লোকসভা ভোটের আবহে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে এসেছেন শতাধিক হিন্দু। প্রত্যেকেরই বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। সেই কাজ সম্পন্ন করেই দেশে ফিরবেন তাঁরা। ঠিক কোন উদ্দেশ্য নিয়ে এদেশে এলেন তাঁরা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পুণ্যতোয়া গঙ্গা। হিন্দুরা মাতৃজ্ঞানে পুজো করে এই নদীকে। তাই এখানে অস্থি বিসর্জন করা হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র কাজ। তা সে যে দেশেরই বাসিন্দা হন। গঙ্গার প্রতি হিন্দুদের অন্তরের টান থাকতে বাধ্য। আর সেই টানেই পাকিস্তান থেকে ভারতে উড়ে এসেছেন ২২৩ হিন্দু।
আরও শুনুন: ভোটের প্রচারে যত হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্ব! মন্দিরের রাস্তার জন্য জমি দিলেন মুসলিমরাই
এমনিতে প্রতিবেশী দুই দেশ। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও, অনুমতি ছাড়া মাঝের কাঁটাতার পেরানোর উপায় নেই। অনুমতি পাওয়াও কম ঝক্কির নয়। অপেক্ষা করতে হবে দীর্ঘদিন। তো অনুমতি মিলবে কিনা তাতে বেশ সন্দেহ থাকবে। বিশেষ করে দেশজুড়ে যখন লোকসভা ভোটের মতো গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় চলছে, তখন পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা বেশ কঠিন ব্যাপার। অথচ ভোটের আবহেই এমনটা করেছেন পাকিস্তানের হিন্দুরা। এক-দুজন নয়, একেবারে ২২৩ জন হিন্দু উড়ে এসেছেন ভারতে। আর সঙ্গে এনেছেন তাঁদের পূর্বপুরুষের অস্থি।
আরও শুনুন: পাকিস্তান প্রেমে ‘কলঙ্কভাগী’ বিজেপিই! আডবাণীকে হাতিয়ার করে মোদিকে তোপ কংগ্রেসের
ঠিক ধরেছেন, পবিত্র গঙ্গায় অস্থি বিসর্জনের উদ্দেশ্য নিয়ে ভারতে এসেছেন পাকিস্তানের হিন্দুরা। এঁদের বেশিরভাগের পূর্বপুরুষই ভারতীয় ছিলেন। দেশভাগের সময় চলে গিয়েছেন প্রতিবেশী দেশে। কিন্তু কাঁটাতার দিয়ে কি আর অন্তরের টান মোছা যায়? মারা যাওয়ার আগে শেষ ইচ্ছা হিসেবেই বলে গিয়েছিলেন গঙ্গায় অস্থি বিসর্জনের কথা। সেই ইচ্ছায় দায়িত্ব নিয়ে পালন করছেন পরবর্তী প্রজন্ম। ভোটের আবহে ভারতে আসার জন্য বিশেষ অনুমতি করিয়েছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, এখানে বেশ কয়েকদিন থাকার অনুমতিও নিয়েছেন। সবারই প্রথম গন্তব্য ছিল হরিদ্বার। গঙ্গার উৎসমুখের কাছাকাছি এই পবিত্র ভূমে গঙ্গার রূপ দেখার মতো। যেমন কাঁচের মতো স্বচ্ছ জলধারা, তেমনই তার শ্রোত। সেখানেই পূর্বপুরুষের অস্থি বিসর্জন করেছেন পাকিস্তানের এই হিন্দুরা। এরপর ভারতের ইতি উতি ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্রে গিয়েছেন তাঁরা। মোট ২৫ দিনের এই ভারত ভ্রমণে রামমন্দিরেও যাবেন তাঁরা। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ মন্দিরে এসেছেন। সেই তালিকাতেই এবার নিজেদের নাম যোগ করতে চলেছেন পাক হিন্দুরা। একইসঙ্গে গঙ্গায় অস্থি বিসর্জন দিয়ে পূর্বপুরুষের আত্নার চিরশান্তির ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা।