ভোটের ফল বেরিয়েছে। আশানুরূপ হয়নি, গোহারা হেরেছে দল। কিন্তু তাতে কি, দুঃখ ভুলতে রাজ কাপুরের সিনেমা দেখতে ছুটলেন লালকৃষ্ণ আদবানি আর অটল বিহারী বাজপেয়ী! কাপূর পরিবারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতে সেই কাহিনিই শোনালেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। পুরনো দিনের কথা আর কী বললেন মোদি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভারতকে রাশিয়ার বন্ধু বানিয়েছেন, রাজ কাপুর! রুশ সফরে গিয়ে এমনই দাবি করেছেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সম্প্রতি ফের রাজ কাপুরের প্রসঙ্গ তুলে স্মৃতিচারণা করতে শোনা গেল তাঁকে। ভারতীয় সিনেমার শো-ম্যান ঠিক কতটা পছন্দের ছিলেন বিজেপির বর্ষীয়ান নেতাদের, সে কথাই মনে করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
১৪ ডিসেম্বর রাজ কাপুরের জন্মশতবার্ষীকি। সেই উপলক্ষে দিল্লিতে শুরু হচ্ছে ‘রাজ কাপুর ১০০ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’। এই উৎসবে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কাপুর পরিবার। তবে চিঠি পাঠিয়ে নয়, সম্প্রতি গোটা কাপুর পরিবার হাজির হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বাস ভবনে। সেখানে সঙ্গে বেশ কিছু সময় কাটিয়েছেন রনবীর-করিনারা। আড্ডার মেজাজে ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও। একাধিক প্রসঙ্গ ওঠে তাঁদের বার্তালাপে। ছিলেন সইফ আলি খানও, তাঁর সঙ্গে কথায় কথায় নবাব পতৌদির প্রসঙ্গ মনে করান মোদি। তবে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন রাজ কাপুর। আর সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই মোদি বলেন, রাজ কাপুরের সিনেমা দেখতে যেতেন আদবানি-বাজপেয়ীরা। আলাদা করে বলার প্রয়জন নেই যে এঁরাই একসময় বিজেপির মহীরুহ ছিলেন। দীর্ঘদিন এঁদের সঙ্গে কাটিয়েছেন মোদি। সেই পুরনো স্মৃতি থেকেই বিশেষ এক ঘটনার কথা মনে করেন তিনি। দিল্লির কোনও এক নির্বাচনে বিজেপি হেরে যায়। দলের উচ্চপদে ছিলেন লালকৃষ্ণ আদবানি, অটল বিহারী বাজপেয়ীর মতো নেতারা। ভোটের হারে দুঃখ হওয়াই স্বাভাবিক! কিন্তু সেই নিয়ে বসে না থেকে, বিজেপি নেতারা হাজির হন সিনেমাহলে। সঙ্গে ছিলেন নরেন্দ্র মোদিও। সেদিন রাজ কাপুরের ‘ফির সুভা হোগি’ সিনেমাটি দেখেন তাঁরা।। এতদিন পরেও সেইদিনের কথা ভোলেননি মোদি।
রুশ সফরেও রাজ কাপুরের প্রসঙ্গ মনে করাতে বিশেষ এক গানের কথা বলেছিলেন মোদি। ১৯৫৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘শ্রী ৪২০’ সিনেমার সেই গান আজও অনেকে মুখে মুখে ফেরে। ঠিক ধরেছেন, ‘মেরা জুতা হ্যায় জাপানি’ গানটির কথাই বলেছিলেনন মোদি। এই গানে একটি লাইন ছিল, ‘সার পে লাল টোপি রুশি, ফির ভি দিল হ্যায় হিন্দুস্তানি’। যার আক্ষরিক অর্থ করলে দাঁড়ায়, রাশিয়ার টুপি মাথায় পড়লেও মন হিন্দুস্তানেই থাকবে! এই প্রসঙ্গ ধরেই মোদি দাবি করেন, সেই সময়কার এই গান ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছিল। ইডিয়া-রুশি ভাই ভাই, এই স্লোগানও শোনা যেত তখন। রাজ কাপুর একইসঙ্গে দুই দেশে জনপ্রিয় হয়েছিলেন এই গানের সুবাদে। আর এবার কাপুর পরিবারের সঙ্গে একান্ত আলাপেও যেভাবে সময় কাটালেন মোদি, তাতে আরও স্পষ্ট হল তাঁর রাজ কাপুরের প্রতি ও ভালোবাসার বিষয়টা।