নির্বাচনী প্রচারে বন্ধ হোক ঘৃণা ভাষণ। এই দাবিতে কমিশনের দপ্তরে জমা পড়ল হাজার হাজার পোস্টকার্ড। এর এই চিঠি পাঠিয়েছেন আমজনতাই। চলতি নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকায় যাঁরা একেবারেই সন্তুষ্ট নন। আর কী দাবি থাকছে জনতার চিঠিতে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
লোকসভা নির্বাচনে বাকি আরও চারটি দফা। শেষ মুহূর্তের প্রচারে খামতি রাখতে নারাজ সকলেই। সরকার পক্ষ বা বিরোধী, ভোট বাক্স ভরাতে চলছে সবরকমের চেষ্টা। কোথাও প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমজনতাকে। কোথাও আবার বিভিন্ন ইস্যুতে অপর পক্ষের তুলোধনা চলছে। সবেতেই প্রকট হচ্ছে ঘৃণা ভাষণ।
আরও শুনুন: ওয়ো রুম বন্ধ কেন? প্রতিবাদে বিজেপি বিধায়কের দপ্তরের সামনে চুম্বন যুগলের
নির্বাচনের আবহে ঘৃণা ভাষণের রমরমা কোনও নতুন ঘটনা নয়। সরকার পক্ষের গাফিলতির খতিয়ান তুলে ধরতে হামেশাই বিভিন্ন কটূক্তি করে ফেলেন বিরোধী দলের নেতারা। একইভাবে সরকার পক্ষও নিজেদের জাহির করতে এমন কিছু বলেন, যা আদতে স্বাভাবিক নয়। যদিও এই স্বাভাবিক, অস্বাভাবিকের মাপকাঠি কমিশনের তৈরি। ভোট শুরুর বহু আগেই কমিশনের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রচারে কী কী বলা যাবে না। অন্যথায় করা পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। অভিযোগ জানানোর একাধিক পথ খুলে দেওয়া হয় কমিশনের তরফে। তবু ভোটের বাজারে ঘৃণা ভাষণকে এখনও ‘আউট অফ স্টক’ ঘোষণা করা যায়নি। ভোটের প্রচারে ঘৃণা ভাষণের দৌড়ে রাজনৈতিক দলগুলো যেন এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায় দেখ!
আরও শুনুন: পাকিস্তান প্রেমে ‘কলঙ্কভাগী’ বিজেপিই! আডবাণীকে হাতিয়ার করে মোদিকে তোপ কংগ্রেসের
প্রতিবাদ যে হচ্ছে না বলা ভুল। কমিশনের কাছে অভিযোগও জমা পড়ছে। কিন্তু লাভ হচ্ছে না কিছুই। নিজেদের মতো করে ঘৃণা ভাষণে আরও উন্নতি করছেন নেতারা। সামাজিক প্রসঙ্গও উঠছে। জাত-ধর্মের ইস্যুতেও বিতর্ক দানা বাঁধছে। কিন্তু তাতেও কমিশনের হেলদল নেই। তাই পথে নামছে সাধারণ মানুষ। বলা ভালো ভোটাররাই এবার নেতাদের ঘৃণা ভাষণের বিররুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। সম্প্রতি কমিশনের দপ্তরে এই নিয়ে হাজার খানেক চিঠিও জমা পড়েছে। যেখানে মূলত এই ঘৃণা ভাষণ নিয়েই অভিযোগ জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে কমিশনের তরফে অবিলম্বে কিছু পদক্ষেপ করা হোক, এই দাবিও তোলা হয়েছে। কোনও রাজনৈতিক দলের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বেঙ্গালুরু সহ ১১ শহরের বাসিন্দারা অংশ নিয়েছেন এই প্রতিবাদী কর্মসূচিতে। একতা বোঝাতে বিশেষ এক প্রতীকীও ব্যবহার করা হচ্ছে পোস্টকার্ডে। যা আসলে কমিশনের অকর্মন্যতাকেই ইঙ্গিত করেছে। শুধু বিজেপি নয়, অভিযোগ জানানো হয়েছে সামগ্রিক ভাবে সব দলের নেতাদের বিরুদ্ধেই। বিশেষ করে সামাজিক ইস্যুতে যে ধরনের মন্তব্য করছেন নেতারা, তা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি তুলেছেন প্রতিবাদীরা। এমনকি প্রধানমন্ত্রী মোদিকেও যেন অন্তত ৯৬ ঘণ্টার জন্য প্রচারে নিষিদ্ধ করা হয়, এই দাবিও তুলেছেন কেউ কেউ। প্রতিবাদীদের মধ্যে আইনজীবী, সিনেমা পরিচালক, শিল্পী সহ একাধিক পেশার মানুষ রয়েছেন। সকলেই দল মত নির্বিশেষে চেয়েছেন নেতাদের ঘৃণা ভাষণ বন্ধ হোক। তাই কমিশনের দপ্তরে এমন চিঠি পাঠানোর উদ্যোগ।