বিয়ে করতে বেজায় ভয় পান। নেপথ্যে কারণও রয়েছে। কারও ভয় খরচে, কেউ আবার সারাজীবনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে চান না। গবেষণা বলছে, এও এক ধরনের মানসিক রোগ। বিজ্ঞানের পরিভাষায় কী বলা এই রোগকে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বিয়ে! ওরে বাবা, মহাঝক্কি! খরচের বহর কম নয়। তার ওপর পান থেকে চুন খসলেই নিন্দে। মাংস কেন সিদ্ধ হয়নি, ডালে কেন নুন কম, অভিযোগের তালিকা নেহাতই ছোট নয়। তার চেয়ে ভালো বিয়ে না করা। বিয়ে করতে ভয় পান এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। অন্তত সমীক্ষা তাই বলছে। কিন্তু জানেন কি, এও এক ধরনের মানসিক রোগ!
আরও শুনুন:
খাবার দেখলেই নাকি মৃত্যুভয়! আজব সব ‘ফোবিয়া’-র কথা জানেন?
বিয়ে মানে শুধুমাত্র দুজন মানুষের মিল নয়। দুই পরিবারেরও বন্ধন। এ দেশের সংস্কৃতি অন্তত তেমনটাই বলে। কিন্তু নতুন করে বন্ধনে জড়াতেই যত আপত্তি। বিয়ে করতে বেজায় ভয়। তার কারণ একটা নয়, অনেক। তবে কারণ যাই হোক, বিয়ে করতে মানুষ ভয় পাচ্ছেন এটাই বেশ ভাবার বিষয়। শুনে সাধারণ মনে হলেও বিষয়টা ততটাও সাধারণ নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে এও এক ধরনের মানসিক রোগ। যার শিকার হতে পারেন যে কেউ। বিষয়টা স্রেফ বিয়েকে কেন্দ্র করে ভাবলে ভুল হবে। এর জেরে যে কোনও প্রতিশ্রুতিতে বাঁধা পড়তেই ভয় পান রোগীরা। কাউকে কথা দিতে হবে, এমনটা ভাবতেই পারেন না এঁরা। সেক্ষেত্রে বিয়ের মতো সারাজীবনের জন্য প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
আরও শুনুন:
খালি মনে হচ্ছে মোটা হয়ে যাচ্ছেন! মনের ভুল, নাকি নেপথ্যে কোনও ট্রমা?
বিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগের নাম গেমোফোবিয়া। যে কেউ এই রোগের শিকার হতে পারেন। ঠিকমতো চিকিৎসা না হলে রীতিমতো সমস্যাও হতে পারে। তবে ঠিক কী কারণে এই ধরনের মানসিক রোগ হয়, তার সঠিক ব্যাখ্যা মেলে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকেই এমন রয়েছেন যারা ঘন ঘন প্রেমে পড়েন। কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে নয়, নিছক বন্ধুতার আশা নিয়েই নতুন সম্পর্কে জড়ান এঁরা। কিন্তু মুশকিলটা অন্য জায়গায়। এঁদের কেউই সেই সম্পর্ক সারাজীবনের জন্য টিকিয়ে রাখতে চান না। বরং উলটোদিক থেকে কোনওভাবে প্রতিশ্রুতির চাপ এলে সম্পর্ক থেকে সরে আসার চেষ্টা চলে। তাতেই বাড়ে অশান্তি। শেষমেশ সম্পর্কে এমন একটা পর্যায় চলে আসে যে সেটা ধরে রাখা আর সম্ভব হয় না। তাতে অবশ্য কোনও অসুবিধা নেই। প্রতিশ্রুতির ভয়ে যিনি সম্পর্ক থেকে সরে এলেন, তিনি কিছুদিনের মধ্যেই আবারও প্রেমে পড়েন। সেই জল বেশ কিছুদুর গড়ায়। তারপর সেই এক পরিণতি। প্রতিশ্রুতি আর বিয়ের কথা শুনেই, দে দৌড়। এই ধরনের মানুষের সঙ্গে কেউ তেমন যোগাযোগ রাখতে চান না। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে এঁরাই গেমোফোবিয়ার শিকার। অনেকসময় শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয় এর থেকে। সবেরই চিকিৎসা রয়েছে। দরকার শুধু ঠিক সময় চিকিৎসকের কাছে পৌঁছন। তবে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অধিকাংশই এই নিয়ে তেমন মাথা ঘামান না। সবটা সাধারণ বলেই ভেবে নেন। বিয়ে না করার প্রসঙ্গ যদিও আলাদা। এর নেপথ্যে আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। কিন্তু কোনওভাবে কারও সঙ্গে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হতে চাইছেন না, এমনটা হওয়া স্বাভাবিক নয়। এক্ষেত্রে মন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। গেমোফোবিয়ায় মতো কোনও রোগ হলে তার সঠিক চিকিৎসা করাই বাঞ্ছনীয়।