আসছে নিউ ইয়ার। চারিদিকে হইচই। এই সময়টায় কেউ পিকনিকে কেউ বা লং ড্রাইভে। আর সেই সব খবর উঠে আসছে সোশ্যাল মিডিয়ার ফিডে। যত স্ক্রল করছেন, ততই FOMO ঘিরে ধরছে আপনাকে! এই সিজনাল ‘ফোমো’ থেকে বাঁচার উপায় কি?
আসছে নিউ ইয়ার। চারিদিকে হইচই। এই সময়টায় কেউ পিকনিকে, তো কেউ লং ড্রাইভে। কেউ কনসার্টে তো কেউ আবার জমিয়ে পার্টি মোডে। আর সেই সব খবরাখবর মুহুর্মুহু ছবি, ভিডিও, রিল হয়ে উঠে আসছে সোশ্যাল মিডিয়ার ফিডে। এদিকে কাজের খাতিরে কিংবা অন্য কোনও কারণে আপনি হয়তো এখুনি আনন্দে মেতে উঠতে পারছেন না। আর তাই যত স্ক্রল করছেন, যত আশেপাশের মানুষের আনন্দের মুহূর্ত দেখছেন, ততই FOMO ঘিরে ধরছে আপনাকে! তা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এই ডিজিটাল যুগে ‘ফোমো’ আর অচেনাও কিছু নয়। তবে, ঠান্ডা-গরমে কিংবা অ্যাডিনো ভাইরাসের দাপটের মাঝে নিজেকে সুস্থ রাখতে সতর্ক থাকতে হয়, ঠিক তেমনই এই সিজনাল ‘ফোমো’ থেকে বাঁচতে সতর্ক থাকাই বাঞ্ছনীয়।
তা কী করলে ফোমো-র থাবা এড়ানো সম্ভব?
প্রথম কথা, ফোমো-র উৎসটিকে ভালোভাবে চিনে নিতে হবে। যে সোশ্যাল মিডিয়ার ফিড দেখে, আপনার মনে হচ্ছে যে জীবনের মূলস্রোত থেকে আপনি হারিয়ে যাচ্ছেন, অর্থাৎ ফোমো-য় আক্রান্ত হচ্ছেন, সেই সোশ্যাল মিডিয়া কিন্তু জীবনের দৈনন্দিন খুঁটিনাটি দেখায় না। মানুষ তাঁদের ভালো বা নির্বাচিত মুহূর্তগুলোই সেখানে শেয়ার করেন, তুলে ধরেন। একটি ক্রিকেট ম্যাচের নিরিখে দেখলে, সোশ্যাল মিডিয়া আসলে জীবনের হাইলাইট। তা সম্পূর্ণ জীবন নয়। এই ট্রিগার পয়েন্টটি মাথায় রাখলেই ফোমো কাটানো বেশ সহজ হয়ে যায়।
অতএব, প্রথমেই নিজের ফোকাস ঠিক রাখুন। আশেপাশে অনেকেই হয়তো নানা কাজ করছে। কিন্তু সেই কাজটিই কি আপনার প্রায়োরিটি? নিজেকে প্রশ্ন করেই এর উত্তর খুঁজে বের করুন। কেউ দামি জিনিস ব্যবহার করছে, কিংবা দারুণ কোথাও বেড়াতে গেছেন দেখেই অযথা অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার দরকার নেই। নিজের কাজ, নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী বহু খুশির উপকরণ নিজের আশেপাশেই পাওয়া যায়। তাই অন্যকে বা অন্যের জীবনের হাইলাইট দেখে বিভ্রান্ত হওয়ার দরকার নেই। নিজের ফোকাস আর প্রায়োরিটি জানাই জরুরি।
কিন্তু তা সত্ত্বেও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে ঘুরতে খানিক মনখারাপ চেপে ধরে? তাহলে নিজের ডিজিটাল লাইফে রাশ টানুন। হাবিজাবি জিনিস না দেখে, বরং পছন্দের সেই সব জিনিস বেছে নিন, যা আপনাকে পজিটিভ রাখে। প্রাণিত করে। সোশ্যাল মিডিয়া খারাপ নয়। তবে সেখানকার সব জিনিস যে সবার জন্য জরুরি, তা নয়। কোনও কিছুর ক্ষেত্রেই এই সর্বজনগ্রাহ্য নিয়ম খাটে না, সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রেও তাই-ই। ফলত, কী দেখছেন আর কেন দেখছেন, তা মাথায় রাখুন।
অনলাইনে সারক্ষণ না-থেকে বরং অফলাইন জীবনের প্রতি গুরুত্ব দিন। যে সম্পর্ক বা বন্ধুত্ব, যে পরিবেশের মধ্যে থাকলে আপনি ভালো থাকেন, খুশি থাকেন, আনন্দে থাকেন, সেখানেই থাকার চেষ্টা করুন।
নিজের যত্ন নিন। ফোমো-র কারণে স্ট্রেস, আর তা থেকেই নানারকম আধিব্যাধি। তাই সাধারণ কিছু ব্যায়াম করতে পারেন, যাতে এই চাপ কমে যায়। আপনি নিজের কাজ আর জীবনের প্রতি যে পদ্ধতিতে বেশি মনোযোগী হতে পারেন, সেদিকেই নজর রাখুন।
আর সর্বোপরি অন্যের সঙ্গে তুলনা বন্ধ করুন। আপনার জীবন একান্ত আপনারই। দু’জন মানুষের জীবন এক রকম হয় না। হতে পারে না। ফলত কে কীভাবে জীবন কাটাচ্ছেন, তা ভাবা থেকে বিরত থাকাই ভালো।
নতুন বছর আবার আসবে। একই রকম হইচই আনন্দ হবে। ফলত, একবার তা হচ্ছে না বলে মুখ ভার করে বসে থাকার কিছু নেই। ফোমো-তে আক্রান্ত হওয়ারও দরকার নেই। বরং ফোমো-কে দূরে তাড়ানোই হতে পারে আপনার নিউ ইয়ার রেজলিউশন।