দিনকয়েক আগেই দেশবাসীকে ভোটে অংশ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন সোনি রাজদান। অথচ, সেই ভোট দিতে পারবেন না তাঁর মেয়েই। হ্যাঁ, দেশে থাকলেও এবার দেশের লোকসভা ভোটে যোগ দেওয়ার উপায় নেই আলিয়া ভাটের। কিন্তু কেন? আসুন, শুনেই নেওয়া যাক।
একদিকে মহেশ ভাটের মেয়ে, অন্যদিকে কাপুর পরিবারের বধূ। বলিউডের গুরুত্বপূর্ণ দুই পরিবারের শরিক আলিয়া ভাট। অথচ তিনিই কিনা ভোট দিতে পারবেন না চলতি লোকসভা নির্বাচনে। এদিকে সম্প্রতিই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রত্যেক দেশবাসীকে ভোটদানের গুরুত্ব মনে করিয়েছেন তাঁর মা সোনি রাজদান। একে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসবের তকমাও দিয়েছিলেন তিনি। তারপরেও কেন ভোটের উৎসবে নেই আলিয়া?
না, দেশের বাইরে থাকার কারণে আলিয়া ভোট দিতে পারবেন না এমন নয়। আসলে নাগরিকত্বের সূত্রেই এই বাধা। বলিউডের প্রথম সারির এই তারকা ভারতের নাগরিকই নন। মা সোনি রাজদানের সূত্রে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন অভিনেত্রী। আর সে কারণেই ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোটদানের অধিকার নেই ব্রিটেনের নাগরিক আলিয়ার।
তবে গণতন্ত্রের উৎসব থেকে আলিয়া একাই বাদ পড়েননি। বলিউডে এমন আরও তারকা রয়েছেন, চলতি নির্বাচনে যাঁরা ভোট দিতে পারছেন না। এমনিতে সিনেজগৎ থেকে ভোটে দাঁড়ানো বা ভোটের সমর্থনে প্রচারের চল দীর্ঘদিনের। কিন্তু তারপরেও, সেই জগতেরই একাধিক রথী মহারথীর ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। যেমন ধরুন, হেমা মালিনী বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ালেও, তাঁরই কাছাকাছি সময়ের অভিনেত্রী দীপ্তি নাভাল ভোটটাই দিতে পারবেন না। ভারতের অমৃতসরে তাঁর জন্ম, কিন্তু বাবার কাজের সূত্রে আমেরিকাতেই বেড়ে উঠেছেন এই খ্যাতনামা অভিনেত্রী। পরে কর্মসূত্রে ভারতে এলেও তিনি এখনও আমেরিকারই নাগরিক। আবার ধরুন, খোদ আমির খানের ভাগ্নে ইমরান খান যেমন। বলিউডের তিন খানের একজনের আত্মীয় হলেও, ভোট দেওয়ার উপায় নেই তাঁর। কেননা ইমরান আসলে আমেরিকার নাগরিক। আবার গোয়ায় জন্ম হলেও, পর্তুগালের নাগরিকত্ব নিয়েছেন ইলিনা ডিক্রুজ। এই মুহূর্তে দেশ ছেড়ে আমেরিকায় সংসার পেতেছেন অভিনেত্রী।
বলিউডের এই সময়ের অভিনেত্রীদের মধ্যে প্রথম দিকে থাকলেও, ক্যাটরিনা কাইফও দেশের ভোট উৎসবে থাকতে পারছেন না। ভিকি কৌশলকে বিয়ে করে পাঞ্জাবি বহু হলেও, আলিয়ার মতো তিনিও ব্রিটেনের নাগরিক। আবার একসময় অনুরাগ কাশ্যপকে বিয়ে করলেও, কাল্কি কোয়েচলিন বরাবরই ফ্রান্সের নাগরিক। অভিনয়ের জন্য ভারতে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি, তবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে ভোট দেওয়ার অধিকার মেলেনি। কর্মসূত্রে ভারতে থাকলেও, এমনকি সেখানে বিশাল বাড়ি কিনে ফেললেও জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজেরও একই হাল। তাঁর বাবা শ্রীলঙ্কার বাসিন্দা, মা মালয়েশিয়ার, সুতরাং ভারতের নাগরিক নন তিনিও। বলি নায়িকা নার্গিস ফকরি-র জন্ম আমেরিকায়। বাবা পাকিস্তানি, মা চেক প্রজাতন্ত্রের। ফলে কোনোভাবেই ভারতের সঙ্গে নাগরিকত্বের সূত্রে কোনও যোগাযোগ নেই তাঁর। আবার জ্যাকলিনের মতোই আইটেম ডান্সে মন ভোলান নোরা ফতেহি, সম্প্রতি বলিউডে কেরিয়ারের ১০ বছর পূর্ণও করে ফেলেছেন তিনি। তবে জন্মসূত্রে নোরাও কানাডার নাগরিক। যেমন করণজিৎ কৌর, ওরফে সানি লিওনিরও কানাডা ও আমেরিকার নাগরিকত্ব রয়েছে। ভারতের বিনোদুনিয়া তাঁকে দেখে যতই মুগ্ধ হোক না কেন, ভারতে ভোটদানের অধিকার নেই তাঁরও।