ঠাকুর বলেন, সংসার করা, সন্ন্যাস করা, সবই রামের ইচ্ছা। তাই তাঁর উপর সব ফেলে দিয়ে সংসারে কাজ কর। তা না হলে আর কীই-বা করবে? এই প্রসঙ্গেই একবার তিনি শুনিয়েছিলেন এক গল্প। আসুন শুনে নিই।
ঠাকুর তাঁর ভক্তদের বলে থাকেন, “সংসারে রেখেছেন তা কি করবে? সমস্ত তাঁকে সমর্পণ করো — তাঁকে আত্মসমর্পণ করো। তাহলে আর কোন গোল থাকবে না। তখন দেখবে, তিনিই সব করছেন। সবই রামের ইচ্ছা।”
আরও শুনুন: সত্ত্ব, রজঃ আর তমঃ… কে কোন গুণের অধিকারী? চিনিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ
সেই শুনে এক ভক্ত জানতে চাইলেন, ‘রামের ইচ্ছা’ গল্পটি কি? ঠাকুর তখন শোনালেন সেই গল্প। বললেন— কোন এক গ্রামে একটি তাঁতি থাকে। বড় ধার্মিক, সকলেই তাকে বিশ্বাস করে আর ভালবাসে। তাঁতি হাটে গিয়ে কাপড় বিক্রি করে। খরিদ্দার দাম জিজ্ঞাসা করলে বলে, রামের ইচ্ছা, সুতার দাম একটাকা, রামের ইচ্ছা মেহন্নতের দাম চারি আনা, রামের ইচ্ছা, মুনাফা দুই আনা। কাপড়ের দাম রামের ইচ্ছা একটাকা ছয় আনা। লোকের এত বিশ্বাস যে তৎক্ষণাৎ দাম ফেলে দিয়ে কাপড় নিত। লোকটি ভারী ভক্ত, রাত্রিতে খাওয়াদাওয়ার পরে অনেকক্ষণ চণ্ডীমণ্ডপে বসে ঈশ্বরচিন্তা করে, তাঁর নামগুণকীর্তন করে।
আরও শুনুন: গৃহস্থের তপস্যার উপায় নেই, কোন পথ বলে দিয়েছিলেন ঠাকুর ও শ্রীশ্রীমা সারদা?
একদিন অনেক রাত হয়েছে, লোকটির ঘুম হচ্ছে না, বসে আছে, এক-একবার তামাক খাচ্ছে; এমন সময় সেই পথ দিয়ে একদল ডাকাত ডাকাতি করতে যাচ্ছে। তাদের মুটের অভাব হওয়াতে ওই তাঁতিকে এসে বললে, আয় আমাদের সঙ্গে — এই বলে হাত ধরে টেনে নিয়ে চলল। তারপর একজন গৃহস্থের বাড়ি গিয়ে ডাকাতি করলে। কতকগুলো জিনিস তাঁতির মাথায় দিলে। এমন সময় পুলিশ এসে পড়ল। ডাকাতেরা পালাল, কেবল তাঁতিটি মাথায় মোট ধরা পড়ল। সে রাত্রি তাকে হাজতে রাখা হল।
বাকি অংশ শুনে নিন।