রাষ্ট্রপতি থেকে নবাব, একডাকে সবাই চেনে। কারণ এদের তৈরি পোশাকই সকলের প্রথম পছন্দ। প্রণব মুখোপাধ্যায় থেকে রামনাথ কোবিন্দ, সকলেই এখানকার তৈরি পোশাক পরেছেন। অভিজাত মহলেও বেশ কদর রয়েছে। কোন দোকানের কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পোশাকের দোকান। তবে যে সে এখানকার পোশাক পরেন না। গ্রাহকের তালিকায় রয়েছে দেশের সাংবিধানিক প্রধান থেকে ধনী ব্যবসায়ী। বিশেষ ধরনের শেরওয়ানি তৈরি করেই সকলের মন জিতেছে এই দোকান। আর সেই সুনাম এখনও একইভাবে বর্তমান।
আরও শুনুন:
কপালে কী লেখা আছে বলে দেবে কপালই! কোন উপায়ে খোঁজ মিলবে ভবিষ্যতের?
কথা বলছি, মেহেদি হাসান টেলরস সম্পর্কে। আলিগড়ের এই দোকান স্বাধীনতা আমলের। বংশ পরম্পরায় দোকানের দায়িত্ব সামলে আসছেন হাসান পরিবারের সদস্যরা। মূলত শেরওয়ানি তৈরি হয় এই দোকানে। তবে তার একটা বিশেষ ধরণ রয়েছে। এবং সেই ধরণ আর কোথাও চট করে দেখা যায় না। আলিগড়ের তো বটেই, এই দোকানে কেনাকাটা সারতে আসেন অন্যান্য রাজ্যের মানুষ। বলিউডের নামজাদা সেলিব্রিটিরাও তলিকায় থাকেন। অবশ্য এতেও তেমন অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ এ দেশে এমন দোকান আরও অনেকই রয়েছে যেখান থেকে সেলিব্রিটিরা কেঙ্কাটা সারেন। তবে মেহেদি হাসানের দোকান অন্য একটি কারণে বিশেষ। এখান থেকেই দেশের রাষ্ট্রপতির পোশাক যায়। প্রণব মুখার্জি থেকে এপিজে আবদুল কালাম, সকলেই এই দোকানের তৈরি পোশাক পরেছেন। দোকানে গেলেই দেখা যাবে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জাকির হোসেনের ছবি। এই দোকানের নিয়মিত গ্রাহক ছিলেন তিনিও। রাজনৈতিক জীবনে এখান থেকে ১৭৫ টি শেরওয়ানি তৈরি ক্রান জাকির। যা আজও দোকানের কর্মচারীরা গর্ব করে বলেন। শুধু সরকার নয়, বিরোধী দলের নেতারাও এখানকার পোশাক পছন্দ করেন। তালিকায় উপরের দিকে রয়েছেন রাহুল গান্ধী। এদিকে, নবারের বাড়িতেও পোশাক যায় এই দোকান থেকে। খোদ টাইগার পতৌদি নিজের পছন্দের শেরওয়ানি এখান থেকেই বানিয়ে নিতেন। শেফ আলি খানও বাবার মতো এই দোকানের নিয়মিত গ্রাহক হয়েছেন। এছাড়া সিনেমার পোশাক তো রয়েছেই।
আরও শুনুন:
প্রতিবাদী অভিনেতা কিংবা সর্বস্বত্যাগী আধ্যাত্মিক বক্তা, নেটিজেনের চাহিদাতেই ভ্রান্তিবিলাস?
প্রতি বছর বিয়ের মরশুমে এই দোকানের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। অনেকেরই স্বপ্ন থাকে মেহেদি হাসানের তৈরি শেরওয়ানি পরে বিয়ে করতে যাবেন। আসলে বাঙালিদের মধ্যে না হলেও, অবাঙালি সমাজে এই পোশাক পরে বিয়ে করতে যাওয়ার চল রয়েছে। মুসলিম সমাজেও ব্যাপারটা একই। তাই বিশেষ শেরওয়ানি পরার কথা ভাবেন অনেকেই। যদিও এতদিন ধরে একইভাবে সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাওয়া সহজ নয়। কাজের মান ধরে রাখাও কঠিন। তবে সবদিকে নজর রেখে সেই কাজ করে চলেছেন হাসান পরিবারের সদস্যরা। বর্তমানে আরও অনেক কর্মচারী নিযুক্ত হয়েছেন দোকানে। অতিরিক্ত চাহিদা সামলাতে আর কোনও উপায়ও ছিল না। তবে কোনওভাবেই যেন কাজের মান না পরে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখেন মালিক পক্ষ। আর তাতেই সুনামের সঙ্গে সকলের মন যুগিয়ে পোশাক বানিয়ে চলেছে এই দোকান।