সংসদ অধিবেশনে বারবার চর্চায় উঠে আসছে এমার্জেন্সি প্রসঙ্গ। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদের জারি করা সেই জরুরি অবস্থার সমালোচনায় সরব রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও। সেই সময়টা কীভাবে কাটিয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি? শুনে নেওয়া যাক।
একদিকে সংসদে অধিবেশন, আরেকদিকে ‘৭৪-এর জরুরি অবস্থা ঘোষণার পঞ্চাশ বছর পূর্তি। এই পরিস্থিতিতে সংসদে বারবার উঠে আসছে জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার পরে এমার্জেন্সির সমালোচনায় সরব খোদ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও। অধিবেশনের শুরুতেই নিট-নেট দুর্নীতির প্রশ্ন সামাল দিয়ে জরুরি অবস্থাকে ঢাল করতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জরুরি অবস্থার কথা মনে রেখেই সংসদে নীরবতা পালনের ডাক দিয়েছিলেন স্পিকার, যার জেরে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। এবার প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির সরকারের সুপারিশে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদের জারি করা জরুরি অবস্থাকে ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্ধকারতম অধ্যায় বলেই দাগিয়ে দিলেন রাষ্ট্রপতিও।
কিন্তু সেই জরুরি অবস্থার সময়ে ঠিক কী ভূমিকা ছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির?
আরও শুনুন:
নানা ভাষা, নানা মতের বাহন নানা স্লোগান… সংসদে শপথে হাজির রাম থেকে ভীম
জানা যায়, এমার্জেন্সির পুরো সময়টাই ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। কখনও গেরুয়া পোশাকে সন্ন্যাসী, কখনও আবার পাগড়ি মাথায় শিখের ছদ্মবেশ নিয়েছিলেন তিনি। সেসময় আর.এস.এস-এর সবসময়ের স্বেচ্ছাসেবক তিনি। যাতে দলের কাজ করতে গিয়ে ধরা না পড়েন, সে কারণেই এই ছদ্মবেশ। তাঁর ছদ্মবেশ নাকি এতটাই নিখুঁত ছিল যে দীর্ঘদিনের চেনা পরিচিতরাও তাঁকে চিনতে পারতেন না। একবার কর্তাব্যক্তিদের ধোঁকা দিয়ে জেলের মধ্যেও একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি পৌঁছে দিয়েছিলেন মোদি, শোনা যায় এমন কথাও। এই পুরো সময়টাই সংঘের নেতাদের সঙ্গে কাজ করা এবং হিন্দুত্ববাদী শিবিরগুলির সঙ্গে সংযোগের কাজে লাগিয়েছিলেন মোদি। ১৯৭৭-এ জরুরি অবস্থা উঠে যাওয়ার পর তাঁর সেই কাজের ফল মেলে। মধ্য ও দক্ষিণ গুজরাটে ‘সম্ভাগ প্রচারক’ অর্থাৎ আঞ্চলিক প্রচারকের ভূমিকায় উন্নীত হন তিনি। ১৯৭৮ সালে এই জরুরি অবস্থার অভিজ্ঞতা নিয়েই প্রথম বই লিখেছিলেন তিনি। ‘সংঘর্ষ মা গুজরাট’ নামের সেই বইটি মাত্র ২৩ দিনে লিখে শেষ করেছিলেন বলেই দাবি করেন নরেন্দ্র মোদি। সেদিন শাসক কংগ্রেস সরকারের হাত এড়াতে কার্যত আত্মগোপন করতে হয়েছিল তাঁকে। তবে পঞ্চাশ বছর পর পাশা উলটে গিয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মসনদ থেকে সেই এমার্জেন্সি ইস্যুতেই লাগাতার কংগ্রেসকে তোপ দেগে চলেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।