মুসলিমরাই তৈরি করেছেন শিব মন্দির। নিয়মিত পুজোও করেন তাঁরাই। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। এমনই এক মন্দির রয়েছে যোগীরাজ্যে। ঠিক কোথায় সেই মন্দির? আসুন শুনে নিই।
দেখতে একেবারেই সাদামাটা। আলাদা কোনও ঐতিহাসিক গুরুত্বও নেই। তবু যোগীরাজ্যের এই শিবমন্দির সংবাদ মাধ্যমের চর্চায়। কারণ এই মন্দির তৈরি করেছেন কয়েকজন মুসলিম মিলে। এমনকি শিবমন্দিরের পুজোর দায়িত্বও সামলান এক মুসলিম ব্যক্তিই।
আরও শুনুন: সাধারণতন্ত্র দিবসের উদযাপনে চটুল নাচ যোগীরাজ্যের স্কুলে, ক্ষোভ নেটদুনিয়ায়
রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আবহে নতুন করে চর্চায় ফিরেছিল বাবরি মসজিদ কাণ্ড। শীর্ষ আদালতের রায় যাবতীয় বিতর্কে দাঁড়ি টানলেও, অনেকের মনেই এখনও এই নিয়ে সংশয় কাটেনি। সেই রাম মন্দিরের রাজ্যেই রয়েছে অন্যন্য এক সম্প্রীতির নির্দশণ। এমনিতে, গোটা দেশে শিব মন্দিরের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। বিশেষ করে যোগীরাজ্যে। গোটা বারানসী জুড়ে যেমন শিব মন্দিরের ছড়াছড়ি, তেমনই যোগীরাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও মহাদেবের মন্দির চোখে পড়ে। যার মধ্যে ঐতিহাসিক গুরুত্ব সমৃদ্ধ কিছু প্রাচীন শিবমন্দিরও রয়েছে। তবে এই মন্দিরের তেমন কোনও বিশেষ ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই। স্থাপত্য হিসেবেও আলাদা কোনও ছাপ ফেলবে না এই শিব মন্দির। এমনকি মন্দিরটি তৈরি হয়েছে মাত্র বছর দশেক আগে। এর যাবতীয় গুরুত্ব সমাজকে কেন্দ্র করে। কারণ উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে, এই মন্দিরটিকে অবশ্যই সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির উদাহরণ হিসেবে ধরা যেতে পারে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এই মন্দির যোগীরাজ্যের মির্জাপুর অঞ্চলে অবস্থিত। অনেকেই দাবি করেন, সে রাজ্যে সম্পূর্ণভাবে মুসলিম পরিচালিত মন্দির এই একটিই রয়েছে। মন্দিরের পূজারি হিসেবে একজন মুসলিমকে নির্বাচন করাও বিরলতম ঘটনা বলা চলে। তবে ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে এই মন্দির তৈরি বা এখানে পুজো করা কোনও আশ্চর্য ঘটনা নয়।
আরও শুনুন: ‘জয় শ্রী রাম’ বলেই অধ্যাপকের পা ছুঁয়ে প্রণাম, ব্রিটেনে ভারতীয় পড়ুয়ার কাণ্ডে শোরগোল
গ্রামের প্রধান সালা পারভিন-এর স্বামী বাবু খান এলাকার অন্যতম পরিচিত মুখ। তিনিই মন্দিরে ঘন্টার পর ঘণ্টা সময় কাটান বলে দাবি স্থানীয়দের। মন্দির পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজও তিনি সামলান। এক কথায় বলতে গেলে, মন্দির পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্ব তিনি সামলান। সেই বাবু খান-এর কথায়, এই মন্দির তৈরি হয়েছে সম্প্রীতির নিদর্শন হিসেবে। তাঁর দাবি, ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে, ধর্ম নিয়ে ভেদাভেদ নেই। তাই এলাকার হিন্দুদের জন্য তৈরি মন্দির নিয়মিত পুজো দিতে আসেন মুসলিমরাও। মন্দিরেই কাছেই রয়েছে থানা। কাজেই প্রশাসনের তরফেও সবরকম সহযোগিতা পাওয়া যায় বলেই দাবি স্থানীয়দের। ধর্ম নিয়ে যখন দেশের অন্যান্য প্রান্তে হিংসার খবর সামনে আসে, তখন যোগীরাজ্যের এই মন্দিরই যেন ভারতবর্ষের পরিচয় বয়ে নিয়ে যাওয়ার সাহস যোগায়।