সুখের সংসার। তাতে মন নেই মহিলার। মন পড়ে সাগরের ওপারে। ভালোবাসার টানেই স্বামী-সন্তান ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিলেন ব্রাজিলের মহিলা। হাত ধরলেন এক ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষীর। কীভাবে হল সবটা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভালোবাসার টানে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে এসেছিলেন সীমা। সেই নিয়ে বিস্তর হইচই চলেছিল। এখনও মাঝেমধ্যে নেটদুনিয়ায় সীমার খবর ভেসে ওঠে। ঠিক যেন সেই কাণ্ডই ঘটালেন ব্রাজিলের এক মহিলা। তফাৎ বলতে একটাই, সীমার মতো বেআইনি পথে ইনি ভারতে আসেননি।
ভালোবাসার টান উপেক্ষা করা কঠিন। স্বয়ং রাধা-কৃষ্ণই পারেননি। এঁরা তো সাধারণ মানুষ! তাই সুদূর ব্রাজিল থেকে ভারতে উড়ে এসেছেন রোজি। বছর ৫১-র এই মহিলার সঙ্গে ভারতের কোনও যোগ ছিল না। সোশাল মিডিয়ায় আলাপ হয়েছিল পবন গোয়েলের সঙ্গে। ইনি পেশায় নিরাপত্তারক্ষী। বাড়ি গুজরাটে। বয়সে রোজির তুলনায় অনেকটাই ছোট। এমনকি ইংরাজিটাও ঠিকমতো জানেন না। অথচ দুজনের কী ভালো বন্ধুত্ব হয়েছিল মাত্র একবছরে। প্রেমে পরিণত হতেও বেশি সময় লাগেনি। কীভাবে, তার উত্তর নেই। প্রেম হয়েছে এটাই আসল কথা। আর সেই টানেই ভারতে আসার তোড়জোড় শুরু করেন রোজি। প্রেমিক পবনের সঙ্গে স্রেফ দেখা করতে নয়, বরং বিয়ে করে পাকাপাকিভাবে সংসার করবেন, এই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। সময়মতো ব্যবস্থা হল সবকিছুর। কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। রোজি বিবাহিত। সন্তানও রয়েছে। তাঁর বয়স ৩২ বছর। বলাই বাহুল্য, দীর্ঘদিনের সংসার তাঁর। সেসব ছেড়ে ভারতে আসবেন একজন নিরাপত্তারক্ষীর টানে?
শুনতে অবাক লাগলেও, রোজি এমনটাই করেছেন। নিয়ম মেনে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ করেছেন। লুকোননি কিছুই। প্রেম করা অন্যায় নয়, এই ধারণাতেই সবাইকে সত্যি বলে দেশ ছেড়েছেন রোজি। একবারও সামনে থেকে না দেখা ভিনদেশী যুবকের জন্য এমন ঝুঁকি আর কজন নিতে পারবেন, তা জানা নেই। তবে রোজি পেরেছেন। মান রেখেছেন পবনও। তাঁরও অন্যত্র বিয়ে ঠিক ছিল। সেখানে সবটা জানিয়ে, রোজির কাছে এসেছেন তিনি। পবনের পরিবারও আপত্তি তোলেনি। ভারতে আসার পর রোজি আর পবন বিয়ে সেরেছেন। স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্য নিয়েই এই কাজ করেছেন তাঁরা। বর্তমানে দিল্লিতে দুজনে থাকা শুরু করেছেন। এবং আগামীতেও এইভাবে পবনের সঙ্গেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন রোজি। জীবনে ঝড় ঝাপটা আসবেই। বিশেষ করে যারা এমন ব্যতিক্রমী কাজ করেছেন, তাঁদের জীবনে সমস্যা আসাই স্বাভাবিক। তবে দুজনে মিলে সেসব পেরিয়ে যাবেন বলেই মনে করছেন নবদম্পতি।