সত্যি সত্যিই পথে নেমে আসতে হয়েছে বটে, তবে তা নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই এই মহিলার। বলা যায়, রামের জন্যই এই অবস্থা তাঁর। কিন্তু এর জন্য সেই রামলালাকেই ধন্যবাদ জানাচ্ছেন মহিলা। বিষয়টা ঠিক কী? শুনে নেওয়া যাক বরং।
যদি বলা হয়, আপাতত পথে বসেছেন এই মহিলা, খুব একটা ভুল বলা হবে না। সত্যি বলতে, অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনের পরই অবস্থার এহেন বদল ঘটেছে তাঁর। কিন্তু রামলালার জন্য এমনটা ঘটলেও রামলালাকে আদৌ দুষছেন না প্রৌঢ়া। উলটে অবস্থা পালটে যাওয়ার দরুন রামকেই প্রাণভরে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন তিনি।
কী ঘটেছে ঠিক? তাহলে খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন: রামায়ণ-মহাভারত না জানলে দেশ চিনবেন না মুসলিমরা, অনুবাদের উদ্যোগ ছিল খোদ আকবরের
বছর ৬৫-র মালতী দেবী অযোধ্যার বাসিন্দা। আগে গৃহসহায়িকার কাজ করেই কোনওমতে দিন চলত তাঁর। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি পালটে গিয়েছে হঠাৎ করেই। এখন আর বাড়িতে কাজ করেন না এই প্রৌঢ়া, বদলে মন্দিরে যাওয়ার পথে বসেই তাঁর দিন কাটে। আসলে এখন রামলালার ছবি আর ফোটো ফ্রেম বিক্রি করতে শুরু করেছেন মহিলা। আর এই নতুন কাজে যা আয় হচ্ছে, তা আগের তুলনায় চোখে পড়ার মতো বেশি। তাই মালতী দেবী বলছেন, এখন জীবনের নতুন মানে খুঁজে পেয়েছেন তিনি। এতদিন পরে খানিক সচ্ছলতা পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত মহিলা। আর তার জন্য রামলালাকেই সব কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: রামনামই সম্বল, কানাকড়ি ছাড়াই খাতা খোলা যায় অযোধ্যার এই ব্যাঙ্কে
সত্যি বলতে কেবল তিনি একা নন। অযোধ্যার ভক্তি পথের দুপাশে আগে যে দোকানগুলি ছিল, সেগুলির মালিকরা জানাচ্ছেন, এর আগে দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ লাভের মুখ দেখেননি তাঁরা। জিনিসপত্র খুব একটা যে বিক্রি হত এমন নয়। কিন্তু রাম মন্দির খোলার পর যেভাবে বিপুলসংখ্যক ভক্তরা এখানে আসতে শুরু করেছেন, তাতে পুরো ছবিটাই বদলে গিয়েছে। প্রত্যেকেই এখন রাম সংক্রান্ত জিনিস দোকানে রাখতে শুরু করেছেন। কারণ অন্য কিছু বিক্রি হোক বা না হোক, এইসব জিনিস উড়ে যায় মুহূর্তেই। বিশেষ করে মন্দিরে ফোন নিয়ে ঢোকা নিষেধ বলে মূর্তির ছবি তোলা যায় না, তাই এইসব দোকান থেকে ছবি কিংবা অযোধ্যার আরও স্মারক সংগ্রহ করতে মুখিয়ে থাকেন ভক্তরা। তাই ১০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন দামের ও আকারের ছবি রাখছেন এই দোকানিরা। এই মহিলাও পড়েন তাঁদের মধ্যেই। তিনি জানিয়েছেন, রোজ প্রায় শ-খানেক ছবি তিনি বিক্রি করতে পারেন। এতে পুণ্য আর আয় একইসঙ্গে হচ্ছে বলেই মনে করেন তিনি। আর সব মিলিয়ে নিজের জীবনের এই বদলের জন্য রামলালার কাছেই কৃতজ্ঞ এই মহিলা।