ভোটের দিন শেষমেশ আর বাড়ি থেকেই বেরোলেন না। দিতেই গেলেন না ভোট। কিন্তু তার জন্য যে জরিমানাও দিতে হতে পারে, সে কথা জানেন কি?
লোকসভা নির্বাচন শুরু হতেই শুরু হয়েছে ভোট দেওয়া আর পাওয়ার হিসেবনিকেশ। কমিশন থেকে ভোটকুশলী, রাজনৈতিক নেতা থেকে সাধারণ মানুষ, ভোটের অঙ্ক কষতে আদাজল খেয়ে লেগেছেন সকলেই। আর সে হিসেবই বলছে, আগের তুলনায় কমেছে ভোটদানের হার। হ্যাঁ, প্রথম দফার ভোটের পর থেকেই বারেবারে জল্পনা উসকে উঠেছে এই মর্মে। আর যা রটে, তার কতকটা যে বটে, সে কথা বুঝিয়ে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশনের তথ্য পরিসংখ্যানও। দেখা যাচ্ছে, অনীহার কারণেই হোক কি অশান্তির ভয়ে বা অন্য কোনও অসুবিধার দরুন, ভোট দিতে যাননি বেশ কিছু মানুষ।
আরও শুনুন:
ভোটদানের রিল বানানোই নতুন ট্রেন্ড! সাবধান না হলে হতে পারে জেলও
কিন্তু, ইচ্ছে হল না বলেই ভোট দিতে গেলাম না, সবসময় ব্যাপারটা এতখানি সহজ থাকে না মোটেও। জানেন কি, ভোট না দেওয়ার কারণে এমনকি জরিমানাও দিতে হতে পারে আপনাকে?
চিন্তায় পড়ে গেলেন তো? তাহলে খুলেই বলা যাক। না, আমাদের দেশে ভোট নিয়ে যতই উত্তেজনা থাকুক না কেন, কেউ যদি তাতে শামিল না হল, তবে আর্থিক জরিমানা নেওয়ার প্রশ্ন এখনই উঠছে না। কিন্তু এমন দেশও আছে বইকি, যেখানে ভোট না দেওয়ার কারণেই জরিমানার মুখে পড়তে পারেন আপনি।
আরও শুনুন:
‘ভোটের কালি’ আঙুলে, কিন্তু নখের ডগায় কেন? কবে থেকে চালু এই রেওয়াজ?
সে জায়গা হল ইউরোপের ছোট্ট দেশ লুক্সেমবুর্গ। শান্ত দেশটিতে শান্তিপূর্ণ ভাবেই চলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া। ভোটের আগে রাস্তায় না থাকে মিছিল, না লাউডস্পিকারে কান-ফাটানো চিৎকার বা দলের স্লোগান শোনা যায়। দেওয়াল লিখন বা দেওয়ালে পোস্টার সাঁটারও কোনও রেওয়াজ নেই এখানে। প্রচারের জন্য শুধু নির্ধারিত কিছু স্থানে প্রার্থীর বা দলের অস্থায়ী হোর্ডিং লাগিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ডাকযোগে ভোটারদের কাছে প্রচার পুস্তিকা পাঠানোর ব্যবস্থাও রয়েছে। আর টেলিভিশন বা রেডিওতে মুখোমুখি বিতর্কে বসেন নানা দলের প্রার্থীরা। নিজেদের উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা সেভাবেই তাঁরা তুলে ধরেন সকলের সামনে। কিন্তু নির্বাচনী প্রক্রিয়াতে যেন সকলেই অংশ নেন, এমনটাই চায় দেশের সরকার। এ দেশের নিয়ম অনুযায়ী, ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিককে ভোট দিতে হবে। কেউ যদি ভোট দিতে না পারেন, তা হলে স্থানীয় কমিউন বা পুরসভায় স্পষ্ট করে কারণ জানাতে হবে। অসুস্থ হলে জমা দিতে হবে মেডিক্যাল রিপোর্ট। অসুবিধার কথা আগাম জানালে বাড়িতে পোস্টাল ব্যালট পাঠিয়ে ভোট নেওয়ার সুযোগও রয়েছে। বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকদের জন্যও একই ব্যবস্থা। তবে ভোটটি কিন্তু দিতেই হবে। সেখানে ইচ্ছেমতো ভোট না দিলে জরিমানার মুখে পড়তে পারেন যে কোনও নাগরিকই, এমনটাই নিয়ম ইউরোপের এই দেশের।