বেলা বোস। নামটা শুনলেই আপনাদের কী মনে আসে? নিশ্চয়ই অঞ্জন দত্তের বিখ্যাত গানের সেই রহস্যময়ী মেয়েকে, যিনি বরাবর রয়ে গেলেন টেলিফোনের আড়ালেই! কিন্তু যে বেলা বোস বাস্তবেও ছিলেন, তাঁকে চেনেন কি? শুনে নিন তাঁর গল্প।
বাবা সুরেন্দ্রচন্দ্র বোসের ছোট ভাই সুভাষচন্দ্র বোস। সেই সূত্রে নেতাজির ভাইঝি মেয়েটি। ১৯৪১ সালে নেতাজি যখন অন্তরিন দশা থেকে পালিয়ে এলেন, সেই বিখ্যাত গৃহত্যাগে বেশ সাহায্য করেছিল তার ছোট বোন ইলা। বোঝাই যাচ্ছে, দুই বোনের বেড়ে ওঠার সময়ে কাকার আদর্শ একটা বড় ভূমিকা পালন করেছিল। ওহো, বড় বোনের নামটাই তো বলা হয়নি। অবশ্য এঁদের নাম তো হারিয়ে গেছে সেই কবেই। ইতিহাসের কোনও ধূলিধূসর পাতার এক কোণে। নামের মোহ ছিলও না বেলা বোসের। না হলে, ভারত স্বাধীন হওয়ার পর স্বামীর মতো তিনিও যোগ দিতে পারতেন কোনও রাজনৈতিক দলে, সম্মানজনক পদও পেতেন হয়তো। তার বদলে উদ্বাস্তুদের সাহায্য করার জন্য একা একা পথে পথে জীবন কাটিয়ে দিলেন বেলা বোস।
আরও শুনুন: গুপ্তচর যখন বাঙালি বধূ, আজও বিস্ময় জাগান Savitri Devi
প্রথম থেকে বলা যাক।
আরও শুনুন: ফাইনাল পরীক্ষায় ফেল, চক্রান্তের স্বীকার হয়েছিলেন দেশের প্রথম মহিলা ডাক্তার Kadambini Ganguly!
১৯৪০ সালে নেতাজি রামগড় কংগ্রেস ছাড়ার পরই বেলা ঠিক করে ফেললেন, এবার কাকার পাশে দাঁড়ানোর সময় এসে গেছে। আইএনএ তৈরি হল, ঝাঁসির রানি ব্রিগেডে যোগ দিলেন বেলা। তাঁর স্বামী হরিদাস মিত্রও আইএনএ-তে গোয়েন্দা বিভাগে যোগ দেন, পরে বিভাগের প্রধান পর্যন্ত হয়েছিলেন। বেলাকে পাঠানো হল কলকাতায়, আইএনএ-র স্পেশাল অপারেশনগুলোর তদারকি করার ভার দিয়ে। অন্যান্য জাতীয়তাবাদী শক্তি বা সমর্থক ব্যক্তিদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ গড়ে তোলা দরকার, সেই দায়িত্বও তাঁরই ওপর। এরকমই এক অপারেশনে, পূর্ব এশিয়া থেকে ভারতে ফেরার সময় ব্রিটিশ সৈন্যের হাতে ধরা পড়ে যান হরিদাস মিত্র। তখন অভিযানের নেতৃত্ব নিজের হাতে তুলে নেন বেলা। দলের সকলের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে চলা, তাঁদের নির্দিষ্ট স্থানে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং থাকার ব্যবস্থা করা, সমস্ত কিছু সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেন তিনি। অভিযান সফল হওয়ার পিছনে প্রধান ভূমিকা ছিল তাঁর। বহু গুরুত্বপূর্ণ বিপ্লবীকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। তার ব্যয়ভার সামলাতে নিজের বিয়ের গয়না বিক্রি করে দিতেও কুণ্ঠিত হননি তিনি।
বাকি অংশ শুনে নিন প্লে-বাটনে ক্লিক করে।