ভোটার কার্ড আছে। তবুও মিলল না ভোটদানের অধিকার। অভিযোগ মথুরার মুসলিমদের। ফের কী ঘটল যোগীরাজ্যে? শুনে নেওয়া যাক।
ভোটার কার্ড আছে। নাম রয়েছে কমিশনের তালিকাতেও। এমনকি আগে ভোটও দিয়েছেন। কিন্তু এবারেই উলটপুরাণ। মিলল না ভোট দেওয়ার সুযোগই। এমনটাই অভিযোগ মথুরার মুসলিমদের অনেকেরই। যেসব এলাকায় হিন্দুদের সংখ্যাধিক্য, সেখান থেকে যদিও এমন অভিযোগ শোনা যায়নি। কিন্তু মুসলিম এলাকার ক্ষেত্রেই এই নতুন পরিস্থিতি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন সেখানকার পুরনো বাসিন্দারা।
আরও শুনুন:
এমন কাণ্ড করবেন না যাতে কেজরির হাল হয়! ইঙ্গিতে অন্য নেতাদের সতর্ক করলেন মোদি?
প্রথম দু’দফার ভোটের হিসেব বলছে, উত্তরপ্রদেশে এবার ভোটদানের হার বেশ কম। তার মধ্যে এই আসনটিতে গত দু’দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে চলতি নির্বাচনেই। ২০১৪তে যেখানে ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছিল, আর ২০১৯-এ ৬০.৭ শতাংশ, সেখান থেকে অনেকটাই নেমে এসেছে চব্বিশের নির্বাচনে ভোটদানের হার। তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪৯.৪ শতাংশে। এমনকি গোটা যোগীরাজ্যের ১৬টি আসনের মধ্যেও এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে এখানেই। মনে করা হচ্ছে, কম ভোট পড়ার একটা বড় কারণ মুসলিমদের ভোট না দেওয়া। অথচ তাঁরা যে ভোট দিতে নারাজ এমনটাও নয়। যেমন ৭৪ বছরের জমরুল নিশা বলছেন, এই প্রথমবার, ভোটার স্লিপই মেলেনি তাঁদের। পরিবারের ৯ জনের কেউই ভোট দিতে পারেননি যার ফলে। এই বৃদ্ধা অবশ্য তার পরেও বুথে চলে গিয়েছিলেন ভোটের দিন। সেখান থেকে ভোটার স্লিপ সংগ্রহ করেও ফেলেন। কিন্তু তারপরেও ভোত দিতে পারেননি। কেননা বুথে বলা হয়, তাঁদের কাছে যে নামের তালিকা রয়েছে, সেখানে জমরুল নিশার বদলে কেবল জমরুল নাম রয়েছে। বৃদ্ধা পালটা যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করলেও হাসি তামাশা করেই তাঁর কথা উড়িয়ে দেওয়া হয়। অথচ তাঁদের বাড়ির ঠিক উলটোদিকে থাকা মূলচাঁদ কিন্তু পরিবারের ৬ সদস্যের নামেই যথারীতি ভোটার স্লিপ পেয়েছেন। শাহি ইদ্গা মসজিদের কাছাকাছি থাকা ৬২ বছরের মহম্মদ সাবু জানাচ্ছেন, বুথের আধিকারিক আধঘণ্টা ধরে খুঁজেও তার নাম বের করতে পারেননি। এর আগে কোনও বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনের সময়ই এমন সমস্যায় পড়তে হয়নি তাঁকে। ৬৫ বছরের সাবির আলিও বলছেন একই কথা। পরিবারের আটজনের মধ্যে চারজনেরই খোঁজ মেলেনি নামের তালিকায়। ৭৬ বছরের সয়ীদ ফারুকির পরিবারে ৭ জনই ভোট দিতে পারেননি, অথচ একই বুথে ভোট দিয়েছেন পড়শি কৈলাসের পরিবারের পাঁচজনই।
আরও শুনুন:
মঙ্গল-অমঙ্গলসূত্র! দুর্নীতিকে দূরে ঠেলে ভোট যেন সেই ‘ধর্ম’যুদ্ধ
এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এক সংবাদমাধ্যমের দাবি, ভোট দিতে না পারার সমস্যা দেখা গিয়েছে মূলত মুসলিম ভোটারদের মধ্যেই। কখনও ভোটার স্লিপ না মেলা, কখনও বুথের নামতালিকায় নাম না থাকা কিংবা নামের বানানে ভুল, এমন নানা কারণেই তাঁদের অনেকে ভোট দিতে পারেননি চলতি নির্বাচনে। এদিকে শাহি ইদ্গা মসজিদ এলাকায় মুসলিমদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। মথুরায় গেরুয়া প্রাধান্য থাকলেও এঁদের ভোট মূলত ভাগাভাগি হয় রাষ্ট্রীয় লোক দল ও কংগ্রেসের মধ্যেই। তবে এবার ইন্ডিয়া জোটের কারণে এলাকায় প্রার্থী দেয়নি আরএলডি। ফলে কংগ্রেসের সেখানে খানিক বাড়তি সুবিধা পাওয়ারই কথা ছিল। কিন্তু সেখানে মুসলিম ভোটারদের এক বিপুল অংশের ভোট না দিতে পারার প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।