বছর শেষ আর বছর শুরু।এই সময়য়ায় খাওয়া-দাওয়ায় যেন রাশ টানা যায় না। একটু বাড়াবাড়ি তো হয়েই যায়। কিন্তু শরীর তা মানবে কেন? অতএব রসনাফুর্তির পর এবার শরীরের দিকে মন দেওয়ার সময়। তা করবেন কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ক্যালেন্ডার সাম্রাজ্যের প্রাচীন প্রবাদ হল এই যে, একটা বছর মোটে এক বছরের বেশি টেকে না। অতএব ২০২৪ চলেই গেল। চলে এল ২০২৫। তা এই মাঝের সময়টায় যেন ফুরুফুরে হাওয়া বয়ে যায়। খানিক অবসর, খানিক সেলিব্রেশন। আর তার জেরে খাও-দাওয়ার নিয়মের শাসনও আর মানতে ইচ্ছে করে না। চিপ্স, কোল্ড ড্রিঙ্ক থেকে শুরু করে ফাস্ট ফুড- সব ধরনের খাবারেই মজে আছে বাঙালি। ওজন যে বাড়বে বা বাড়ছে, তা নিয়ে পরোয়াই নেই। তবে নতুন বছরে অতটা লাগামছাড়া হলেও চলে না। অতএব ফিরতে হবে নিয়মে।
নতুন বছরের রেজলিউশনে তাই ওজন নিয়ন্ত্রণও একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আর ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। অনেক সময় ওজন কমানোতে বাধা পড়ে সঠিক পরিকল্পনার অভাব। কখনও আবার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অবাস্তব প্রত্যাশা সব ঘুরে বেড়ায়। মাত্র কয়েকদিনেই কমবে ওজন- এরকম লোভনীয় প্রস্তাব দেখা যায়। তাতে উৎসাহিত হয়ে যায় মানুষ। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে আশানুযায়ী ফল না পেলে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় অনেকেরই। ব্যস তারপর আবার সেই পুরনো জীবনে ফেরত চলে আসা। কিন্তু এভাবে নিজের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে না তো কোথাও? এই কথাটা কিন্তু নতুন বছরের গোড়া থেকেই মাথায় রাখতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বছরের শুরু থেকেই যদি স্বাস্থ্যের প্রতি একটু যত্ন নেওয়া যায় তাহলে উপকার বাড়বে বই কমবে না। শুধু জীবনকে রাখতে হবে নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে। প্রথমেই দরকার সঠিক পরিকল্পনা। প্রত্যেক দিন নিজের জন্য একটু সময় বার করুন। ব্যায়ামের অভ্যাস করুন। খুব বেশি না হলেও, খানিকটা সময় কিন্তু ব্যায়ামের জন্য তুলে রাখতেই হবে। তবে যে কোনও ব্যায়াম নয়, এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জরুরি। সকলের শরীর এক রকম নয়। ফলত সবার জন্য যে এক রকম ব্যাম কার্যকরী হবে, তাও কিন্তু নয়। নিজের জন্য কোন ব্যায়াম জরুরি, তা জেনে নিয়ে নিয়মিত অভ্যাস করলে, ওজনও কমে আর রোগবালাই থেকে মুক্তিও ঘটে।
পাশাপাশি দরকার খবার নিয়ে চিন্তাভাবনা। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে বদলাতে হবে নিজের খাদ্য তালিকা বা ডায়েট চার্ট। দৈনন্দিন রুটিনে রাখতে হবে পুষ্টিকর খাদ্য। পরামর্শ মতো ব্যয়াম ও ডায়েট মেনে চললেই মাসখানেকের মধ্যে ফল পেয়ে যাবেন হাতেনাতে। বছরের শুরু থেকেই যদি নিজের স্বাস্থ্যের ব্যপারে একটু সচেতন হওয়া যায় তাহলে তাতে নিজেরই ভালো হবে।আর ওজন বাড়া নিয়ে বাড়তি স্ট্রেসও থাকবে না।
তবে, রুটিনের মধ্যে থাকাকালীন কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। যেমন বাইরের খাবারের প্রতি আসক্তি কমাতেই হবে। বছরশেষে এটা সেটা খাওয়া হয়ে গিয়েছে বলে, তাই-ই কিন্তু চালিয়ে যাওয়া যাবে না। এবং সঙ্গে জরুরি ধৈর্য। দ্রুত ওজন কমানোর চেষ্টা করবেন না ভুলেও। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। রক্তচাপ কম ও স্বাস্থ্যের অবনতি দুটোই হতে পারে। তাই সব কিছু বজায় রেখে চলাই মঙ্গল। বছরের শেষ দিন আনন্দে কাটিয়েছেন। খাওয়া-দাওয়া করেছেন মন খুলে। নতুন বছরটা আনন্দে কাটবে যদি শরীরচর্চার কথা মাথায় রাখেন। খাতায়-কলমে রেজলিউশন না নিলেও, শরীরের হেফাজত কিন্তু নিতে হবে আপনাকেই। সেক্ষেত্রে এটাই হতে পারে আপনার নিউ ইয়ার রেজলিউশন।