আফগানভূমে ফের শুরু তালিবানের দাপট। উদ্বিগ্ন সারা বিশ্ব। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে টুইট করেছেন মালালা ইউসুফজাই। কী বললেন তিনি?
তালিবান-অধিকৃত আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মালালা ইউসুফজাই। সোশাল মিডিয়ায় নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করতেও পিছপা হননি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ এই নোবেলজয়ী। ২৪ বছরের এই পাকিস্তানি তরুণী টুইট করেছেন, “চূড়ান্ত আতঙ্ক নিয়ে দেখলাম কীভাবে আফগানিস্তানের দখল নিল তালিবান।” আফগানভূমের মহিলা, সংখ্যালঘু এবং মানবাধিকার কর্মীদের নিয়ে যে তিনি অত্যন্ত চিন্তিত, তাও জানিয়েছেন মালালা। স্থানীয় ও আঞ্চলিক শক্তি তো বটেই, সারা বিশ্বের কাছেই তাঁর আরজি, যত দ্রুত সম্ভব আফগানিস্তানের নাগরিক ও উদ্বাস্তু মানুষের জন্য যেন প্রয়োজনীয় সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়।
আরও শুনুন: আবার কি ফিরছে যৌনদাসী প্রথা! অন্ধকার যুগের আতঙ্কে কাঁটা আফগান মহিলারা
দেশের পুরোপুরি দখল নেওয়ার আগেই মহিলা ও শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ এসেছিল তালিবানের কাছ থেকে। কুড়ি বছর আগের তালিবানের সঙ্গে আজকের তালিবানের ফারাক রয়েছে বলেও ঘোষণা করতে দেখা গিয়েছিল সংগঠনের নেতৃত্বকে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-কে তারা এ কথাও জানিয়েছিল যে, নারীদের অধিকারকে সম্মান দেবে তারা। হিজাব যদিও পরতেই হবে তাঁদের। তবে মেয়েরা একা বাড়ি থেকে বেরোনোর অনুমতি পাবেন, শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রেও যোগ দেওয়ার অনুমোদন মিলবে। কিন্তু আফগানিস্তানকে কবজা করার পর কার্যত এইসব প্রতিশ্রুতির কোনোটিকেই বাস্তবায়িত হতে দেখা যায়নি। আগের তালিবান সরকার নারীশিক্ষা নিষিদ্ধ করেছিল। পরবর্তী কালে আমেরিকার হস্তক্ষেপের পর আফগানিস্তানের স্কুলগুলিতে মেয়েদের সংখ্যা বেড়ে পৌঁছেছিল ৯০ লক্ষে। কিন্তু কাবুলের দখল নেওয়ার আগেই তাদের মধ্যে ২০ লক্ষ মেয়েকে স্কুল থেকে নাম কাটিয়ে নিতে তালিবান বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ। কর্মক্ষেত্রে শুধু পুরুষদেরই নিয়োগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্যাঙ্কগুলিকে। তালিবান পুনরুত্থান-পর্বে মহিলাদের নিয়ে যে সব বিধিনিষেধ সামনে এসেছে, তাতে অশনি সংকেত দেখছেন বাকি বিশ্বের নাগরিকরাও।
আরও শুনুন: তালিবান মেরে ফেললেও মন্দির ছেড়ে পালাতে নারাজ হিন্দু পুরোহিত
প্রসঙ্গত, শৈশব থেকেই তালিবানি ফতোয়া সয়ে বড় হয়েছেন মালালা ইউসুফজাই। ১৯৯৭ সালে পাকিস্তানে জন্ম তাঁর। তালিবানের নারীশিক্ষা-বিরোধী ফতোয়া নিষেধ মানতে চাননি মালালা। নিজে তো স্কুলে যাওয়া অন্ধ করেনইনি, পাশাপাশি অন্যান্য মেয়েদেরও স্কুলের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিতেন তিনি। মেয়েদের শিক্ষার ওপর নেমে আসা তালিবানি ফতোয়ার কথা বাইরের দুনিয়াকেও জানাতে চাইতেন তিনি। আর এইসবের জন্যই তিনি হয়ে ওঠেন তালিবান জেহাদিদের নিশানা। পনেরো বছর বয়সে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় স্কুলবাসের মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হন মালালা এবং তাঁর দুই সহপাঠিনী। স্বভাবতই, আফগানিস্তানে ফের তালিবান যুগ শুরু হওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মালালা।