মাত্রা ছাড়িয়েছে গঙ্গার দূষণ। তাই নদীতে নেমে স্নানে নারাজ অনেকেই। অভিযোগ, বিরোধীরাও স্বাস্থ্যের দোহাই দিয়ে সেই দাবিতে সরব হচ্ছেন। এই আবহে গঙ্গাদূষণ নিয়ে মুখ খুললেন যোগী আদিত্যনাথ। নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে, কী বললেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বিশেষ মুহূর্তে গঙ্গাস্নান, তাতেই মিলবে পুণ্য। সেই টানে কুম্ভমেলায় হাজির ভক্তরা। সংখ্যায় অন্তত কয়েক কোটি। কিন্তু গঙ্গাস্নানে নানা বিপদের আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। গঙ্গাদূষণের প্রসঙ্গ টেনে নদীতে না নামার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকে। এই আবহে মুখ খুললেন যোগী আদিত্যনাথ। সাফ জানালেন, তিনি নিজে প্রতিবার কুম্ভমেলায় গঙ্গাস্নান করেন, এবং এর জন্য অসুস্থ হননি কখনও।
কুম্ভমেলা দেশের আবেগ। এমনটা স্রেফ গেরুয়া শিবির নয়, আরও অনেকেই মনে করেন। কারণ, এই মেলার সঙ্গে স্রেফ ধর্মীয় আবেগ জড়িয়ে নেই। একইসঙ্গে রয়েছে দেশের সংস্কৃতির মেলবন্ধন। নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান, মিলেমিশে এক হয় কুম্ভে। বর্তমানে এই মেলায় ধর্মের বিভেদ স্পষ্ট, তবে ইতিহাস বলে কুম্ভ সবকিছুর উর্ধ্বে। খোদ মুঘল সম্রাট আকবরের কথায়, কুম্ভ হল তীর্থের রাজা। আর এই সবকিছু যাকে কেন্দ্র করে, তা হল গঙ্গাস্নান। বিশেষ মুহূর্তে একইসঙ্গে গঙ্গায় ডুব দেবেন ভক্তরা। আর এতেই নাকি সমস্যা। গঙ্গাদূষণ এতটাই মাত্রা ছাড়িয়েছে, যে কুম্ভমেলায় একসঙ্গে এতজন সেখানে স্নান করা বিপজ্জনক। সকলেই অসুস্থ হতে পারেন, এমনটাই মনে করছেন কেউ কেউ। অভিযোগ, বিরোধীরা, বিশেষ করে সমাজবাদী পার্টি এই ধরনের বার্তা ছড়ানোয় মদত দিচ্ছে। কিন্তু এই তত্ত্ব মানতে নারাজ যোগী আদিত্যনাথ। কুম্ভমেলায় নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলে তিনি একহাত নিলেন বিরোধীদের।
যোগীর দাবি, প্রতিবার তিনি কুম্ভমেলায় গঙ্গাস্নান করেন। ধর্মীয় রীতি মেনে আঁজলা ভরে গঙ্গাজল পানও করেছেন। তাতে কখনও অসুস্থ হননি বলেই দাবি যোগী আদিত্যনাথের। শুধু তিনি একা নন, কুম্ভমেলায় কোটি কোটি ভক্ত স্নান করেন, এঁরাও অসুস্থ হন না। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পুরনো কথা মনে করালেন যোগী। ২০১৩ সালে এমনই এক কুম্ভে উপস্থিত হয়েও গঙ্গাস্নান করতে পারেননি মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী। কারণ সেই দূষণ। এবং তার মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে স্নান না করে ফিরে যেতে বাধ্য হন তিনি। একই ব্যক্তি ২০১৯ সালে ফের ভারতে আসেন। এবার গঙ্গাদর্শন করেন বারানসীতে। কিন্তু সেখান দূষণের চিহ্নমাত্র তিনি খুঁজে পাননি বলেই দাবি যোগী আদিত্যনাথের। বরং পরিবারের সঙ্গে আনন্দে গঙ্গাস্নান সেরেছিলেন মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী। আসলে, এই ঘটনার মাধ্যমেই আদিত্যনাথ বোঝাতে চেয়ছেন তাঁর আমলে গঙ্গাদূষণ নিয়ে কতটা সক্রিয়ভাবে কাজ হয়েছে। বাস্তবে কুম্ভের অবস্থা যাই হোক, তা মানতে নারাজ যোগী। বরং নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলে তিনি কার্যত প্রমাণ করে দিতে চেয়েছেন, কুম্ভমেলায় গঙ্গাস্নান করে অসুস্থ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।