‘ও পুলিশ, পুলিশ!’, বলে একরত্তি শিশুকে পুলিশের পিছু ধাওয়া করতে দেখা গেছিলো রুপোলী পর্দায়। সেই ঘটনারই প্রতিফলন যেন এবার দেখা গেল উত্তপ্রদেশের একটি স্কুলে। কী হল তারপর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
হাতছাড়া হয়নি সোনাদানা, টাকা-পয়সা, জায়গা-জমি কিছুই। তবে যা হাতছাড়া হয়েছে, মালিকের কাছে সে জিনিসটি এসবের চেয়েও মূল্যবান। তাই আগুপিছু কিছু চিন্তা না করে সটান পুলিশের কাছে হাজির খুদে। অভিযোগ খুব স্পষ্ট, তার পেনসিল কাটার কলটি গায়েব করেছে তারই সহপাঠী বন্ধু। সেটিকে উদ্ধার করতে পারে কে? কে আবার, পুলিশকেই নামতে হবে মাঠে! অভিযোগ তো করা হল, কিন্তু পুলিশ কি আদৌ কানে নিল তার বক্তব্য! তাহলে আসুন, বলব সেই গল্পই।
শুনে গল্পের মতো মনে হলেও বিষয়টি কিন্তু আদৌ গালগল্প নয়। নিজের জিনিস খোয়া গেছে, আর তাতে পুলিশই হতে পারে একমাত্র আশ্রয়- এই সহজ ধারণাই ছিল খুদের। ভাবুন তো, বিচারব্যবস্থার ঢিলেমি, প্রশাসনের হাজাররকমের মারপ্যাঁচে আমরা বহুসময়েই আস্থা হারিয়ে বসি পুলিশি ব্যবস্থার ওপর। কিন্তু পুলিশ কি সত্যিই সাধারণ মানুষের অভিযোগের বিষয়ে উদাসীন! সেই ধারণার একেবারে উলটো এক প্রতিক্রিয়াই কিন্তু দেখা গিয়েছে এখানে।
আরও শুনুন: ব্রেন গিয়েছে চুরি, তাও আবার আইনস্টাইনের! কে সেই কুখ্যাত চোর?
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। উত্তরপ্রদেশের হরদোইয়ের একটি স্কুলে পড়ে ওই খুদে। আর সে রাজ্যেই পুলিশের তরফ থেকে সম্প্রতি একটি অভিযান শুরু হয়েছিল। পুলিশকর্মীরা স্কুলে স্কুলে বসিয়েছিলেন এক-একটি গোলাপি বাক্স, যেখানে পড়ুয়ারা প্রয়োজনে অভিযোগ জানাতে পারে। খুদে বলে কি তাদের নালিশ থাকতে নেই! কিন্তু চাইলেই কি সবাই থানায় ছুটে যেতে পারে! তার উপর পুলিশ মানেই ভয়, ছোটবেলা থেকে এমনই তো ভাবতে শিখি আমরা। তাই খুদেদের সাহায্য করার জন্য এখানে পুলিশই ভেবেছে তাদের কাছে পৌঁছনোর কথা। আর সেই বাক্স কাজে লাগিয়েই নিজের শার্পনার চুরির কথাটি পুলিশের কানে তুলে দিয়েছে এক খুদে। তার সন্দেহ, সহপাঠীর কাছেই মিলতে পারে হারানো কল। তবে সবচেয়ে মজার কথাটি কী জানেন? অভিযোগ পেয়ে পুলিশও কিন্তু মোটেই সময় নষ্ট করেনি। সঙ্গে সঙ্গেই গিয়ে সেই সহপাঠী পড়ুয়ার কাছ থেকে কলটি উদ্ধার করে ফিরিয়ে দিয়েছে খুদে ছাত্রের হাতে।
‘শত্রু’ ছবিতে একরত্তি ছেলে বারবার পুলিশের কাছে ছুটে যেত হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুঁজে পেতে। কোনও কিছু হারিয়ে গেলে পুলিশের কাছেই যেতে হবে, বয়স কম হলেও খুদেরা এ কথা জানে বইকি। আর সে কথাই মনে রেখেছে উত্তরপ্রদেশের ওই খুদেও। এই পুরো বিষয়টি যোগীরাজ্যের পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকেই ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। স্কুলের বাচ্চাদের মতো আমজনতার কাছেও এমন সুযোগ এলে মন্দ হয় না, এ খবর শুনে বলছেন নেটিজেনরা।