ঠাকুরের পুজো দিয়ে নতুন কাজ শুরু করেন। এমন অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। ব্যবসা হোক বা নতুন গাড়ি কেনা, সবকিছুই শুরু হয় ভগবানের আশির্বাদ নিয়ে। তবে এই ব্যক্তি স্রেফ পুজো দিয়ে ক্ষান্ত হননি। ভগবানকেই নিজের আয়ের যৌথ পার্টনার বানিয়েছেন। ব্যাপারটা কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনের রথের সারথী ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। তাঁর পরামর্শেই একের পর এক মহারথীকে ধরাশায়ী করেছিলেন অর্জুন। তবে বাস্তব জীবনে ভগবানকে সারথী হিসেবে পাওয়া সম্ভব নয়। চেষ্টা করতে ক্ষতি কি! এই যেমন রাজস্থানের এক ব্যক্তি নিজের সমস্ত আয়ের যৌথ অংশীদার বানিয়েছেন ভগবানকে। উদ্দেশ্য একটাই, ভগবানের আশীর্বাদে সারাজীবন বাড়তে থাকুক রোজগার।
এ দেশে মন্দিরের কমতি নেই। ভগবানে বিশ্বাস করেন এমন মানুষও অগুনতি। ধর্ম বিশ্বাস আলাদা হলেও ঈশ্বর মানেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ছোট-বড় প্রায় সব মন্দিরেই ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি মন্দিরের আলাদা মাহাত্ম্য। এই যেমন কোথাও পুজো দিলে সন্তান হবে, কোথাও মাথা ঠুকলে সেরে যাবে রোগ। তবে মন্দিরে পুজো দিলে সুখ-সমৃদ্ধি বাড়বে এমন শর্ত প্রায় সব জায়গাতেই। ভক্তিভরে মাথা ঠেকালেই মিলবে আশীর্বাদ। সেই জোরেই আগামীতে সবকিছু ঠিক থাকবে। রোজগারক বাড়বে, সুস্থ থাকবে শরীর। এমন প্রসিদ্ধ মন্দির রাজস্থানেও কম নেই। তার মধ্যে অন্যতম শানওয়ালিয়া শেঠ মন্দির। বিশ্বাস এখানে ১০ টাকা দিয়ে পুজো দিলে রোজগার বাড়ে ১০০ টাকা। অর্থাৎ যে মূল্য ভগবানের উদ্দেশে দান করা হবে, তার দশগুণ লাভ করিয়ে দেবেন খোদ ভগবান। তাই এখানে এসে অনেকেই মোটা টাকা দান করে যান। মূলত ব্যবসায়ীদের এই মন্দিরে ভিড় জমে বেশি। তাঁরাই মনে করেন এখানে পুজো দিলে ফুলেফেঁপে উঠবে ব্যবসা। তবে জয়পুরের এক বাসিন্দা সকলকে ছাপিয়ে গিয়েছেন। একবার দান করে তার মন ভরেনি। তাই ভগবানকে নিজের সমস্ত আয়ের অংশীদার বানিয়েছেন তিনি। শর্ত হল, প্রতি তিনমাস অন্তর নিজের মোট আয়ের ১০ শতাংশ এই মন্দিরে দান করবেন। কথার কথা নয়, একেবারে স্ট্যাম্প পেপারে সই করে এমন ঘোষণা করেছেন তিনি। মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে সেকথা জানিয়ে এসেছেন।
তাঁর দাবি, এমনটা করলে তাঁর রোজগার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। যে ব্যবসায় খোদ ভগবান তাঁর পার্টনার তাতে ক্ষতি হওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই। এমনটাই মনে করেন ওই ভক্ত। এদিকে মন্দির কর্তৃপক্ষ ওই ব্যবসায়ীর পদক্ষেপে বেজায় খুশি। তাঁর ভক্তির তারিফ করেছেন সকলেই। স্রেফ এককালীন দান নয়, প্রতি তিনমাস অন্তর মন্দির টাকা দেবেন ওই ভক্ত। তাতে মন্দিরের কাজেও সুবিধা হবে বইকী। এর আগে অনেকেই মন্দিরে দান করে মোটা টাকা লাভের মুখ দেখেছেন। সেই সুবাদে এই ভক্তও আগামীদিনে আরও বড় ব্যবসায়ী হয়ে উঠবেন, এমনটাই মনে করছেন মন্দিরের সেবায়েতরা। ইতিমধ্যেই এই খবর ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। তাঁরাও ওই ব্যক্তির অভিনব দানের কথা শুনে প্রশংসাই করেছেন। অনেকে আবার মনে করছেন, ব্যক্তিগত মুনাফার জন্যই এমন পদক্ষেপ করেছেন ওই ভক্ত। কিন্তু আর কেউ তো এমনোটা করেননি, তাই টাকার থেকেও বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে ওই ব্যবসায়ীর ভক্তি।