বিগত একমাস ধরে দেশজুড়ে চলছে লোকসভা নির্বাচন। তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাজনীতির পারদ। পিছিয়ে নিয়ে জিনিসপত্রের দামও। নেতাদের মোচ্ছবের ঠেলায় লাফিয়ে বাড়ছে সবকিছুর দাম। তালিকায় এক্কেবারে উপরের দিকে রয়েছে মাংসের দাম। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ষষ্টদফা পেরিয়েও ভোটের আঁচ এতটুকু কমেনি। শেষ দফার প্রচার সারতে কোমর বেঁধে নেমেছেন গোটা দেশের প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দল। মাঠে নেমে কাজ করছেন মূলত পার্টির কর্মীরা। কাজের সঙ্গে জমিয়ে চলছে খাওয়া দাওয়াও। যার প্রভাব পড়ছে রোজকার বাজারে। নেতা কর্মীদের মোচ্ছবের ঠেলায় লাফিয়ে বাড়ছে জিনিস পত্রের দাম।
ভোটের সঙ্গে ফিস্ট বা গণভোজের অন্তরের সম্পর্ক। কর্মীদের কাজে উৎসাহ যোগাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা করে থাকেন পার্টির উঁচু পদের নেতারা। ছোট খাটো দল তবু ঠিক আছে। বড় দলের সবকিছুতেই এলাহি আয়োজন চাই। মিছিলে একশো দুশো লোক না হলে চলে নাকি! কোথাও আবার আরও বেশি। এমনি এমনি তো কেউ কাজ করবে না। যতই দলের প্রতি ভালোবাসা থাক, পেটপুজোর ব্যবস্থাটুকুও না থাকলে কেউ ফিরেও তাকাবে না। তাই পার্টির কাজের বিনিময়ে অনেকেই জমিয়ে মোচ্ছব সেরে যান। কে কেমন কাজ করছে সেটা বড় কথা নয়, মিছিলে পা মেলালেই মিলবে পেট ভরে খাবার। তার জন্য একাধিক দলের ঝাণ্ডা ধরতেও আপত্তি নেই অনেকের। চলতি নির্বাচনে অবশ্য নেতাদের খরচের মাপ ঠিক করে দিয়েছিল কমিশন। খাবারের জন্যও নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা খরচেরই অনুমতি ছিল। তবু সব দিকে কী আর নজর রাখা যায়! তাই অন্যান্য নির্বাচনের মতো লোকসভাতেও জমিয়ে ফিস্ট হয়েছে একাধিক জায়গায়। এক্ষেত্রে সবথেকে জনপ্রিয় মেন্যু মাংস-ভাত। কর্মীদের পেট ভরে মাংস খাওয়াতে কোনও কার্পণ্য করছে না দলগুলো। কিন্তু এতে সমস্যা হচ্ছে অন্য জায়গায়। হঠাৎ করে তৈরি হওয়া এই চাহিদা মেটাতে হিমসিম খাচ্ছেন দোকানিরা। উপায় না পেয়ে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন সকলে। তাতে সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ ভোটাররা।
বিগত এক মাসে অর্থাৎ ভোটপর্ব চলাকালীন লাফিয়ে বেড়েছে মাংসের দাম। চিকেনের ক্ষেত্রে যত বাড়বাড়ন্ত। কোথাও কোথাও ৩০০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে মাংস। যা একমাস আগেও ২০০-র মধ্যেই ছিল। অর্থাৎ বিগত একমাসে ১০০ টাকা কেজিতে দাম বেড়েছে। আর এমনটা যে ভোটের জন্যই হয়েছে তা স্বীকার করে নিচ্ছেন সকলেই। রাজনৈতিক দলগুলোও অনেক সময় বেশি দাম দিয়ে মাংস কিনতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ সাধারণ মানুষের কথা ভেবে কিছু কিছু দোকানি এই নিয়ম ঠিক করেছেন। যে একসঙ্গে বেশি মাংস কিনলে টাকাও বেশি দিতে হবে। আসলে, গরমের সময় এমনিই মাংসের চাহিদা মেটাতে সমস্যায় পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের। মুরগি লালন পালন করাও বা বাঁচিয়ে রাখাও গরমের সময় কঠিন। তার মধ্যে ভোটের জন্য এই অতিরিক্ত চাহিদা বৃদ্ধি, বেশ সমস্যার বলেই মনে করছেন তাঁরা। তাই দাম বাড়িয়ে কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। নেতাদের না হয় টাকা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই, কিন্তু সাধারণ মানুষ তো আর ভোট বলে খাবারের রুটিন বদলাতে পারেন না! তাই বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে কিনতে হচ্ছে মাংস। আর ভোট কবে মেটে সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন চিকেনপ্রেমীরা।