করোনাকালেও আন্দোলনের পথে থেকে সরে আসেনি শাহিনবাগ। গোটা দেশকে সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে ওঠার ডাক দিয়েছিলেন শাহিনবাগের আন্দোলনকারীরা। সেখান থেকেই এবার অন্য সুর শোনা যাবে। বিজেপির মুসলিম মহিলা সদস্যদের উদ্যোগ, আগামীতে এই শাহিনবাগ থেকেই নতুন কিছুর ডাক দেবেন তাঁরা। ঠিক কী বিষয়ে? আসুন শুনে নেওয় যাক।
সোফিয়া কুরেশি ‘কে’ সেই পরিচয় আলাদা করে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। দেশজুড়ে চর্চায় থাকা সেনানায়ক এই মুহূর্তে রাজনৈতিক প্রচারেরও অংশ হয়ে উঠেছেন। নেতাদের ভাষণে আগামী ভবিষ্যতের যে স্বপ্ন বোনা হচ্ছে, তাতে বারবার উঠে আসছে এই সোফিয়া কুরেশির নাম। এবার সেই সুরে সুর মেলাবেন বিজেপির মুসলিম মহিলা দলের সদস্যরাও (BJP Muslim Women)। বিষয়টা এমন কিছু অবাক করার মতো নয়। কিন্তু বিজেপির তরফে আরও কিছু তথ্য জানানো হয়েছে, যা অবাক করার মতোই। আর সেখানেই জড়িয়ে শাহিনবাগ!
নামটা খুব অচেনা নয়। অন্তত বিজেপি সমর্থকদের কাছে তো বটেই। সিএএ বিরোধী আন্দোলনের সময় এই জায়গা গোটা দেশের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। এমনকি করোনাকালেও আন্দোলন থামেনি। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে দেশকে বিদ্রোহের পথ দেখিয়েছে শাহিনবাগ। মনে হতেই পারে, গণতন্ত্রে কার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ? অবশ্যই রাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া নিয়মের বিরুদ্ধে। এরপর নদীতে অনেক জল গড়িয়েছে। সিএএ আন্দোলন অন্য রূপ নিয়েছে। তবে শাহিনবাগের সঙ্গে আন্দোলনের সম্পর্কে ঘোচেনি। তা ফের স্পষ্ট হয়েছিল কৃষক আন্দোলনের সময়। যদিও এবার শাহিনবাগ নিয়ে চর্চার কারণটা আলাদা। যে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এতদিন আন্দোলন দেখিয়েছে শাহিনবাগ, সেখান থেকেই নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখতে চাইছে বিজেপির মুসলিম মহিলা মোর্চা।
মোদি জমানার ১১ বছর পূর্তি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি আয়োজন করেছে গেরুয়া শিবির। তাতে আলাদাভাবে মহিলাদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামীতে মহিলারাও যেন এনসিসি বা অগ্নিবীর প্রকল্পে যোগ দেন, সেই ভাবনায় বিশেষ পদক্ষেপ করতে চলেছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। গ্রামেগঞ্জে জমায়েত করে বোঝানো হচ্ছে মহিলাদের। বাদ নন মুসলিম মহিলারাও। সেক্ষেত্রে কর্নেল সোফিয়ার উদাহরণ সামনে এনে তাঁদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। ছোট ছোট লিফলেট বিলি করা হচ্ছে মহিলাদের মধ্যে। সেখানে বিভিন্ন তথ্য দেওয়া রয়েছে, যা সহজে বুঝিয়ে দেবে কীভাবে অগ্নিবীরের অংশ হওয়া যায়।
আসলে, অপারেশন সিঁদুর (Operation Sindoor) স্রেফ একটা সেনা অভিযান নয়। বিজেপির তরফে বারবার বলা হচ্ছে, এই অভিযান চলছে চলবে। তার অংশ হিসেবেই এই ধরনের কর্মসূচি। একথা অস্বীকারের উপায় নেই, আজও এদেশে নারীরা অত্যাচারের শিকার হন। বাইরে তো বটেই, ঘরের মানুষের কাছেও। প্রতিবাদ না করলে মুক্তি নেই। সবসময় যে শক্তি দিয়েই প্রতিবাদ এমন নয়। মনের সাহসটাই আসল। সেই সাহস যোগাতে পারে সঠিক প্রশিক্ষণ। এনসিসি বা অগ্নিবীরের মতো প্রকল্প এক্ষেত্রে বেশ কার্যকর হতে পারে। আর তাই বিজেপির তরফে এমন ব্যবস্থা। শাহিনবাগের বিভিন্ন অঞ্চলে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন মহিলা মোর্চার সদস্যরা। আরও অনেক জায়গাতেই এমনটা করা হচ্ছে, তবে শাহিনবাগের নামটা চর্চায় উঠে আছে, যোগ্য কারণেই।