রাস্তা জুড়ে বসে নমাজ পাঠ নয়। যেখানে সেখানে কোরবানিতেও কড়া নিষেধাজ্ঞা। বকরিদের আগে এমনই নিয়ম জারি হল যোগীরাজ্যে। এ প্রসঙ্গে ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ইদের সময় রাস্তা জুড়ে বসে নমাজ পড়া যাবে না। সম্প্রতি, এমনই নিয়ম জারি হয়েছে যোগীরাজ্যে। শুধু তাই নয়, বকরিদে কোরবানির ক্ষেত্রেও বিশেষ নিয়ম মানতে হবে। এই নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন খোদ যোগী আদিত্যনাথ। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই হইচই পড়েছে বিভিন্ন মহলে।
আরও শুনুন: রাহুল হাতে নিতেই দর বাড়ল সংবিধানের? হু হু বিক্রিতে ফুরোল সংস্করণও
লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের ফল অবাক করেছে অনেককেই। রাজ্যের শাসকদল বিজেপি হওয়া সত্তেও, লোকসভায় ছাপ ফেলতে পারেনি গেরুয়া শিবির। এমনকি রামমন্দির তৈরির পরও অযোধ্যায় লজ্জার হার মেনে নিতে হয়েছে বিজেপিকে। ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকে এই নিয়ে যথেষ্ট হইচই হয়েছে। বিরোধীরাও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বারবার নিশানায় উঠেছে যোগী আদিত্যনাথের নাম। অনেকে এমনটাও বলতে শুরু করেছিলেন, যে যোগীরাজ্যে এবার ব্যাকফুটে যেতে হবে খোদ যোগী আদিত্যনাথকেই। এমনিতে প্রায়শই বিভিন্ন ইস্যুতে স্বমহিমায় ঝাঁঝালো মন্তব্য করতে শোনা যেত আদিত্যনাথকে। মোদি সরকার এতটুকু বিরুদ্ধাচরণ সহ্য করেন না আদিত্যনাথ। তবে ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে বিরোধীদের এত কটাক্ষ নিয়ে সেইভাবে মুখ খুলতে শোনা যায়নি তাঁকে। সম্প্রতি আবারও পুরনো মেজাজে দেখা গেল আদিত্যনাথকে। রাজনীতির প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য তিনি করেননি। তাঁর রাজ্যের শৃঙ্খলা নিয়েই বিশেষ মন্তব্য করতে শোনা গেল আদিত্যনাথকে।
আরও শুনুন: এক চড়ে মুখের একপাশ প্যারালাইজড হয়ে যায়, তবু অভিনয় ছাড়েননি এই নায়িকা
সামনেই বকরিদ। ইসলাম ধর্মের এই অনুষ্ঠানে পশুবলির নিয়ম রয়েছে। যা কোরবানি নামে পরিচিত। সেইসঙ্গে ইদের দিন একসঙ্গে বসে নমাজ পাঠের চলও রয়েছে মুসলিমদের মধ্যে। এবার এই নিয়েই বিশেষ সতর্ক বার্তা জারি করেছেন আদিত্যনাথ। তাঁর কড়া নির্দেশ, রাস্তা জুড়ে বসে নমাজ পাঠ করা যাবে না। অর্থাৎ ইদের দিন কোনও কর্মব্যস্ত রাস্তা আটকে ধর্মাচরণ করা যাবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছেন যোগীরাজ। শুধু তাই নয়, যেখানে সেখানে কোরবানির ক্ষেত্রেও কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন তিনি। তাঁর নির্দেশ, আগে থেকে ঠিক করে রাখতে হবে কোরবানির জায়গা। কেবলমাত্র সেখানেই কোরবানি দেওয়া যাবে। যত্রতত্র এই কাজ করলে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে প্রশাসন। কোরবানির পর সেই জায়গা পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও বিশেষ তৎপরতা দেখানোর কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে বকরিদে কোনওরকম সাম্প্রদায়িক অশান্তির পরিবেশ তৈরি না হয়, সে দিকেও স্থানীয় প্রশাসনকে কড়া নজর রাখতে বলেছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই নির্দেশ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, রাস্তায় নমাজ পাঠ নিয়ে আপত্তি এই প্রথম নয়। গেরুয়া শিবিরের তরফে প্রায়শই রাস্তায় বসে এই বিশেষ ধর্মাচরনে আপত্তি তোলা হয়েছে। কিছুদিন আগে নমাজ পাঠরত এক ব্যক্তিকে জনৈক পুলিশ আধিকারিকের হেনস্থা নিয়েও রীতিমতো বিতর্ক হয়েছিল। যোগীরাজ্যের এই আপত্তিও কী শুধুমাত্র রাস্তায় বসে নমাজ পাঠে? নাকি এই নির্দেশের আড়ালে ধর্মীয় মেরুকরণের ইঙ্গিত রয়েই গেল? যোগীরাজের এই নির্দেশ নিয়ে এমন প্রশ্নই উঠছে ওয়াকিবহাল মহলে।