প্রেক্ষাগৃহে পদপিষ্ট মহিলা অনুরাগীর মৃত্যুর দায়ে গ্রেপ্তার হন আল্লু অর্জুন। যদিও একদিনেই জামিনে মুক্তি পান দক্ষিণের সুপারস্টার। তবে এই ঘটনায় শুরু হয় জোর শোরগোল। আল্লুর গ্রেফতারি সমর্থন করেননি অনেকেই। সম্প্রতি এর সঙ্গে কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হওয়াকে জুড়ে প্রশ্ন তুললেন পরিচালক রামগোপাল ভার্মা। ঠিক কী বলছেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভোট হোক বা মন্দির উদ্বোধন, এ দেশে সবই উৎসব! বিপুল আয়োজন, ব্যাপক ভিড়, এসব সাধারণ বিষয়। তাই বলে ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে কারও মৃত্যু মোটেও সাধারণ নয়! ঘটনা এড়াতে তৎপর থাকে প্রশাসন। তবু মৃত্যু আটকানো যাচ্ছে কই? সম্প্রতি, আল্লু অর্জুনের সিনেমার প্রিমিয়ারে গিয়ে মহিলা পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা সেই প্রশ্নই উসকে দিল। একইসঙ্গে ঘটনার দায়ে তারকা আল্লুর গ্রেফতার, জন্ম দিল নতুন বিতর্কের।
দেশজুড়ে মুক্তি পেয়েছে ‘পুষ্পা ২’। আল্লু অর্জুনের এই সিনেমা ইতিমধ্যেই বহু রেকর্ড ভেঙেছে। সবই সিনেমার ব্যবসাকে কেন্দ্র করে। লাভের মুখ দেখে খুশি সিনেমার নির্মাতারা। তবে সিনেমাকে কেন্দ্র করেই আইনি বিপাকে পড়তে হয়েছে খোদ আল্লু-কে। সিনেমায় দেখানো কোনও দৃশ্য নিয়ে বিতর্ক হয়নি, বরং দক্ষিণী সুপারস্টারের ঘাড়ে এসে চেপেছে মৃত্যুর দায়। আসলে, সিনেমার প্রিমিয়ারে আল্লু অর্জুনকে দেখতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এই মহিলা অনুরাগীর। আল্লুর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সেই মামলাতেই গ্রেফতার হতে হয় পুষ্পাকে। জামিনে মুক্তি মিললেও, একরাত হাজতবাস করতে হয়েছে তাঁকে। এতেই চটে লাল সিনেমহল। আল্লু অনুরাগীরা তো বটেই, দক্ষিণের অন্যান্য তারকারাও নিন্দায় সরব হয়েছেন। এই প্রসঙ্গেই পরিচালক রামগোপাল ভার্মার প্রশ্ন, কুম্ভমেলায় কেউ পদপিষ্ট হলে কি, ঈশ্বরকে গ্রেফতার করা হবে? আসলে, এই ধরনের ঘটনার দায় যে কারও একার হতে পারে না, সেই বিষয়টাকেই বোঝাতে চেয়েছেন পরিচালক। নিজের কথায় রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনেছেন রাম গোপাল। সরাসরি বলেছেন, নির্বাচনী প্রচারের মিছিলে পদপিষ্ট হয়ে কেউ মারা গেলে কি রাজনৈতিক নেতাদেরও জেল হবে? তাঁর দাবি, অনুষ্ঠানের আয়োজক এবং সেখানকার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষী বা পুলিশের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণ। কোনওভাবেই ফিল্মস্টার বা জননেতা এইধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন রামগোপাল।
তাঁর এই মন্তব্য সমর্থন করেছে নেটদুনিয়াও। বিশেষ করে, ঈশ্বরের প্রসঙ্গ টেনে পরিচালক যা বলেছেন তা অনেকেরই নজর কেড়েছে। আসলে, এ দেশে ধর্মীয় উৎসবের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। উত্তর থেকে দক্ষিণ বছরের বিভিন্ন সময় নানা উৎসবে মেতে ওঠে। আর মেতে ওঠার মানেই ভিড়। অনেকেরই ধারণা যত বেশি ভিড়, তত জনপ্রিয় সেই উৎসব। রামগোপাল যে কুম্ভমেলার কথা বলেছেন, সেখানেও কার্যত এই টানেই ছুটে যান লাখ লাখ ভক্ত। পুণ্যলাভ আদৌ হবে কি না, তা মনের বিশ্বাস, তবে ভিড়ে সামিল হওয়া মানে কিছু একটা অর্জন করে ফেলা, এই ধারণা অনেকেরই। তাতে কারও মৃত্যু হলেও কুছ পরোয়া নেই! এমন ঘটনা যে এর আগে ঘটেনি তাও নয়। উত্তরপ্রদেশে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় কয়েকশো ভক্তের। সেই নিয়ে জোর চর্চা হয়েছিল, তবে আখেরে লাভের লাভ হয়নি। দোষ কার, তা তর্কের বিষয়। তবে দোষ কারও একার নয়, তা বলাই যায়। এক্ষেত্রেও তাই আল্লু সমর্থকদের মুখে সেই কথা শোনা যাচ্ছে বারবার।