নয়–নয় করে ন’টা মাস অতিমারীর সঙ্গে কেটে গেল আমাদের। কখনও তার স্বল্প অঙ্গুলিহেলনে আমরা ভীত–সন্ত্রস্ত হয়েছি। সিঁধিয়ে গিয়েছি দেওয়ালে; আক্ষরিক অর্থেই। অনন্ত কুয়ার জলে চাঁদ পড়ে থেকেছে। তো কখনও টিকা আসার সম্ভাব্য খবরে উত্তেজিত, আনন্দিত হয়েছি। কোভিড–কে মনে মনে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অব্যক্ত চিৎকারে বলেছি: ভ্যাকসিন পেলে আমি মুখের সমস্ত মুগ্ধকারী আবরণ খুলে ফেলে দৌড় ঝাঁপ করবো কড়া রোদে…। জীবন থেমে থাকতে থাকতেও থাকেনি। চলেছে, চলছে, তার আপন স্রোতে।
চলতি বছরের পয়লা জানুয়ারি ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ উইশ করার সময়ও কি ভাবতে পেরেছিলাম, শতাব্দীর অভিশপ্ততম বছর হতে চলেছে নতুন দশকের প্রথম সাল? ভাবা–না ভাবা, আশাপূরণ–আশাভঙ্গ, পুরনো শোক–নতুন স্বপ্নর ছায়ামারীচ বুকে নিয়েই শুরু হয় একেকটা বছর। চোখের নিমেষে ফুরিয়েও যায় তা। মাঝখান থেকে এ বছরটাকে খানিক দীর্ঘায়িত করল অতিমারী। মানুষকে বড় কাঁদাল। এই মনখারাপের বছর পেরতে আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। হয়তো রোগহীন দিন সেখানে আমাদের প্রত্যাশায় ঘাপটি মেরে বসে আছে।
নিউ নর্মাল জীবন আমাদের অভ্যাসের ফর্দে মাস্ক, স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ, সারফেস ক্লিনার ইত্যাদির মতো নতুন কিছু জিনিস যেমন যোগ করেছে; তেমন নতুন কিছু শব্দও জুড়েছে ভোক্যাবুলারিতে; যেগুলো ২০২০–র মার্চ ইস্তক অশ্রুত ছিল। যেমন ‘কোয়ারেন্টিন’, যেমন ‘ফিজিক্যাল ডিসট্যান্স’, যেমন ‘কন্টামিনেশন’… ইত্যাদি প্রভৃতি। এদের প্রত্যেককে যে আমরা খুব আহ্লাদে আপন করেছি এমনটাও নয়।
কবির কলম ধার করে এখানে গাইতেই হয়: ‘আমি তো ছিলাম বেশ নিজের ছন্দে… কোথাও ছিলে না তুমি, কেন তুমি এলে…’। কিন্তু কোন কোন শব্দ এই অভিশপ্ত বছরে ভারতীয়রা গুগল–এ বেশি সার্ফ করলেন?
ডিসেম্বরে গুগল ইন্ডিয়া তার বাৎসরিক ‘ইয়ার ইন সার্চ’–এর ফলাফল প্রকাশ করে।
অ্যান্ড দ্য মোস্ট সার্চড ওয়ার্ড–এর উইনিং ক্রাউন গোস টু… না না না… ‘কোভিড’ বা ‘করোনাভাইরাস’ কোনওটাই না। আচ্ছা একটু গেস করুন তো দিকি… কী? পারছেন? পারছেন না তো?
তাহলে শুনুন…
লেখা: সোহিনী সেন
পাঠ: সুশোভন প্রামাণিক
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস