গোয়ালে না, রানি ঘুমোতো খামারের কর্মীদের বিছানায়। কম খেতো সে। বড় গরুদের ভয় পেত। তাকে কেউ কোলে নিলে খুব খুশি হত রানি। খামারের কর্মীদের খুবই প্রিয় ছিল সে। কদিন আগেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ রানিকে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট আকৃতির গুরুর স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু হায়! তার আগেই ঘটে গিয়েছে বিপর্যয়!
বড় খবরটা হওয়ার কথাই ছিল। হলও সেই খবর। কিন্তু তাঁর আগেই মৃত্যু হল বাংলাদেশের রানির। রানি কিন্তু চারপেয়ে। ঢাকার চারিগ্রাম এলাকার শিকড় অ্যাগ্রো লিমিটেড খামারের গরু সে। তবে, বক্সার ভুট্টি জাতের সাদা রঙের এই গরুটি মোটেই সাধারণ না। আসাধারণ কিসে?
রানিই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট আকৃতির গরু। অতি সম্প্রতি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাকে সেই স্বীকৃতিও দিয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে রানির কথা জানিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদন করেন শিকড় অ্যাগ্রো কর্তৃপক্ষ। সত্যি বলতে রানির উচ্চতা, দৈর্ঘ্য ও ওজন জানলে চমকাতে হয়। কস্মিনকালেও এত ছোট চেহারার গরুর কথা ভাবা যায় না। রানির উচ্চতা ছিল ৫০ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ কিনা ২০ ইঞ্চি। দৈর্ঘ্য ছিল ৬০ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ ২৭ ইঞ্চি। আর ওজন মোটে ২৬ কেজি। তবে কিনা গিনেস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন, গরুটি আসলেই ছোট চেহারার তো, নাকি কোনও হরমোন প্রয়োগ করে তাকে এমন আকৃতি দেওয়া হয়েছে! এর জন্য রানির পোস্টমর্টেম রিপোর্টও পাঠাতে হয়েছে গিনেস কর্তৃপক্ষকে।
আরও শুনুন: লম্বা হচ্ছে গোটা দুনিয়া, ভারতীয়দের উচ্চতা কেন কমছে?
সমস্ত ছানবিনের পরেই খেতাব জুটেছে রানির কপালে। রানির দেখভাল করতেন খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সুফিয়ান। তিনি জানিয়েছেন, গরুটি খামারের কর্মীদের সঙ্গেই বিছানায় ঘুমোতো। স্বাভাবিক খাবার খেতো, তবে কিনা পরিমাণে খুব কম খেতো সে। আরও জানা গিয়েছে, আকারে ছোট হওয়ায় রানি অন্য গরুদের ভয় পেত। বরং বাইরে ঘুরে বেড়াতে ভালবাসত। কেউ কোলে নিলে খুশি হত। সকলের প্রিয় সেই রানি গত ১৯ অগস্টে মারা যায়।
আরও শুনুন: চারপেয়ে ‘স্ট্রাইকারে’র দাপটে পণ্ড ফুটবল ম্যাচ, কোথায় ঘটল জানেন?
এরপরেও বড় খবরটা নিয়ে আশাবাদী ছিলেন রানির কাছের লোকেরা। সেই খবর এলোও শেষ পর্ষন্ত। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে গিনেস বুক অব রেকর্ডেস নাম উঠেছে রানির। তবুও খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সুফিয়ান আক্ষেপ করেন। বলেন, খবরটা জানতে পেরে খুব ভালো লাগছে। তবে, রানি বেঁচে থাকলে খবরটা আরও আনন্দের হয়ে উঠত।