রসগোল্লা আর বাঙালি যেন সমার্থক। রসগোল্লা ভালোবাসেন না, এমন বাঙালি ভূ-ভারতে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু একটা সময় তো রসগোল্লা ছিল না বাঙালির কাছে। এক বাঙালির নিরন্তর চেষ্টাতেই বাঙালির কাছে এসেছে রসনাতৃপ্তির এই মহার্ঘ বস্তুটি। আসুন, শুনে নিই রসগোল্লার জন্মকাহিনি।
বাংলার বাইরে যে কাউকে বাঙালির প্রিয় একটা জিনিসের নাম যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কী উত্তর আসবে বলুন তো? হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন- রসগোল্লা। সাধের এই মিষ্টিটি ছাড়া বাঙালির পরিচয় যেন সম্পূর্ণই হয় না। আজ ভাবতে অবাকই লাগে যে, একসময় কিন্তু বাঙালির কাছে ছিল না এই মিষ্টি। মানে তখন রসগোল্লা আবিষ্কারই হয়নি। বাঙালিকে তার প্রাণের এই জিনিসটি উপহার দিয়ে গিয়েছেন নবীন চন্দ্র দাস।
আরও শুনুন: ফ্যাশন নয় আন্দোলনের অংশ, সেকালে সমাদর পেয়েছিল ‘বিদ্যাসাগর পেড়ে’ শাড়ি
রসগোল্লার আবিষ্কারক ঠিক কে, তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। যেমন শোনা যায় হারাধন ময়রার কথা। তিনি রানাঘাটের মানুষ ছিল। ফুটন্ত রসের মধ্যে ভুলক্রমে নাকি পড়ে গিয়েছিল কিছু ছানার গোল্লা। আর তা থেকেই রসগোল্লার জন্ম। এমন মত যেমন আছে, তেমন কেউ কেউ বলে থাকেন, পর্তুগিজদের হাত ধরেই ছানার তৈরি মিষ্টি এসেছে বাঙালির হাতে থুড়ি পাতে। তবে রসগোল্লার আবিষ্কারের নিরিখে যাঁর নামে একরকম সিলমোহর পড়েছে বলা যায়, তিনি হলেন নবীন চন্দ্র দাস। শোনা যায়, গোড়ার দিকে তিনি ছিলেন চিনির ব্যবসায়ী। পারিবারিক কিছু ঝামেলার কারণে এই ব্যবসা ছেড়ে পরে একটা মিষ্টির দোকান খোলেন, জোড়াসাঁকো এলাকায়। তবে তেমন পসার জমেনি সে দোকানের। ধারবাকি দেওয়ার মতো বিশেষ পুঁজিও ছিল না তাঁর হাতে। ফলে সে দোকান বন্ধই হয়ে যায়।
আরও শুনুন: প্ল্যানচেটের অভ্যাস ছিল রবীন্দ্রনাথের, মৃত্যুর পর নাকি প্ল্যানচেটে সাড়া দিয়েছিলেন নিজেও
এদিকে হাল ছাড়ার পাত্র নন স্বয়ং নবীন চন্দ্র। বাগবাজার এলাকায় তিনি আবার একটি মিষ্টির দোকান খোলেন। নবীন চন্দ্র চাইছিলেন, এমন একটা বিশেষ মিষ্টি তৈরি করতে যা তাঁকে স্বাতন্ত্র দেবে। পর্তুগিজরা ছানার মিষ্টি তৈরি করলেও, আজ আমরা যাকে রসগোল্লা বলে চিনি, তা কিন্তু তাঁরা করতেন না। নবীন্দ চন্দ্র পরীক্ষা চালাতে থাকেন। কিভাবে ছানাকে একটা নির্দিষ্ট আকারে এনে রসে ফুটিয়ে সুস্বাদু একটা মিষ্টি তৈরি করা যায়। বেশ কয়েক বছরের চেষ্টায় তিনি সাফল্য লাভ করেন। আর বাঙালির হাতে আসে তার সাধের রসগোল্লা।
বাকি অংশ শুনে নিন।