পাকিস্তান ম্যাচ হারলেই টিভি ভাঙার ধুম। এমনটা নতুন কিছু নয়। এই নিয়ে ভারতীয় ফ্যানরা রীতিমতো মশকরা করেন। তবে এবার সেই ছবি দেখা যাবে না। অর্থাৎ পাকিস্তান ম্যাচ হারলেও নাকি ভাঙা হবে না টিভি। কেন এমন দাবি পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটারের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বহু প্রতিক্ষিত ম্যাচ। মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রবল উত্তেজনা। যে দল জিতবে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়বেন সেই দলের ফ্যানরা। পাশাপাশি উলটো ছবিটাও সত্যি। পছন্দের দল হারলে, সবথেকে মন খারাপ হবে সেই ফ্যানেদের। আর এই মনখারাপের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে নানাভাবে। গোটা একটা টিভিসেট ভেঙে ফেলাও নতুন কিছু নয়। বরং ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে যেন এটাই স্বাভাবিক। তবে এবার সেই ছবি বদলাবে। এমনটাই দাবি পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার বসির আলির।
:আরও শুনুন:
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তান যেতে ভয় ভারতীয় সাংবাদিকদের, আশ্বস্ত করে পাক ফ্যানরা বললেন…
ভারত-পাকিস্তান, প্রতিবেশী দেশ। তবু বরাবরই দুই-য়ের মধ্যে প্রতিযোগিতার আবহ। খেলা হোক বা সিনেমা, সবক্ষেত্রেই ভারতকে টেক্কা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা দেখা যায় পাকিস্তানের মধ্যে। কখনও প্রকাশ্যে, আবার কখনও গোপনে। ভারতের তরফে যোগ্য জবাবও মেলে। তখন অবশ্য বিষয়টা অন্যরকম হয়ে দাঁড়ায়। খেলার ময়দানেই যদি দেখা যায়, তাহলে পাকিস্তানের হারের বদলা নিতে রীতিমতো দক্ষযজ্ঞ বাঁধিয়ে ফেলেন সে দেশের ফ্যানরা। টিভি সেট ভেঙে ফেলা থেকে শুরু করে খেলোয়াড়দের কুশপুতুল দাহ, সবই চলে। তবে এতে আখেরে ক্ষতি তাদেরই। এই আচরণ গোটা বিশ্বের চোখে পাকিস্তানকে হাসির পাত্র করে তোলে। সবথেকে বেশি কটাক্ষ ভেসে আসে ভারতের তরফে। মানে এ দেশের ফ্যানরা পাকিস্তানের ওই উগ্র জাতীয়তাবাদ নিয়ে রীতিমতো মশকরা করা থাকেন। সবমিলিয়ে ভারত-পাক ম্যাচের ফলাফল যেন নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দেয়। এবারের খেলাতেও যে এর ব্যতিক্রম হবে এমনটা বলা যায় না। তবে উগ্রতার পরিমান হয়তো কমবে। অন্তত বসির আলি এমনটাই মনে করছেন। আর তার নেপথ্যে সবথেকে বড় কারণ, সে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। যেখানে রোজ দু-বেলা খাওয়ার জোটাতে হিমসিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ, সেখানে এত দামি টেলিভিশন সেট ভেঙে ফেলা চরম বোকামি। তাই দেশের অর্থনীতির কথা মাথায় রেখেই এমনটা আর কেউ করবেন না, দাবি বসির আলির।
:আরও শুনুন:
তীর্থ যোগে মিলছে ভারত ও পাকিস্তান, এবার কি ক্রিকেট-ধর্মেও খুলবে দুই দেশের দরজা?
খেলার ফলাফল কী হবে, আগে থেকে বোঝা কঠিন। তবে ভারতকে যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই দেখছেন বসির। তাঁর দাবি, টিম ইন্ডিয়া যথেষ্ট প্রস্তুত নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার জন্য। তবে পাকিস্তানও লড়াই জারি রাখবে বলে তাঁর বিশ্বাস। তাও যদি শেষমেশ হার মেনে নিতে হয়, তাহলেও তা স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নেবেন তাঁরা। টিভি সেট ভাঙার মতো কিছু এবার আর হবে না। আসলে, নিজের দেশ নিয়ে একপ্রকার হতাশ এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। সামগ্রিক ভাবে পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তাঁর। সেইসঙ্গে পাক ক্রিকেট দলের গঠন নিয়েও একেবারেই আশাবাদী নন বসির। তাই একপ্রকার ব্যঙ্গ করেই টিভি না ভাঙার কথাটি তিনি বলেছেন। যদিও ভারতীয় ফ্যানরা এবারের ম্যাচের আগেও পুরনো প্রসঙ্গ টেনে পাকিস্তানকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। তাই ম্যাচের ফল ফলাফল যদি পাকিস্তানের প্রতিকূল হয়, তাহলে বসিরের দাবি কতটা মানবেন তাঁর দেশের ক্রিকেট ফ্যানরা, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।