রাঙা ঠোঁটে অভিনেতা হাজির শট দিতে। দেখেই তো রেগে গেলেন পরিচালক। নিশ্চয়ই লিপস্টিক দিয়ে ঠোঁট রাঙিয়েছেন অভিনেতা। এই ভেবে বেজায় ধমক দিলেন তিনি অভিনেতাকে। আর সেই অভিনেতা অন্য কেউ নন, স্বয়ং অমিতাভ বচ্চন। পরিচালকের ধমক খেয়ে কী করেছিলেন তিনি? আসুন, পুরো গল্পটাই শুনে নিই।
বিগ বি, অর্থাৎ অমিতাভ বচ্চন। এই নামের ধার-ভার এমনই যে, গোটা হিন্দি সিনেমার দুনিয়া তাঁর সামনে রীতিমতো ভয়ে-ভয়ে থাকে। সেই অমিতাভ বচ্চনকেই নাকি বেজায় ধমক দিয়েছিলেন পরিচালক। তা-ও আবার লিপস্টক দিয়ে ঠোঁট রাঙিয়ে তোলার ‘অপরাধে’! আজকের দিনে এই দৃশ্য অবশ্য কল্পনা করতেই কষ্ট হয়। এ অবশ্য যে সময়ের কথা, তখনও তিনি বিগ বি হয়ে ওঠেননি। তিনি তখন তরুণ অভিনেতা। হিন্দি সিনেমার দুনিয়ার একচ্ছত্র সম্রাট হয়ে ওঠেননি। বরং সেই রাজপাট তখন রাজেশ খান্নারই। নবীন অভিনেতা হিসাবে নিজের ছাপ যখন রাখতে শুরু করেছেন দীর্ঘদেহী অমিতাভ, এ হল সেই সময়ের গল্প।
আরও শুনুন: ‘তোমরা ভারতে বসবাসের যোগ্য নও’, বন্ধুর ‘বাক্যবাণ’ ভুলতে পারেননি নাসিরুদ্দিন শাহ
শুটিং চলছিল বিখ্যাত ‘আনন্দ’ ছবির। ক্যামেরার উলটোদিকে দাপুটে পরিচালক হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়। তাঁকে সকলেই শ্রদ্ধা-সম্মান করেন। সেই পরিচালকের কাছে ধমক খাওয়া নেহাত ছোটখাটো ঘটনা ছিল না। অনেক পরে সেই মজার গল্প বিগ বি নিজেই জানিয়েছিলেন। শট দেওয়ার জন্য তিনি দাঁড়িয়েছেন ক্যামেরার সামনে। হঠাৎ উলটোদিক থেকে ভেসে এল পরিচালকের ধমক। হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় তো অমিতাভের রাঙা ঠোঁট দেখে বেজায় রেগে গেলেন। জিজ্ঞেস করলেন, কেন তরুণ অভিনেতা ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়েছেন? রেগে বলেই দিলেন, কী ভাবেন কি অমিতাভ নিজেকে! এক্ষুনি যেন ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে ফেলেন তিনি।
আরও শুনুন: ‘ভারতে বিতর্কিত কথা বলতে ভয় পাই না, পাকিস্তানে ভয় কীসের?’ সাফ জানালেন জাভেদ আখতার
সহকারী পরিচালকও তখন রেগে লাল। এদিকে অমিতাভ পড়েছেন বিপদে। তিনি ভয়ে ভয়ে মৃদু স্বরে বললেন, তিনি আসলে লিপস্টিক দেননি। তাঁর ঠোঁটটাই লাল টুকুটুকে। ক্যামেরায় যা দেখা যাচ্ছে, তা একেবারে স্বাভাবিক। কোথাও কোনও কৃত্রিম রং নেই। শুনে তো সহকারী পরিচালক আরও রেগে গেলেন। ডেকে আনা হল মেক-আপ আর্টিস্টকে। তিনি একটা টিস্যু পেপার দিয়ে অমিতাভের ঠোঁট মুছে দেওয়ার চেষ্টা করলেন। রং যদি থেকে থাকে তবে তা উঠে যাবে। কিন্তু কোথায় কী! কোনও রং-ই যে নেই। তখন সকলেই বুঝলেন যে, অমিতাভ যা বলছেন তা নির্জলা সত্যি। সত্যিই তিনি লিপস্টিক দেননি ঠোঁটে। বরং তাঁর ঠোঁটের স্বাভাবিক রং-ই বেশ উজ্জ্বল লাল। কী আর করা যাবে! পরিচালক বললেন, ক্যামেরায় ঠোঁট বড্ড উজ্জ্বল লাগছে। অল্প বেস মেক-আপ যেন করে সেই উজ্জ্বলতা খানিকটা কমিয়ে দেওয়া হয়। তাই-ই করা হয়েছিল।
দীর্ঘ অভিনয়জীবনে এমন কতই না মজার ঘটনা জমা হয়েছে বিগ বি-র ঝুলিতে। এই সব ছোট ছোট ঘটনা আসলে সিনেদুনিয়ার সোনালি দিনগুলোকেই মনে করিয়ে দেয়।