নারীদের মাথা ঢাকার নির্দেশ দিয়েছেন খোদ আল্লা। সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সঞ্চালিকাকে মনে করিয়ে দিলেন পাকিস্তানের ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, নিজেই ঢেকে দিলেন তরুণীর মাথাও। কী হল তারপর? শুনে নেওয়া যাক।
সঞ্চালিকা কী প্রশ্ন করছেন, সেদিকে মন নেই। তার আগে সঞ্চালিকার দিকেই পালটা প্রশ্ন ছুড়লেন পাকিস্তানের এক যুবক। সে প্রশ্ন অবশ্য কোনও রাজনৈতিক সামাজিক বিষয়ে নয়। বরং তাকে বলা যেতে পারে অনেকটাই ব্যক্তিগত। ইসলামিক দেশে দাঁড়িয়েও কেন মাথা ঢাকেননি ওই তরুণী, এই প্রশ্নেই তাঁর দিকে নিশানা শানিয়েছেন ওই যুবক। শুধু তাই নয়, নিজেই নিজের শাল খুলে তরুণীর মাথা ঢেকে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু কী ঘটল তারপর?
আরও শুনুন:
‘ঠিকমতো’ হিজাব না পরায় পোশাক খুলতে বাধ্য করেছিল পুলিশ, বিস্ফোরক দাবি ইরানি তরুণীর
এমনিতেই মেয়েদের পোশাক নিয়ে সামাজিক নিদানের শেষ নেই। মুসলিমদের ক্ষেত্রে সেখানে আবার জুড়ে যায় ধর্মীয় ফতোয়াও। এর আগে মেয়েদের মাথা ঢাকার ইস্যুতেই আগুন জ্বলেছিল ইরানে। ঠিকমতো মাথা ঢাকেননি, এই অভিযোগেই তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করেছিল সে দেশের নীতি পুলিশ, তারপর তাদের হেফাজতেই রহস্যমৃত্যু হয় তাঁর। সম্প্রতিই কুর্দিস্থানের নারীরা হিজাব সরিয়ে প্রতিবাদের বার্তা দিয়েছেন। তালিবানি শাসনের আফগানিস্তানেও বারে বারে মাথা ঢাকার কড়া নির্দেশের মুখে পড়েছেন মেয়েরা। সব মিলিয়ে হিজাব বা ওড়না বিষয়টিই এক রাজনৈতিক মাত্রা পেয়ে গিয়েছে। এবার সেই প্রবণতাতেই নয়া সংযোজন পাকিস্তানের এই ঘটনা।
আরও শুনুন:
হিজাব বিতর্কের ভারতবর্ষে মনে থাকুক ‘অবরোধবাসিনী’দের হয়ে বেগম রোকেয়ার লড়াই
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োতেই দেখা গিয়েছে, প্যালেস্তাইনের যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে কয়েকজনকে প্রশ্ন করছেন এক সঞ্চালিকা। কিন্তু তাঁর প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই এক যুবক বলে বসেন, “আপনি একটা ইসলামিক দেশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, কিন্তু নিজের মাথা ঢাকতে পারেননি?” এরপরেই নিজের গলার শাল খুলে কার্যত জোর করেই সঞ্চালিকার মাথা ঢেকে দেন ওই যুবক। যদিও ওই যুবককে পালটা দিয়েছেন তরুণীও। কনসেন্টের প্রসঙ্গ তুলেই তিনি মনে করিয়ে দেন, কোনও মহিলার অনুমতি ছাড়া তাঁকে স্পর্শ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আল্লার নির্দেশের দোহাই দিয়েও তা করা চলে না। শুধু তাই নয়, যুবককে শাল ফিরিয়ে দিয়ে সঞ্চালিকা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁর কাছে নিজের ওড়না রয়েছে। কিন্তু তিনি মাথা ঢেকে রাখবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত।
যদিও ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের তোয়াক্কা না করেই নিজের অবস্থানে অনড় ওই যুবক। তাঁর মতে, নারীদের এই নির্দেশ দিয়েছেন খোদ আল্লা। সুতরাং এখানে ব্যক্তিগত মতের জায়গা নেই। কিন্তু কট্টর মতামত যাই বলুক না কেন, তার জন্য ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিসরকে সংকুচিত করতে নারাজ তরুণী। বরং ইসলামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কেবল মহিলাদের মাথা ঢাকার কথাই ওঠে কেন? এই প্রশ্নেই নিজের প্রতিবাদ জারি রেখেছেন ওই সঞ্চালিকা।