রমজান মাসে তাড়াতাড়ি বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পাবেন সরকারি কর্মীরা। সম্প্রতি এই ঘোষণা করেছে তেলেঙ্গানা সরকার। কিন্তু ওই একই সুযোগ, নবরাত্রির সময় হিন্দুরা কেন পায় না? এই প্রশ্নে সরব বিজেপি নেতৃত্ব। ঠিক কী দাবি তাঁদের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রমজান মাসে বাড়তি সুবিধা পাবেন তেলেঙ্গানা সরকারের মুসলিম কর্মীরা। সে রাজ্যের নয়া সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, রমজানের সময় অর্থাৎ প্রায় একমাস, নির্ধারিত সময়ের আগেই বাড়ি ফেরার সুযোগ পাবেন মুসলিম কর্মীরা। এতেই তীব্র আপত্তি বিজেপি নেতৃত্বের। তাঁদের দাবি, একই সুবিধা কেন হিন্দুরা পায়না নবরাত্রি বা ওই ধরনের উৎসবের সময়?
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য অতি পবিত্র এই রমজান মাস। গোটা মাস জুড়ে কঠোর নিয়ম পালন করেন তাঁরা। নিয়ম অনুযায়ী, সূর্য ওঠার আগেই সারাদিনের জন্য যাবতীয় খাওয়াদাওয়া সেরে নিতে হয়। সূর্যাস্ত পর্যন্ত জলপান নিষিদ্ধ। বিকেলে নমাজ পাঠ সেরে খাওয়াদাওয়া। যেহেতু সারাদিনের উপবাস, তাই দিনের শেষে খাওয়াদাওয়াটা অনেকেই রাজকীয় ভাবে সারেন। এই সময় কেউ কেউ আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবদের নিমন্ত্রণ জানান। স্থানীয় ভাষায় একে বলে ইফতার। হিন্দুরাও তাতে অংশ নেন বইকী। উদ্দেশ্য সম্প্রীতির মিলনে ভিনধর্মের নিয়মের শরিক হওয়া। সেসব কথা মাথায় রেখেই, মুসলিম কর্মীদের জন্য নতুন নিয়ম এনেছে তেলেঙ্গানা সরকার। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, রমজান মাসে মুসলিম সরকারি কর্মীরা বিকেল চারটে বাজলেই বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। তারপর প্রার্থনা বা যাবতীয় কাজকর্ম সারতে পারেন তাঁরা। শুধুমাত্র মুসলিমরাই যে এই সুযোগ পাবেন, তা ওই নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানানো হয়েছে। আর তাতেই আপত্তি বিজেপি নেতৃত্বের।
ঘটনার কথা সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। তাঁর দাবি, এই ধরনের কোনও সুবিধা হিন্দুরা পান না। তাঁর প্রশ্ন, নবরাত্রির সময় হিন্দুরা উপোস থেকে কাজে যান, কেন সেইসময় আগেভাগে ছুটি দেওয়া হয় না হিন্দুদের? আসলে, তেলেঙ্গাণা সরকার এই ধরনের নিয়ম চালু করে ভোট ব্যাঙ্ক ভরাতে চাইছে বলেই দাবি বিজেপির। সে রাজ্যের মুসলিম জনসংখ্যা নেহাতই কম নয়। রমজান মাস প্রায় সকলেই নিষ্ঠাভরে পালন করেন তাঁরা। সুতরাং এই সময় সরকারের তরফে বাড়তি সুবিধা পেলে অনেকেই আবেগে ভাসবেন। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মুসলিম ভোট নিজেদের দলে টানতে পারবে তেলেঙ্গানার বর্তমান শাসকদল, এমনটাই মনে করছে বিজেপি। তাই এই পদক্ষেপ বা নির্দেশিকায় মানবতা, সম্প্রীতি জাতীয় কোনও ভালো দিক খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা। দাবি একটাই, নিজেদের আখের গোছাতে মুসলিমদের আবেগকে কাজে লাগাচ্ছে সে রাজ্যের শাসকদল। যদিও এই নিয়ে শাসকদলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। এর আগে একইরকম বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিতর্কে জড়িয়েছিল বিহার সরকার। সেবারও প্রতিবাদে সরব হয়েছিল গেরুয়া শিবির। এবার তেলেঙ্গানা সরকারের একই নিয়মে গর্জে উঠল বিজেপি নেতৃত্বই।