ভোটের বাজারে আমিষ-নিরামিষ ইস্যুতে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন মোদি-রাহুল। অথচ নিরামিষ আইসক্রিম খাইয়েই এককালে দেশবাসীর মন জয় করেছিলেন আরেক গান্ধী। কী ঘটেছিল ঠিক? আসুন, শুনেই নেওয়া যাক।
এ আইসক্রিমে আমিষ নেই! তা এমনই সাত্ত্বিক, যে, পুজোর জন্য উপোস করলেও এ আইসক্রিম খেতে মানা নেই। এ কথা বলেই দেশবাসীর মন কেড়েছিলেন এক গান্ধী। তবে রাজনীতি নয়, ব্যবসাই ছিল তাঁর পেশা। আর এই নিরামিষ আইসক্রিমের দৌলতেই সে ব্যবসাকে শিখরে তুলে দিয়েছিলেন তিনি।
:আরও শুনুন:
বেনারসি পান! সিনেমা থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ টানায় আজও অপ্রতিদ্বন্দ্বী
এমনিতেই আমিষ নিরামিষ নিয়ে ইদানীং কালে এ দেশে দ্বন্দ্বের শেষ নেই। লোকসভা ভোটের আগে এই ইস্যুতে মোদি-রাহুলের দ্বন্দ্বের কথাও ভোলার নয়। রাহুল কেন শ্রাবণ মাসে মাংস রান্না করছেন, কেন খাবারের ছবি সোশাল মিডিয়ায় দিয়েছেন, অন্যের পৃথক খাদ্যাভ্যাসের অধিকারকে গ্রাহ্য না করেই সেসব প্রশ্ন তুলেছিলেন মোদি। তবে সে কথা সরিয়ে রেখে আপাতত এই গান্ধীর কথাতেই আসা যাক, যিনি আবার ঘটনাচক্রে মোদির জন্মভূমি গুজরাটেরই মানুষ। দেশবাসীকে নিরামিষ আইসক্রিমের কথা তিনিই প্রথম বলেন।
ভাবছেন, নিরামিষ আইসক্রিম আবার কী বস্তু? দুধ, বরফ, এসেন্স ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হয় যে আইসক্রিম, তাতে আবার আমিষ এল কোথা থেকে! আসলে, আইসক্রিমে অনেকসময়ই এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা পশুর দেহজাত চর্বি থেকে তৈরি। জেলাটিন থাকলেও একই কথা, তা আদতে অ্যানিম্যাল প্রোটিন। সেখানে ১০০ শতাংশ নিরামিষ আইসক্রিমের কথা বলেই বাজিমাত করে ভাদিলাল (Vadilal) গান্ধীর ব্যবসা।
আরও শুনুন:
নালিশ শুনছে না প্রশাসন, অভিযোগের মালা গলায় পরেই বেনজির প্রতিবাদ ব্যক্তির
১৯০৭ সালে পরাধীন ভারতেই সোডার দোকান খুলেছিলেন গুজরাটের ভাদিলাল গান্ধী। একইসঙ্গে কাঠের বালতিতে চিনি-বরফ-নুন দিয়ে দুধ ফেটিয়ে আইসক্রিম তৈরি করতেন তিনি। সোডার দোকানে থাকত তাঁর নিজের হাতে বানানো সেই আইসক্রিমও। দেখতে দেখতে চাহিদা বাড়ে। উত্তরাধিকারসূত্রে সেই ব্যবসার কর্ণধার হওয়ার পর তাঁর ছেলে রণছোড়লাল গান্ধী জার্মানি থেকে আইসক্রিম তৈরির মেশিন আনান। ২১ বছরে গুজরাটেই চারটি দোকান খুলে ফেলেন তাঁরা। যদিও তখন দেশি বিদেশি আরও আইসক্রিমের সংস্থা মাঠে নেমেছে, তবুও গান্ধীদের ব্যবসা বাড়ছিল দ্রুত। এককালে আমেদাবাদের ছোট্ট সোডার দোকানে আইসক্রিম রাখা দিয়ে যে ব্যবসার শুরু, তা ক্রমে ক্রমে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গত অর্থবর্ষে গান্ধীদের ব্যবসার লাভ পৌঁছে গিয়েছে ১০৭৫ কোটি টাকায়। আর সেই বৃদ্ধির নেপথ্যে লুকিয়ে রয়েছে ওই নিরামিষের তকমাই।