু-দশক ধরে যাবতীয় হিট-ফ্লপ, অর্থনৈতিক টালমাটাল, ব্যাক্তিগত ভাঙাচোরা সব ছাপিয়ে রাজত্ব করে গেছেন তাঁরা।
তিনজনের মধ্যে কাকতলীয় ভাবে অদ্ভুত মিল, অদ্ভুত বৈপরীত্য। আর এই অন্তবর্তী প্রতিযোগিতা বা ভালোবাসায় মজে ছিল একটা গোটা প্রজন্ম।
হালের ওটিটি নির্ভর ভারত হয়তো কোনোদিন বিশ্বাস করতে পারবে না। আজ যাদের বয়স তিন বা চারের কোঠায় তাদের ঝগড়া, হাসি, কোচিং-সেন্টার নির্বাচন, জিম-এ যাওয়া, জামাকাপড়, ফ্রেন্ডশিপ ডে, চুলের ছাঁট থেকে প্যান্টের কাটিং, এমনকি মাধ্যমিক-এর পরে কোন বিষয় নিয়ে পড়বে সেটা পর্যন্ত ঠিক হতো, কে কার ফ্যান তার ওপর ভিত্তি করে।
১৯৯২ সাল। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বছর। সেই বছরই ‘দিওয়ানা’ ফিল্মের এক পার্শ্বচরিত্রে শাহরুখ খান-এর বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ। প্রথম আবির্ভাবেই পুরস্কার ও জোটে। তিন বছর ধরে, মাঝে অন্তত চোদ্দটি ছবি করেছেন। তার মধ্যে অনেকগুলোতেই বেশ নেগেটিভ হিরোর রোল।
৯৫ সালের অক্টোবর মাসে মুক্তি পেয়েছিল, ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ যা শাহরুখ খানকে ‘রোম্যান্টিক হিরো’র তকমা দিল। হয়তো টাইপকাস্ট তৈরি করে দিল, হয়তো বেঞ্চমার্ক-ও। আজও তাই শত চেষ্টাতেও তিনি তার ইমেজ বদলাতে পারেন না।
তাই এই দশকের পরপর ছবি ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’, ‘জব হ্যারি মেট সেজল’, ‘জব তক হ্যায় জান’, সবখানেই মুখ্য উপজীব্য তিনি, তাঁর নায়কোচিত ক্যারিশ্মা, এবং প্রেম। অতয়েব সেই তিনি রোম্যান্টিক হিরো হয়েই থেকে যান। ‘দিলওয়ালে’ ছবিতে এত বছর পর কাজল ও তাঁর জুটির সেই রসায়ন নস্টালজিয়াকে আরও একটু উস্কে দেয়। দর্শকদের স্মৃতিতে ছায়ামরিচের ঘ্রাণ নিয়ে আসে। তারপর? শুনুন…
লেখা: অম্লান দত্ত
পাঠ: শঙ্খ বিশ্বাস
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস