পুরনো ভুল নতুন করে নয়। সবকিছু ভালো হোক, এই প্রার্থনায় বছর শুরু করতে চান সকলেই। তবে প্রার্থনার ধরন রয়েছে, তা জানা থাকলে সুবিধা তো বটেই। কজ হতে পারে বিশেষ কিছু মন্ত্রে। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পুজোর আসনে বসে মন্ত্রপাঠ করেন পুরোহিত। দেবপূজার নিয়ম এমনটাই। কিন্তু মন্ত্রপাঠের জন্য যে সবসময় পুজোর আসনে বসতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা নেই। বরং কিছু কিছু মন্ত্র চাইলেই যে কেউ পাঠ করতে পারেন। সঠিকভাবে সেই মন্ত্র পাঠ করলে জীবনে বদল আসতে বাধ্য!
একসময় মন্ত্রবলে অসাধ্য সাধন করতে জানতেন মুনি ঋষিরা। পুরানে সেই কাহিনি রয়েছে। নিয়ম মেনে মন্ত্র পড়লে অলৌকিক কিছুও হতেই পারে। তবে সেসব সাধারনের ক্ষমতার বাইরে। তার জন্য সঠিক জ্ঞান প্রয়োজন। শাস্ত্র না জেনে মন্ত্রপাঠ অন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। তবে কিছু কিছু মন্ত্র এমন, যা পাঠ করার জন্য আলাদাভাবে শাস্ত্রের বিশেষ জ্ঞান প্রয়োজন নেই। বরং মন থেকে আরাধ্যকে স্মরণ করে সেই মন্ত্র পাঠ করা যেতেই পারে। এই তালিকায় এমন কিছু মন্ত্র রয়েছে, যা জীবনে বড় বদল আনতে পারে। নতুন বছরে যে নতুন উদ্যমের আশা রাখেন সকলেই, সেখানে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে এইসব মন্ত্র।
তালিকার শুরুতেই হয়েছে সবথেকে প্রচলিত শিবের মন্ত্রটি, ‘ওম নমঃ শিবায়’। শাস্ত্রে একে পঞ্চাক্ষর মন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মহাদেবের পুজো এই মন্ত্র ছাড়া অসম্ভব। অন্যান্য দেবপূজাতেও দেবাদিদেবকে স্মরণ করে এই মন্ত্র উচ্চারন করতেই হয়। শিবের বার সোমবার, সুতরাং এই দিনে শিবের মন্ত্র জপ করলে তুষ্ট হন মহাদেব। সামান্য বেলপাতা আর গঙ্গাজলেই তুষ্ট ভোলানাথ। তাই যে কোনও শিবমন্দিরে এই উপাচারে দেবাদিদেবের পুজো করলে বিশেষ ফল মেলে। বাড়িতেও একইভাবে শিবলিঙ্গে জল ঢালা যায়। স্রেফ ওম নমঃ শিবায় মন্ত্র জপ করলেই হল। পরের মন্ত্রটিও অজানা নয়, গায়ত্রী মন্ত্র।
‘ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ, তৎ সবিতুর্বরেণ্যং,
ভর্গো দেবস্য ধীমহি, ধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ।’
সম্পূর্ণ মন্ত্রটি সঠিক ভাবে জপ করলে বিশেষ উপকার মিলবেই। গায়ত্রী জপের বিশেষ নিয়মও রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, এই মন্ত্র এতটাই শক্তিশালী যে স্রেফ কানে শুনলেই কাজ হয়। এমনটাও অনেকে বলেন গায়ত্রী জপের অধিকার সকলের নেই, স্রেফ ব্রাহ্মণরাই এই মন্ত্র জপ করতে পারেন। কিন্তু সেই নিয়ম অনেকেই মানেন না। পরের মন্ত্রটি দেবী দুর্গার। দেবী আদ্যাশক্তি মহামায়ার প্রণাম মন্ত্রটি এক্ষেত্রে জপ করা যেতে পারে। ‘ওম দুং দুর্গাঐ নমঃ’, এই মন্ত্র বিশেষ কাজে দেবে আগামী বছরে। মনে ভক্তিভাব রেখে দুর্গানাম জপে যে কোনও বিপদ থেকে উদ্ধার মিলতে পারে। পরের মন্ত্রটি শিবের। তবে এক্ষেত্রে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের কথা বলা হয়েছে। এমনিতে এই মন্ত্র জীবনদায়ী। বলা হয়, নিয়মিত কেউ এই মন্ত্র জপ করলে আয়ু বাড়ে। নতুন বছরেও একইভাবে ফলদায়ী হবে এই মন্ত্র। তালিকার শেষ মন্ত্রটি শান্তির বার্তাবহ। স্রেফ জপ করতে হবে, ‘ওম শান্তি শান্তি শান্তি’। এই মন্ত্র অস্থির পরিস্থিতিতে মনকে শান্ত করতে সাহায্য করবে। কখনও সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা হলে কাজে দেবে এই মন্ত্র। তবে ঈশ্বরে বিশ্বাস থাকলে যে কোনও বাধা কেটে যেতে পারে। তার সঙ্গে নিয়মিত মন্ত্রপাঠ বিশেষ উপযোগী হয়ে উঠতে পারে।