করোনা এসে কেড়ে নিয়েছে আমাদের মুখের হাসি। প্রিয়জন বিচ্ছেদ থেকে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা, প্রতিনিয়ত যেন আমাদের বিষাদগ্রস্ত করে রেখেছে। কিন্তু এই দুঃসহ পরিস্থিতিতেও কেউ কেউ পারেন সৃষ্টির ফুল ফোটাতে। সেরকমই কাজ করে চমকে দিলেন এক নার্স। ভ্যাকসিনের ভায়াল দিয়ে বানালেন আশ্চর্য ঝাড়বাতি।
কেউ কেউ বলে থাকেন, টালমাটাল সময় নাকি শিল্প বা সৃষ্টির জন্য উপযুক্ত নয়। আবার এর বিপরীত মত অনেকের। তাঁরা বলেন, প্রকৃতপক্ষে টালমাটাল সময়ই মানুষের ভিতরে সৃষ্টির গভীর অনুপ্রেরণা জোগায়। আর তাই বিক্ষুব্ধ সময়েই ফুটে ওঠে সৃষ্টির নান্দনিক ফুল। কিন্তু সে তো শিল্পীদের একান্ত নিজস্ব পৃথিবীর কথা। যাঁরা নিরন্তর চর্চায় রত, তাঁরা তাঁদের মতো করে এই সমস্যা মোকাবিলার পথ খুঁজে নেন। কিন্তু যাঁদের প্রতিনিয়ত করোনার বিরুদ্ধে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লড়তে হয়, তাঁদের কাছে দুঃসময়ের চরিত্রটাই অন্যরকম। একটি পেশা নার্সিং। ডাক্তারদের পাশাপাশি নার্সরাও এই ভয়াবহ সময়ে ফ্রন্টলাইন ওয়ারিয়র হয়ে উঠেছেন। প্রতিনিয়ত তাঁদের লড়াই করতে হয়েছে নিত্যনতুন বিপদের সঙ্গে। ভাইরাসের সঙ্গে এই লড়াই তাঁদের ক্লান্ত করেছে শারীরীক ভাবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, মনের সজীবতা তাতে নষ্ট হয়নি। এই এতকিছুর মধ্যেও সৃষ্টির জন্য, সৌন্দর্যের জন্য মনের কোণে তাঁরা একটুকরো গোপন স্থান বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছেন। সম্প্রতি এক নার্সের কাজে মিলল তারই প্রমাণ।
আরও শুনুন: করোনার Vaccine সারাতে পারে Cancer, আশ্চর্য তথ্য নয়া গবেষণায়
কী করেছেন ওই নার্স?
আরও শুনুন: ভ্যাকসিন নিয়েও ফিরতে পারছেন না স্বাভাবিক জীবনে, Cave Syndrome নয় তো!
ভ্যাকসিন দেওয়ার পর যে ভায়ালের আর কোনও কাজ থাকে না, সেগুলো দিয়েই তিনি শিল্পের ফুল ফুটিয়েছেন। কলোরাডোর ওই নার্স জোগাড় করেছেন মর্ডার্না ভ্যাকসিনের অসংখ্য ভায়াল। তারপর সেগুলিকে একের পর এক জুড়েছেন এক সুতোয়। না, ভায়ালের মালা তিনি তৈরি করেননি। বরং আরও সুন্দর কিছু করার চেষ্টায় ছিলেন তিনি। একসূত্রে ভায়ালগুলিকে জুড়ে জুড়েই তিনি তৈরি করে ফেলছেন একটি বড়সড় ঝাড়বাতি। সেই ছবি নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই প্রশংসার বন্যা বইছে। নার্সের এই ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ। যে ভ্যাকসিন এখন মানুষের জীবনে জরুরি হয়ে উঠেছে, সেই ভ্যাকসিনের ভায়ালকেই যে শিল্পে রূপান্তরিত করা যায় তা বোধহয় তার আগে এমন করে কেউ ভাবেনি। শিল্প আর বিজ্ঞান যেন এখানে হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি এই শিল্পের ভেতর যেন খোদাই হয়ে থাকল এই সময়টাও। অনেকেই বলছেন, ভ্যাকসিন তো করোনাকালে আমাদের বেঁচে থাকার আলো দিয়েছে। এই ঝাড়বাতি যেন তারই প্রতীক হয়ে থাকল।