হ্যারি পটারদের সেই উড়ন্ত গাড়িটিকে মনে আছে তো! আকাশি রঙের সেই বিখ্যাত ফোর্ড অ্যাংলিয়া গাড়িটি। রন উইজলির বাবা যেটাকে বানিয়ে তুলেছিলেন যাদুকরদের গাড়ি। উড়তে তো পারত বটেই, এমনকি তাতে জুড়ে দিয়েছিলেন অদৃশ্য হওয়ার বিশেষ যন্ত্রও। শুধু হ্যারি পটারই নয়, জেটসনস থেকে অপ্রতিরোধ্য জেমস বন্ড, বহু সিনেমা, গল্পেই রয়েছে উড়ন্ত গাড়ির কথা। সে সব কল্পবিজ্ঞানের গল্পই এ বার সত্যি হল বলে। এ বার বাস্তবেই উড়বে গাড়ি। অপেক্ষা মাত্র কয়েকটা বছরের। কোথায় মিলবে এমন গাড়ি? শুনে নিন।
বাতাসে উড়ছে গাড়ি। আর তাতে চড়ে খেলা দেখতে আসছেন ক্রীড়াপ্রেমী মহল। শুনে ভাবছেন তো, এমন আবার হয় নাকি! এসব তো কল্পনা। তবে আর বলছি কি, এমনই হতে চলেছে প্যারিসে।
২০২৪ অলিম্পিকেই হয়তো ক্রীড়াপ্রেমীরা খেলা দেখতে আসবেন উড়ন্ত ট্যাক্সিতে চেপে। আগামী বছর প্যারিসেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে অলিম্পিক। আর সেখানেই শুরু হতে পারে উড়ন্ত সাটল পরিষেবা।
ফ্রান্সের সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, প্যারিসের বাইরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সেই ইলেকট্রিক এয়ার ট্যাক্সির টেস্ট রান। যানজট এড়িয়ে ক্রীড়াপ্রেমীরা যাতে দ্রুত পৌঁছে যেতে পারেন অলিম্পিকের মঞ্চে, তার জন্যই চেষ্টা চালাচ্ছে সে দেশের প্রশাসন।
আরও শুনুন: মনখারাপ হলে এবার পোষ্যও করতে পারবে ভিডিও কল, বিজ্ঞানীদের নয়া আবিষ্কার ‘ডগফোন’
প্যারিসের পন্টয়েজের একটি এয়ারফিল্ডে টেস্টরান চালাচ্ছে অন্তত ৩০টি প্রস্তুতকারক সংস্থা। প্যারিসের এরোপোর্টসের সিইও অগাস্টিন দ্য রোমানেট জানিয়েছেন, এ ধরনের বিষয়আশয় আগে গোটা ইউরোপেই কখনও হয়নি। কম উচ্চতাসম্পন্ন অ্যাভিয়েশনের যে বাজার, তা এখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃতই রয়ে গিয়েছে। এই পরীক্ষানিরিক্ষা সফল হলে ৩০০ মিটারের নিচে বায়ুপথে যানচলাচলের একটা দিক খুলে যাবে। অলিম্পিকের আগে অন্তত দুটি রুটে যাতে এই উড়ন্ত ট্যাক্সি চালানো যায়, চলছে সেই চেষ্টাই। প্যারিসের মতো ঘন বসতিপূর্ণ দেশে এটা কোনও বিকল্প নয়, প্রয়োজন বলেই মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
আরও শুনুন: মহাকাশে ফলল লংকা, অসাধ্য সাধন করলেন বিজ্ঞানীরা
এরই মধ্যে এয়ার-ট্যাক্সি বানাতে শুরু করেছে বেশ কয়েকটি নামীদামী গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা। জানা গিয়েছে, এই ধরনের ট্যাক্সির উড়ান শুরু করার জন্য কোনও রানওয়ে প্রয়োজন হবে না। একেবারে হেলিকপ্টারের মতোই। ট্যাক্সিতে থাকবে ১৬টি ইলেকট্রিক প্রপেলার, যার মধ্যে ১২টি এমন ভাবে বানানো হয়েছে, যাতে উলম্ব বরাবর ওঠা এবং নামা করা যায়। একই রকম ভাবে এয়ারবাস বানানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী দশ বছরের মধ্যে এই পরিষেবা ব্যাপক হারে বাড়ানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। তবে তার আগে দেখে নেওয়া হবে অলিম্পিক চলাকালীন পরিষেবার সাফল্য এবং সুবিধা-অসুবিধা।
অতএব, আর গল্পের বই কিংবা সিনেমায় নয়, বাস্তবের মাটিতে থুড়ি বাতাসেও এবার পাকাপাকি ভাবে ওড়াউড়ি করতে চলেছে ট্যাক্সি।