১ টা সেলফি ১০০ টাকা। এই শর্তেই তাঁর সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ দিচ্ছেন রাশিয়ান সুন্দরী। তাতে রোজগার হচ্ছে ভালোই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যার সঙ্গে একটা ছবি তোলার জন্য টাকা দিতেও রাজি সবাই, তাঁর বিশেষত্ব কী?
সেলফি তোলার জন্য টাকা লাগবে। ১০০ টাকায় মিলবে মাত্র ১ টা। এই শর্তেই ছবি তোলার সুযোগ দিচ্ছেন রাশিয়ান সুন্দরী। ভেবেছিলেন এই শর্ত মেনে আশেপাশে কেউ ঘেঁষবে না! কিন্তু সেগুড়ে বালি! টাকার অঙ্ক যাই হোক, বিদেশিনীর সঙ্গে একটা ছবি তুলতে লাইনে দাঁড়াতে রাজি অনেকেই!
সেলফি। বর্তমান সময়ের এক সংক্রামক ব্যধিই বটে। ক্ষতির আশঙ্কা প্রবল। স্রেফ নিজের নয়, অন্যেরও। তবু কেউ রোগ্মুক্ত হতে পারছেন না। কারণ ডাক্তার-বদ্যি থেকে খেলোয়াড়, পড়ুয়া, সবাই মজে সেলফিতে। জন্মদিনের অনুষ্ঠান হোক বা সোলো ট্রিপ, সেলফি না তুললে কিছুই সফল হয় না। তরুণ-তুর্কি তো বটেই, বয়স্করাও সেলফিজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন সহজেই। সবটাই যে নেগেটিভিটি তা নয়, বরং হাসিমুখের সেলফিতে ধরা থাকে অনেক আনন্দের মুহূর্ত। সমস্যাটা হল যদি ওই সেলফি তোলাই সবকিছু হয়ে ওঠে। কোথায় গিয়ে সেই জায়গায় সৌন্দর্য ভুলে কেউ যদি সেলফিতে মন দেন, তাহলে অনেক কিছুই ফাঁকি থেকে যায়। সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যুর মুখে পড়েছেন এমন ঘটনাও হয়েছে বহু। মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটেছে বহুবার। তবু বদলায়নি পরিস্থিতি। যদিও এসব ক্ষেত্রে নিজের ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। অন্য কেউ খুব একটা সমস্যায় পড়েন না। তাই বলে সেলফি মানেই যে সবসময় নিজেকে কেন্দ্র করে তা নয়। জোর করে অন্য কারও সঙ্গে সেলফি তুলতে চাওয়াও বড় সমস্যার কারণ হতে পারে। রাস্তাঘাটে কিংবা শপিং মলে কোনও সেলিব্রিটির দেখা পেলে অনেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েন সেলফি তোলার জন্য। সেই ব্যক্তি পছন্দ করছেন না জেনেও, অনুমতির তোয়াক্কা না করে ছবি তুলে নেন। তারপর সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় দিয়ে, সে কী বড়াই!
এক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই হয়েছে। তবে সেলেব্রিটি নয়, এক বিদেশিনীর সঙ্গে ছবি তোলার জন্য ভিড় জমিয়েছিলেন সবাই। যার কথা বলছি তিনি এক রাশিয়ান সুন্দরী। ভারতে এসেছিলেন দেশটাকে ঘুরে দেখার জন্য। কিন্তু এখানে এসে দেখলেন তিনি নিজেই যেন দর্শনীয় বস্তু! যেখানে যাচ্ছেন, কেউ না কেউ এসে বলছে, ‘ম্যাডাম একটা সেলফি’। প্রথম দিকে ব্যাপারটা রীতিমতো ভালো লাগলেও একটা সময়ের পর রীতিমতো বিরক্ত হয়ে পড়েন ওই বিদেশিনী। এইসময় বুদ্ধি করে একটা উপায় খুঁজে বার করেন তিনি। একটা বোর্ডে বড় বড় অক্ষরে লিখে ফেলেন, ‘একটা সেলফি একশো টাকা’। অর্থাৎ তাঁর সঙ্গে একটা ছবি তুলতে ১০০ টাকা দিতে হবে। ভেবেছিলেন এতে সমস্যা মিটবে। টাকা দিয়ে কে আর ছবি তুলতে আসবে! কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক উলটোটা। টাকা হাতে নিয়েই তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য লাইন দিচ্ছেন অনেকে। যেন বিরাট মাপের কোনও সেলিব্রিটি এসেছেন। এবার অবশ্য বিরক্ত হননি ওই তরুণী। হাসিমুখে টাকা নিয়ে সেলফি তুলেছেন। তাতে রথ দেখা কলা বেচা দুইই হয়েছে তাঁর। নিজের এই অভিজ্ঞতার কথা ভিডিও বানিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন তিনি। তাতে নেটিজেনরাও বেশ অবাক! কেউ কেউ এই টাকার বিনিময়ে সেলফির ব্যাপারটা খানিক বাঁকা চোখে দেখছে। তবে অনেকেই তাঁর বুদ্ধির প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ এমনটাও বলেছেন, যে ওই টাকার অঙ্ক যদি ১০০০ হত, তাহলেও অনেকেই ছবি তোলার জন্য ভিড় জমাত। সবমিলিয়ে বিষয়টা বেশ চর্চায় রয়েছে সোশাল দুনিয়ার।