কেউ মাত্র ১২ বছর বয়সেই তৈরি। কেউ আবার ৭০-এর দোর গোড়ায় পৌঁছেও থামতে নারাজ। এঁরা সকলেই মেডেল জয়ের লক্ষ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন অলিম্পিক্সে। সবথেকে নবীন এবং প্রবীন ক্রিড়াবিদদের তালিকায় কারা রয়েছেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শুরু হয়েছে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’। এই মুহূর্তে প্যারিস অলিম্পিক্সে নজর রাখছেন গোটা বিশ্বের ক্রিড়াপ্রেমীরা। সকলেই অপেক্ষায় রয়েছেন, কবে দেশের জন্য একটা পদক আসে। ক্রিড়াবিদরাও তৈরি নিজের সেরাটুকু উজাড় করে দিতে। আর সেখানেই বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন কয়েকজন।
:আরও শুনুন:
অলিম্পিকের আসরে নারীর প্রবেশ নিষিদ্ধ! নিয়ম ভাঙার শাস্তি ছিল মৃত্যু
যে কোনও ক্ষেত্রেই অভিজ্ঞতার আলাদা দাম থাকে। ক্রিড়া জগতও তার ব্যতিক্রম নয়। বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের তারকা ক্রিকেটাররা একদিনে ওই জায়গায় পৌঁছননি। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরিয়েছেন বিরাট-রোহিতরা। সবটা মিলিয়ে নিজেদের সেরাটা দিতে পেরেছেন। একইভাবে বারবার ব্যর্থ ক্রিড়াবিদও, অভিজ্ঞতার জোরে ছিনিয়ে এনেছেন অলিম্পিক্স পদক। যদিও অভিজ্ঞতা নেই বলে অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণ করা যাবে না, এমনটা একেবারেই নয়। প্রয়োজন শুধু মনের জোর, আর সাহস। ঠিক যে সাহস দেখিয়েছিলেন চিনের জেং হাওহাও (Zheng Haohao)। মাত্র ১২ বছর বয়সেই অলিম্পিক্সে অংশ নেন তিনি। সেবছরই অলিম্পিক্সের ইভেন্টে যোগ হয়েছে স্কেটবোর্ড। সেই খেলাতেই নিজেকে প্রমাণ করেন জেং। খুব ছোট বয়স থেকেই স্কেটবোর্ড ছোটাতে ওস্তাদ চিনের এই ক্রিড়াবিদ। কাজেই অলিম্পিকে বয়সের জন্য কোনও অসুবিধা হয়নি তাঁর। শুধু অলিম্পিক্স নয়, ১২ বছর বয়সেই একাধিক আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ নিয়েছিলেন জেং। বেশ কিছু পুরস্কারও পেয়েছিলেন। যদিও অলিম্পিক পদক সেবার জোটেনি। তবে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। মাত্র ১৬ বছর বয়সে টোকিও অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জেতেন চিনের এই খেলোয়াড়। এই বয়সে আরও অনেকেই অলিম্পিক্সে অংশ নেন। কিন্তু সবাই যেখানে প্রথম অলিম্পিক্সে অংশ নিচ্ছেন, জেং ততদিনে ২-৩ বার অংশ নিয়ে ফেলেছেন। অনেকেই দাবি করেন, জেং-ই অলিম্পিক্সে অংশ নেওয়া সবথেকে কমবয়সী ক্রিড়াবিদ।
এতো গেল নবীনের কথা। প্রবীণরাও কী অলিম্পিক্সে অংশ নিতে পারেন?
:আরও শুনুন:
শেষবেলায় স্বপ্নভঙ্গ! অলিম্পিকে তীরে এসে তরী ডুবেছিল যে ভারতীয়দের
নিয়ম অনুযায়ী খেলায় অংশ নেওয়ায় বয়সের কোনও বাধা নেই। খেলোয়াড় যদি সুস্থ থাকেন, এবং যে দেশের হয়ে তিনি অংশ নিচ্ছেন সেখানকার সরকারের অনুমতি থাকে, তাহলে অলিম্পিক্সে অংশ নিতে অসুবিধা হবে না। নিজেকে প্রমাণ করতেই প্যারিস অলিম্পিক্সে হাজির হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার মারি হানা। তাঁর বয়স ৭০ ছুঁই ছুঁই। এই বয়সে পৌঁছে অনেকেই লাঠি নিয়ে হাঁটা শুরু করেন। সেখানে মারি রীতিমতো দক্ষতার সঙ্গে ঘোড়ায় চড়েন। আসলে তিনি একজন অশ্বারোহি। অলিম্পিক্সে ইকুয়েস্ট্রিয়ান ইভেন্টে অংশ নেন। এই নিয়ে সাত বার অলিম্পিক খেলছেন এই বর্ষীয়ান ক্রিড়াবিদ। যদিও শোনা যাচ্ছে, চলতি অলিপিক্সে চোটের কারণে তিনি সরাসরি ময়দানে হাজির নাও হতে পারেন। তবে সতীর্থদের মনোবল বাড়াতে তিনি প্রথম থেকে রয়েছে গেমস ভিলেজে। তাঁকেই অলিম্পিক্সে অংশ নেওয়া প্রবীনতম ক্রিড়াবিদের আখ্যা দেওয়া হয়। যদিও চলতি অলিম্পিকে, স্পেনের জুয়ান আন্টোনিও অংশ নিচ্ছেন। তাঁর বয়স ৬৫। কিন্তু এই নিয়ে এতটুকু ভয় নেই জুয়ানের মনে। বরং জীবনের তৃতীয় অলিম্পিকে নিজের সেরাটুকুই দিয়ে যেতে চান এই ক্রিড়াবিদ।