বিজ্ঞানের কোন আবিষ্কার যে কোথা থেকে হবে, তা কেউই জানেন না। আমাদের বেশ প্রয়োজনীয় জিনিস সেলোফেনের কথাই ধরুন না। প্লাস্টিকের এই উপকারী প্রকারভেদটি তৈরি হয়েছিল এক মজার ঘটনার সূত্র ধরে। কী সেই ঘটনা? শুনে নিন।
সেলোফেন জিনিসটা বেশ কাজের। বই খাতার ওপর সেলোফেন কাগজের মোড়ক দিলে জল পড়লেও ভিজে যায় না। আবার খাবার টেবলের উপরেও বিছানো থাকে সেলোফেন শিট। কোনও খাবারের অংশ তার উপর পড়লেও সমস্যা হয় না। কেবল মুছে নিলেই কাজ শেষ। না তেল হলুদের দাগ পড়ে যায়, না ভিজে থাকে। কিন্তু এই সেলোফেন তো আর প্রাকৃতিক জিনিস নয়। কীভাবে এই জিনিসটি তৈরি হয়েছিল জানেন?
আরও শুনুন: নোট বাতিল হয়েছে! জানতেনই না… পুরনো নোটে ৬৫ হাজার টাকা হাতে বিপর্যস্ত বৃদ্ধ
সে এক মজার গল্প। এই আবিষ্কারের পিছনে রয়েছেন সুইডেনের এক অধিবাসী, নাম ব্রান্ডেনবার্গার। পেশায় তিনি ছিলেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। একদিন এক রেস্তরাঁয় গিয়েছেন খাওয়াদাওয়া সারতে। যেমন হয়, রেস্তরাঁর অন্যান্য টেবলেও লোকজন বসে রয়েছে। হঠাৎ ব্রান্ডেনবার্গারের পাশের টেবলের ভদ্রলোক কারির বাটিটাকে ঠিক কবজা করতে না পেরে একেবারে উলটে ফেললেন টেবলের উপরেই। সমস্ত খাবারটা পড়ে গিয়ে টেবলের উপরে পাতা চাদর তো খাবারে, ঝোলে মাখামাখি। ছুটে এসেছে ওয়েটারেরা, ভদ্রলোক নিজে কিংকর্তব্যবিমূঢ়, সব মিলিয়ে সে এক যাচ্ছেতাই কাণ্ডকারখানা! শেষে সব পরিষ্কার করে নোংরা চাদরটা পালটে দেওয়া হল। পাশের টেবলে বসে পুরো ঘটনাটাই মন দিয়ে দেখছিলেন ব্রান্ডেনবার্গার। তাঁর মনে হল, রেস্তরাঁয় এমন ঘটনা তো যে কোনও সময়েই ঘটতে পারে। কিন্তু সবসময় এমন চাদর পালটাতে হলে তো মুশকিল। সহজ কোনও উপায় কি নেই? আচ্ছা, যদি এমন কোনও চাদর হয়, যেখানে খাবার পড়লেও দাগ পড়বে না, আবার সুপ বা কারির ঝোল পড়লেও ভিজে যাবে না?
আরও শুনুন: জলের উপর ভাসছে আস্ত ডাকঘর, জানেন কোথায় দেখা মিলবে এর?
আগেই বলেছি, ব্রান্ডেনবার্গার নিজে ছিলেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। অর্থাৎ কাপড়ের বিভিন্ন উপাদান আর রকমফের নিয়ে চিন্তাভাবনা করা তাঁর কাজের মধ্যেই পড়ে। সুতরাং ব্যবসায়িক স্বার্থেই এইরকম কাপড় বানানোর চেষ্টা চালাতে লাগলেন তিনি। ভেবেচিন্তে কাপড়ের উপর ভিসকোস নামে একটা সেমি-সিন্থেটিক প্রলেপ দিলেন। যাতে তরল কিছু কাপড়ের উপরিতলেই আটকে দেওয়া যায়। আর সহজেই তা তুলেও ফেলা যায়, কাপড়ের বাকি অংশকে নোংরা না করে। কিন্তু প্রথম পরীক্ষায় দেখা গেল জিনিসটা খুবই শক্ত হয়ে গেছে।
শুনে নিন বাকি অংশ।